কবিতার সবচেয়ে বড় কথা এই যে-- তার শেষ কথা বলে কিছু নেই । সুতরাং কবিতার সংজ্ঞা নিরূপন করা এ-এক কঠিন কাজ। উপলব্ধি জ্ঞানের বিভিন্নতার কারণে এর সংজ্ঞা ও বিভিন্ন হতে পারে। কেউ একে কালো কাকের মতো দেখলেও যেমন কিছু বলার থাকে না,তেমনি ধবল বকের মতো দেখলেও। কারও কাছে কবিতা কুশ্রী কালো রমনীর মতো মনে হলেও যেমন কবিতা তার স্বকীয়তা হারায় না ,ঠিক তেমনি তাকে রূপসী রমনী মনে হলেও। তবে,কবিতাকে সত্যিকার অর্থে কবিতা হতে হবে। তাই,সংজ্ঞার পথে যাওয়াটা কিছুটা অপরিহার্য ও বটে। তবে সংজ্ঞা নিরূপনে দ্বন্ধ আছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে সে-দ্বন্ধে না যাওয়াটা শ্রেয় মনে করি। কিন্তু একটা কথা সত্য যে--কবির সংজ্ঞা না-দিয়ে কবিতার সংজ্ঞা দেওয়া সত্যিই এক কঠিন কাজ। কবিতার সংজ্ঞা দিতে গেলে কবির কথা আসবে আগে। বিষয়টা আর ও সহজ হত যদি না কবির সংজ্ঞা ও সহজে দেওয়া যেত। তাও যে এক কঠিন কাজ তা পাঠক মাত্রই ভালো করে জানেন। কবিকে কী শুধু পাগল-বাউল বলে একরত্তি গালি দিয়ে ছেড়ে দিব। না-কি তাদের সংজ্ঞাতেও আর ও কিছু বলার আছে। প্রথমত--কবিকে আমি শিল্পী (artist) বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। সে হিসেবে কবিতা শিল্প ( art )। শুধু শিল্প না-বলে একটু বাড়িয়ে বলতে পারি পরম-শিল্প (absolute art)। পরম মানে চিহ্নবিহীন। বিষয়টি ঠিক এ-রকম --অনেক কথা যাও যে বলি ,কোন কথা না-বলি । এটাকে কী কবিতার দোষ বলব না গুন বলব?--দু'টিই বলা যায়। কেননা সে একটি মাত্র কারণে কবিতা সাধারণের (common) বলয় ভেঙে নির্দিষ্ট (specific) হয়েছে। তাই কবিতার পাঠক ও নির্দিষ্ট। সকলেই কবিতা পড়ে না কিংবা বুঝে না। এটি কবিতার এক ধরণের ত্রুটি নয় কী?--পাঠকই তা ভালো জানেন। দ্বিতীয়ত-- সাহিত্যের আদি শাখা কবিতা তার স্বকীয়তা বজায় রেখেছে, তাও সে-একই কারণে।
(চলবে ...)
রচনাকাল : 13-04-2007
জিল্লুর রহমান।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুন, ২০০৭ দুপুর ১২:৪৩