somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি যায়যায়দিনের কথা বলছি...

১৩ ই জুন, ২০০৭ সন্ধ্যা ৬:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেকের কাছে মঙ্গলবার সপ্তাহের আর ছয়টি দিন থেকে ভিন্ন আমেজের। কারণ এটি একটি সাপ্তাহিক পাওয়া এবং পড়ার দিন। আবার ০৬-০৬-০৬ তারিখটা সবার কাছেই আশ্চর্য সুন্দর। কারণ ট্রিপল সিক্স তারিখটি শতাব্দীতে একবারই আসে।

এমনই দিনে ভিন্ন সুন্দর নিয়ে পত্রিকাটি এসেছিল সাপ্তাহিক থেকে দৈনিক রূপে। ৬ জুন ২০০৭ পালিত হলো দৈনিকটির প্রথম বর্ষপূর্তি। শুভ জন্মদিন - দৈনিক যায়যায়দিন!

২. একটি নতুন দৈনিকের আবির্ভাব বাংলাদেশে খুব একটা বিশেষ ঘটনা নয়। কারণ ফি বছর দু-চারটা নতুন দৈনিক এদেশে হামেশা বের হয়। কিন্তু সেসবের অনেকগুলোই প্রথম বছরের চৌকাঠ পেরুতে পারে না। তাই একটি দৈনিকের প্রথম বর্ষপূর্তি কিছুটা গুরুত্ববহ বৈকি!

তথাপি যায়যায়দিনের কথা সম্পূর্ণই আলাদা। দৈনিক যায়যায়দিনের জন্মদিন আর যায়যায়দিনের আত্মপ্রকাশ এক নয়। যায়যায়দিনের আত্মপ্রকাশ ১৯৮৪ সালের ৮ অক্টোবর সাপ্তাহিক রূপে হয়েছিল। নতুন চিন্তাধারা ও ভিন্ন স্বাদ এবং গণতন্ত্রের সপক্ষে ক্যামপেইনের প্রয়োজনে যায়যায়দিনের জন্ম। আবার পাঠকের আন্তরিক দাবির মুখে, সুশিক্ষিত - সচেতন পাঠকগোষ্ঠী তৈরি, পাঠকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন, শুদ্ধ ইংরেজির ব্যাপক বিস্তার, নারী ও শিশুর উন্নয়ন, তারুণ্যের আধুনিকতা, নতুন লেখক সৃষ্টি, চাকরি প্রার্থীদের সহযোগিতা, বিশ্বকে গভীরভাবে জানা, পাঠকের জীবনকে মিনিংফুল করার এবং অবশ্যই পজিটিভ বাংলাদেশ দেখার লক্ষ্যে দৈনিক যায়যায়দিনের আবির্ভাব।

আর এখানেই যায়যায়দিনের স্বকীয়তা। আর সবকয়টি দৈনিক সৃষ্টির লক্ষ্যের সঙ্গে যায়যায়দিনের তফাৎ। কেননা বাকি দৈনিকগুলোর কোনোটি রাজনৈতিক কিংবা ব্যবসায়িক স্বার্থে, কোনোটি অন্য পত্রিকার অভ্যন্তরীণ ভাঙন বা বিরোধের ফলে, আবার কোনোটিবা বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত।

৩. আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় দেখেছি কোনো একটি ভালো কাজ করতে গেলেই নানারকম আপদ এসে হাজির হয়। অথচ নির্বিঘেœ কতো নাহক কাজই না করেছি। দৈনিক যায়যায়দিন কিছু ভালো কাজ করতে যাচ্ছে কিন্তু কোনো বাধা আসবে না তা কি হয়? এলোও বটে! তবে যাযাদির জন্য এটি কোনো নতুন অভিজ্ঞতা নয়। সাপ্তাহিক আমলে যাযাদি এর চেয়েও কঠিন বিপত্তিতে পড়েছিল। সেটি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সময়কার কথা। ক্ষমতার আসন শক্তিশালী করতে এরশাদ দেশের অধিকাংশ মিডিয়া তথা স্বনামধন্য সম্পাদকÑ বুদ্ধিজীবীদের তার অনুগত বানাতে সক্ষম হলেও লোভ দেখিয়ে কিংবা বল প্রয়োগে যাযাদিকে বশ করা সম্ভব হয়নি। অবশ্য এর জন্য যাযাদিকে চরম মূল্যও দিতে হয়েছিল। ১৯৮৫ এবং ৮৬ সালে যাযাদি দুইবার নিষিদ্ধ হয়। সম্পাদককে চারবার আটক করা হয়। লন্ডনে নির্বাসনে রাখা হয় ছয় বছর। যার দরুন সম্পাদক তার মায়ের মৃত্যুশয্যায় উপস্থিত থাকতে পারেননি।

এই ছোট্ট ইতিহাসটুকু হয়তো ভুলে গিয়েছিলেন দৈনিক যায়যায়দিনের জনৈক পৃষ্ঠপোষক। তাই তো তিনি একটি অনৈতিক দাবি আদায় করতে চেয়েছিলেন যাযাদি থেকে। কিন্তু যাযাদি অন্য পত্রিকার মতো সুবিধা লাভের বিপরীতে নীতিবিসর্জন দিতে রাজি হয়নি। এবারো চড়া দাম গুনতে হলো যাযাদিকে। বন্ধ হয়ে গেল পত্রিকার ফান্ড, বন্ধ হয়ে গেল কাগজ। এ অবস্থায় পত্রিকা চালু রাখা তেলÑ চাকাহীন গাড়ি চালানোর মতো। তাই বিভিন্ন বিকল্প পন্থা গ্রহণ আবশ্যক হয়ে পড়লো। পত্রিকার খরচ কমাতে কিছু উদ্যোগ নেয়া হলো। এর পরের কিছু বিব্রতকর ঘটনার কথা সবার জানা। সত্য-মিথ্যার বিভেদ না করেই এতোদিন তক্কে তক্কে থাকা মিডিয়া উগ্র অপপ্রচারের তূর্য বাজিয়ে দিল। আরো একবার উত্তম সাংবাদিকতার নিদর্শন দেখালো দেশীয় মিডিয়া।

কেন যায়যায়দিনের সঙ্গে রেস্ট অফ মিডিয়ার বৈরী আচরণ? কেন যাযাদির পজিটিভ নিউজে তারা চরম অনাগ্রহী? এর প্রধান কারণ হতে পারে যাযাদি এবং অন্য পত্রিকাগুলোর জন্ম লক্ষ্যের ভিন্নতা। দ্বিতীয়ত, যাযাদি তার কাজের মধ্য দিয়ে বাকিদের মুখোশ উন্মোচন করে দিচ্ছিল। তৃতীয়ত, পত্রিকাটির মৌলিক নতুনত্ব ও আধুনিক উৎকর্ষ অন্যদের ঈর্ষার বিষয়বস্তু হয়েছিল।

কিন্তু মিডিয়ার সব আয়োজন বৃথা যায়। কেননা তারা জানতো না সম্ভবত যায়যায়দিন নিজেও জানতো নাÑ যায়যায়দিন কতোটা শক্তিশালী। পেশি নয়, অর্থ নয়, কূটনীতির নয়Ñ পাঠকের উন্মত্ত ভালোবাসাই যায়যায়দিনের শক্তি।

৪. পাঠক যায়যায়দিনকে ভালোবাসেÑ কারণ যাযাদি টিকে আছে পাঠকদের জন্য। পাঠক যায়যায়দিনে আস্থা রাখেÑ কারণ যাযাদি নিজের বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ। পাঠক যায়যায়দিন পড়েনÑ কারণ যাযাদি ভালোর প্রশংসা এবং মন্দের সমালোচনা করে। পাঠক যায়যায়দিনের পাশে আছেনÑ কারণ যাযাদি নিজস্ব মতামত স্পষ্ট করে। মিডিয়ার ভ্রান্ত স্রোতের বিরুদ্ধে যায়যায়দিন লড়তে জানে।

যায়যায়দিন পাঠকের ভিন্নমত প্রকাশ করেÑ কারণ যাযাদি পাঠককে শ্রদ্ধা করে। সর্বোপরি যায়যায়দিন পাঠকের পত্রিকাÑ কারণ পাঠক নিজেকে যায়যায়দিনের অংশ মনে করে।

গর্বের ব্যাপার এতো ক্রেডিটের কোনোটিকে যায়যায়দিন কখনো প্রশ্রয় হিসেবে নেয়নি। অন্যায় কোনো সুযোগ গ্রহণ করেনি। কেননা যায়যায়দিন জানে রেস্ট অফ মিডিয়ার আদর্শ গ্রহণ তার পক্ষে সম্ভব নয়।

তাই আজকের দিনে দৃপ্ত কণ্ঠে বলা যায় সোনালি সুদূর ফেলে যায়যায়দিন এগিয়ে যাবে দূর... বহুদূর।

ধন্যবাদ শফিক রেহমানÑবাঙালি পাঠকদের কি সুন্দর এক উপহার দিয়েছেন!
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই অক্টোবর, ২০০৭ বিকাল ৩:২১
১০টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×