somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড ! যা এখন শুধুই বাণিজ্য

০৬ ই জুন, ২০০৭ বিকাল ৫:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। শিক্ষা ছাড়া কোন জাতি উন্নতি করতে পারে না। তাই জাতিকে সু-শিক্ষিত করতে হলে প্রয়োজন ভালো শিক্ষকের। একজন সৎ ও কর্তব্যপরায়ণ শিক্ষককই পারেন তার ছাত্রকে সু-শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে। কিন্তু আমাদের অবস্থা হয়েছে গোড়াতেই গলদ। আগামী দিনের ভবিষ্যৎ আজ যে শিশুটি শিক্ষা গ্রহণের জন্য ভর্তি হচ্ছে প্রাইমারী স্কুলে, সে কি শিখছে? তার শিক্ষকই বা কতটুকু সৎ ও কর্তব্যপরায়ণ? আমাদেরকে অবাক করেছে এর উত্তরগুলি। গত ২০ মে ২০০৭ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টি·আই·বি) এর সহযোগীতায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) শ্রীমঙ্গল উপজেলায় পরিচালিত রিপোর্ট কার্ড জরিপে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির উৎঘাটিত চিত্র প্রকাশিত হয়েছে। তাদের রিপোর্টে ভেসে উঠেছে সরকারি প্রাইমারি ও বেসরকারি রেজিষ্টার্ড প্রাইমারি বিদ্যালয়ে অবৈধ ভাবে নানারকম ফি নেওয়া, শিক্ষকদের নিয়মিত ক্লাস না নেওয়া, প্রায় নিষ্কৃয় এস এম সি সহ নানা প্রকার অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র। যা পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকেই দুর্বল করে ফেলেছে। রিপোর্ট কার্ড জরিপে দেখা যায় ২০০৫ সনে গবেষণা এলাকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বেসরকারি রেজিষ্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে বিধি বহির্ভূতভাবে বিভিন্ন ফি হিসেবে ৫ ল ৫৪ হাজার ৬৬৭ টাকা আদায় করা হয়েছে। অন্যদিকে ২৯ ভাগ খানার ছাত্র-ছাত্রীরা যারা প্রাথমিক উপবৃত্তি প্রকল্পের অধীনে উপবৃত্তি পাচ্ছে তাদের মধ্যে শতকরা ৬৮ভাগই সরকার নির্ধারিত টাকা থেকে গড়ে ৫৪৬টাকা কম পেয়েছে। গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে শর্তাবলীর কঠোরতার কারণে ২০০৫সালে শ্রীমঙ্গলে উপবৃত্তির মোট ২৯ ল ৬০হাজার ৫৮৭ টাকা বিতরণ করা হয়নি। দেশের মাত্র একটি উপজেলার ৯টি ওয়ার্ডের ২০ টি মহল্লায় ১১৮টি খানা এবং ৯টি ইউনিয়নের ৩০টি গ্রামের ২৪৭টি খানার এই তথ্য চিত্রের দিকে তাকিয়ে আমরা যদি বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার কথা চিন্তা করি তাহলে যে কোন সুস্থ মানুষকেই ভাবিয়ে তুলবে। বিদ্যালয়ে পাঠদানরত শিক্ষকরাই যদি সম্পৃক্ত থাকেন দুর্নীতির সঙ্গে তাহলে শিশুরা তাদের নিকট থেকে কি শিখবে। টি·আই·বির এ জরিপ কার্ডে আরোও দেখা যায় প্রাথমিক শিক্ষা সম্পূর্ণ ভাবে অবৈতনিক হলেও গবেষণা এলাকার সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে ১০টি খাতে বিধি বহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত ফি আদায় করা হচ্ছে। আমরা আরোও হতবাক হই যখন দেখতে পাই প্রতি শ্রেণীতেই প্রায় ৯৯% ক্ষেত্রেই ১ম সাময়িকি পরীক্ষা, ২য় সাময়িকি পরীক্ষা ও বার্ষিক পরীক্ষার ফি হিসেবে সরকার নির্ধারিত ফি অপো অতিরিক্ত ফি গ্রহণ করা হচ্ছে। ধর্মীয় অনুষ্ঠান, বিনামূল্য বই প্রাপ্তি ও বার্ষিক খেলাধুলার ফি হিসেবেও বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে টাকা আদায় করা হয়েছে। রিপোর্ট কার্ড জরিপে দেখা যায়, শতকরা ৯৯% উত্তরদাতা জানিয়েছেন তারা প্রদত্ত চাঁদার বিপরীতে কখনই রশিদ পাননি। টি·আই·বির এই রিপোর্ট পড়ে মনে হচ্ছে বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার মতা গ্রহণের পর ঢাকডোল পিঠিয়ে বাংলাদেশে দুর্নীতি বিরোধী যে অভিযান শুরু করেছেন তার কোন প্রভাবই পড়ছেনা প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার উপর। তাই দেশকে দুর্নীতির কালিমা থেকে মুক্ত করতে হলে শুধু বড়বড় রাজনীতিবিধ, ব্যবসায়ী ও আমলাদের ধরে দুর্নীতির বিচার করলেই হবেনা, অঙ্কুরিত বীজ সঠিক পরিচর্চা করলেই সেই গাছ থেকে ভালো ফসল পাওয়া যায়। একজন আদর্শ মা’ই পারেন জাতিকে আদর্শ সন্তান উপহার দিতে। তেমনি একজন ভালো সৎ কর্তব্যপরায়ণ শিক্ষকই পারেন আগামী দিনের ভবিষ্যৎ, আজকের বেড়ে ওঠা শিশুকে সু-শিক্ষায় শিক্ষিত করতে। তাই শুধু রিপোর্ট পেশ করেই দায়িত্ব শেষ করলে হবে না। অভিভাবক মহলও সুশীল সমাজকে উদ্দ্যোগী হয়ে বন্ধ করতে হবে শিক্ষকদের শিক্ষা বাণিজ্য। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে তদন্ত করে নিশ্চিত করতে হবে শিশুদের সু-শিক্ষার পরিবেশ। তবেই গড়ে উঠবে আগামী দিনের দুর্নীতি মুক্ত সমাজ।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×