somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যেদিন ভাত খাওয়ার পয়সা থাকতো না...

৩০ শে মে, ২০০৭ রাত ১০:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(এই লেখাটি লিখেছেন সোহেইল জাফর)
ঢাকায় বাসা হলেও য়্যুনিভার্সিটিতে পড়ার সময় সারা বছর আমি হলেই থাকতাম। মাসখরচা হিসেবে বাড়ি থেকে আনতাম দু'হাজার টাকা। কোনো কোনো মাসে অবশ্য বাবা বোনাস দিতেন। যে মাসে জাহাঙ্গীরনগরের ছাত্রছাত্রীরা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ধর্ষকদের ক্যাম্পাসছাড়া করলো, তার পরের মাসে বাসায় গেলে বাবা জিজ্ঞেস করলেন, "এই যে আন্দোলন হইলো, এর সাথে ছিলি?" আমি বললাম "হ্যা"। বাবা বললেন, "এই যে মেয়েরা হল থেকে র‌্যাপিস্টদের বের করে দিলো, এই মেয়েদের সাথে ছিলি?" আমি বললাম "ছিলাম"। বাবা আমাকে দর্জির দোকানে ধরে নিয়ে গেলেন এবং দুটি নতুন শার্ট বানিয়ে দিলেন। ওই মাসে মাসোহারা রূপে দুই হাজারের বদলে বোনাস পাঁচশো সহ মোট আড়াই হাজার পেলাম।

কিন্তু সচরাচর দুই হাজারই পেতাম। মাহবুব-ও পেতো প্রায় একই পরিমাণ টাকা। টাকাটা খুব কম না হলেও, প্রতিমাসশেষেই আমাদের টানাটানি পড়ে যেতো। বটতলায় তাজুর দোকানে আমাদের একটা যৌথ বাকির একাউন্ট ছিল, কিন্তু নানা অজুহাতে তাজুর দোকান প্রায়ই বন্ধ থাকতো এবং মাসের শেষের দিকে আমাদেরকে অকুল পাথারে ভাসিয়ে তাজু বাড়ি চলে যেতো। সেই সময়ে আমরা খেতাম কাঠালতলায় খালার দোকানে। কিন্তু মাসখরচের টাকাটা তো আমাদের আগেই ফুরিয়ে যেতো, সুতরাং আমাদেরকে তখন দুপুরের খাবার জোগাড়ের উদ্দেশ্যে সকাল থেকেই অভিযানে বের হতে হতো।

কী সেই অভিযান? একটা এপিঠ-ওপিঠ কাগজ আমরা ফটোকপি করতাম বাকিতে ১৫-২০ কপি। খরচ পড়তো ১৫ টাকার মতো। ওটাকে আমরা বিক্রি করতাম ২ টাকা করে, মণিশঙ্কর দাশগুপ্তের মতো কেউ কেউ খুশি হয়ে ৫ টাকা পর্যন্ত দিতো। খরচা মিটিয়ে প্রায় ৩০ টাকার মতো লাভ থাকলেই খালার দোকানে ২ জনের খাওয়ার পয়সা উঠে যেতো, এমনকি কোনো কোনোদিন বেশি লাভ হলে আমরা কোমল পানীয় পর্যন্ত কিনে খেতাম।

কী থাকতো ওই কাগজে? আমাদের একটা যৌথ লেখা। পদার্থবিজ্ঞানী শিমুলের (বর্তমানে সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে কর্মরত) বদৌলতে আমরা লেখাটার একটা কম্পোজড কপি পেতাম। ওটাকেই বিপদের দিনে ফটোকপি করে বিক্রি করতাম।

কী ছিলো ওই লেখাগুলোর বিষয়? হাবিজাবি নানা বিষয়। গুরুত্বপূর্ণ যেসব বিষয়ে সাধারণ ভাষায় লেখাপত্র নেই, সেইসব বিষয়ে রীতিমতো "গবেষণা" করে আমরা লেখা তৈরি করতাম যৌথভাবে। যেমন- আমেরিকার আদি মানুষ, গুহাশিল্পকলা, বাঙালির নৃতাত্ত্বিক পরিচয় ইত্যাদি।

ওই লেখাগুলো এবং কিছু নতুন লেখা দিয়ে এই ব্লগটিকে সাজানো হচ্ছে। জানাবেন আপনাদের কথা। সনির্বন্ধ অনুরোধ রইলো।
২০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফিলিস্তিনে কী শান্তি সম্ভব!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৭ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:২১

এক.
প্রতিদিন ঘুমানোর আগে আলজাজিরা দেখি৷ গাজার যুদ্ধ দেখি৷ রক্ত দেখি৷ লাল লাল৷ ছোপ ছোপ৷ সদ্য জন্মানো শিশুর৷ নারীর৷ কিশোর কিশোরীর৷ বৃদ্ধের৷ সারি সারি লাশ৷ সাদা কাফনে মোড়ানো৷ ভবনে চাপা পড়া৷... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রাকৃতিক দূর্যোগে আপনার অভিজ্ঞতা কেমন?

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫

আমার জীবনে আমি সরাসরি প্রাকৃতিক দূর্যোগের ভেতরে পড়েছি বলে আমার মনে পড়ে না । ২০১৯ সালের ঘটনা। ঘূর্ণিঝড়ের নাম সেবার ছিল সম্ভবত বুলবুল ! সেটা যখন আসছিল তখন আমি ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্কাই ডাইভিংয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়ার প্রচেষ্টায় সফল বাংলাদেশের আশিক চৌধুরী

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ২৭ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:০৬




দেশে এখন চলছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর তান্ডব। তার মধ্যেই সুখবর এলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে-

বিশ্ব রেকর্ড গড়তে ৪১ হাজার ফুট উঁচুতে উড়ে যাওয়া বিমান থেকে শূন্যে লাফ দিলেন বাংলাদেশের আশিক চৌধুরী।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা: অশ্লীলতা কি পোশাক দিয়ে নির্ধারণ করা উচিৎ নাকি মানসিকতা ও চরিত্র দিয়ে?

লিখেছেন লেখার খাতা, ২৭ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫২


ছবিটি -ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।

কহিনুরের, ফ্লোরা ওরিয়েন্টাল বিউটি সোপ।১৯৭৮ সালের বিজ্ঞাপন। ছবিটি ফেসবুকে পেয়েছি। ব্লগার সোনাগাজী, ব্লগার কামাল ১৮ সহ যারা মুরুব্বি ব্লগার রয়েছেন তারা হয়তো এই বিজ্ঞাপনটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন বেনজীর আহমেদ ও আমাদের পুলিশ প্রশাসন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৭ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৪২



বৃষ্টিস্নাত এই সন্ধ্যায় ব্লগে যদি একবার লগইন না করি তাহলে তা যেন এক অপরাধের পর্যায়েই পরবে, যেহেতু দীর্ঘদিন পর এই স্বস্তির বৃষ্টির কারণে আমার আজ সারাদিন মাটি হয়েছে তাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×