somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোহাম্মদ আলী আকন্দ
আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ (পর্ব-৫)

৩০ শে মে, ২০০৭ রাত ৮:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


[লেখক-শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান]
বহু বছরের ঔপনিবেশিক শোষণের ফলে আমাদের অর্থনীতি হয়েছে সম্পূর্ণ পর্যুদস্ত, জাতীয় সম্পদ হয়েছে লুণ্ঠিত এবং মানব সম্পদ নিপীড়িত। সেজন্যে আজ আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশের বিপুল জনসংখ্যা এবং স্বল্প আয়তনের প্রেক্ষিতে আমাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ভিত্তি হবে শান্তিপূর্ণ বিপ্লবের গতিশীল প্রেরণা। যে চেতনায় নারী-পুরুষ নির্বিশেষে দেশের প্রতিটি মানুষ জাতীয় পুনর্গঠন ও উন্নয়নে শরীক হবে। আমাদের মনে ধর্মের বিশেষ স্থান রয়েছে। আল্লাহ্ তা’আলা এক, অদ্বিতীয় এবং সর্বশক্তিমান; আল্লাহ্ তা’আলার প্রতি আমাদের পরিপূর্ণ ও অবিচল বিশ্বাস ও আস্থা রয়েছে। সেজন্যে প্রতিটি মানুষের তার নিজের ধর্ম পালনের পরিপূর্ণ অধিকার আমাদের কাছে স্বীকৃত সত্য।

সর্বোপরি আমাদের ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রাম। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে একমাত্র আমরাই সর্বাধিক নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হয়েছিলাম এবং এই অঞ্চলের অন্য দেশকে তার স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করতে হয়নি। স্বাধীনতা যুদ্ধ আমাদের মধ্যে ত্যাগের, সার্বভৌমত্বের যে মহান প্রেরণায় আমাদের উদ্বুদ্ধ করেছে সে মহান চেতনা ও প্রেরণার ব্যাপারে কোন আপোষ নেই। যারা আমাদের দেশ ও জাতির অস্তিত্বে বিশ্বাস করে না এবং তাদের বিদেশী প্রভুদের ইঙ্গিতে পবিত্র ধর্মের নামে মিথ্যা প্রচারণা ও চক্রান্তের জাল বুনে বিদেশী প্রভুদের আদেশ মেনে কাজ করে তারা আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশ ও তার জনগণের পরম শত্র“ । এমনভাবে তাদের মোকাবিলা করতে হবে যাতে তারা আর কোনদিন মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে। এর ফলে জাতি নিরূপদ্রব জাতীয় লক্ষ্য অর্জনের প্রচেষ্টা এবংরাজনৈতিক , সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রচেষ্টা চালিয়ে দেশের জনগণের জন্য নিজেদের ত্যাগ ও পরিশ্রমে বাস্তবায়নাধীন শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার কাজে এগিয়ে যেতে পারবে। কাজেই একথা বুঝতে হবে যে, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ শুধুমাত্র ভাষাভিত্তিক বা ধর্মভিত্তিক কোন দর্শন নয়। বস্তুত বিভিন্ন উপাদান এই দর্শনের ভিত্তি এবং সে জন্য তা পূর্ণাঙ্গ ও সবার কাছে সমাদৃত। এর কোন একটি মৌলিক উপাদান দুর্বল হলেও অন্য সব উপাদানের সম্মিলিত শক্তি ও কর্মোদ্যোগের মাধ্যমে এই দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। এখন আমরা শোষণমুক্ত সমাজ তথা এর বিস্তারিত ব্যাখ্যা এবং পরিপূরক বিষয় প্রসঙ্গে ফিরে আসছি। একথা আজ আর বলার অপেক্ষা রাখে না যে, সমাজে সম্পদ ও সার্ভিসের ন্যায়সঙ্গত বন্টন হওয়া উচিত। অবশ্য এই কাজ সহজ নয়। যারা সমাজের সম্পদ ও সার্ভিস একচেটিয়াভাবে কুগিত করে রেখেছে এই কাজে তাদের কাছ থেকে প্রবল বাধা আসবে। কিন্তু গণ-সংগঠন এবং পরিকল্পিত ও সুসংহত প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে আমরা এই সামাজিক অন্যায় ও বিরোধিতার যথাযথ মোকাবিলা করতে পারব। এসব মুনাফাখোরী স্বার্থবাদী মহলের বিরোধিতার সম্মুখীন হলে আমরা নিশ্চিতভাবে বুঝতে পারব যে, আমাদের পথ সঠিক হওয়ায় তাদের এই বিরোধিতা এবং সেজন্যে এ বিরোধিতার মোকাবিলা ও তাকে পরোপুরি নিশ্চিহ্ন ও নির্মূল করার জন্য আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে। এছাড়া অব্যাহতভাবে জনগণের শক্তিকে সুদৃঢ় ও সুসংহত করতে হবে এবং তাদের বর্তমান দুঃখজনক অবস্থার কারণগুলো তাদের সুস্পষ্টভাবে জানাতে হবে। শহরে ও পল্লী এলাকায় তাদের সুসংগঠিত করতে হবে এবং সেই কাজ করতে হবে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে--যাতে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের স্বপ্ন, শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন কর্মসূচী বাস্তবায়নের অন্তরায় হিসেবে বিভিন্ন ধরনের বিদেশী হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা না দেখা দেয়। আমাদের দর্শনের জন্য আমাদের জনগণের সর্বাত্মক স্বাধীনতার নিশ্চয়তার বিধান করতে হবে--যার মাধ্যমে বহুশতক ধরে অগণিত জনগণের সুপ্ত সুবিশাল অন্তর্নিহিত শক্তি বন্ধনমুক্তি পেয়ে জাতীয় কাঠামোর প্রেক্ষাপটি জাতীয় উন্নয়ন সাধন ও সুদৃঢ় করতে কার্যকরী হতে পারে। জনগণের সর্বাত্মক স্বাধীনতার অর্থ রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয় ও সংস্কৃতির স্বাধীনতা।
আগের পর্বগুলি পড়ুন:
বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ
বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ (পর্ব-২)
বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ (পর্ব-৩)
বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ (পর্ব-৪)
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম নেতৃত্বের ক্ষেত্রে আব্বাসীয় কুরাইশ বেশি যোগ্য

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৫




সূরাঃ ২ বাকারা, ১২৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২৪। আর যখন তোমার প্রতিপালক ইব্রাহীমকে কয়েকটি বাক্য (কালিমাত) দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন, পরে সে তা পূর্ণ করেছিল; তিনি বললেন নিশ্চয়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলমানদের বিভিন্ন রকম ফতোয়া দিতেছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩


আপন খালাতো, মামাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোনের বা ছেলের, মেয়েকে বিবাহ করা যায়, এ সম্পর্কে আমি জানতে ইউটিউবে সার্চ দিলাম, দেখলাম শায়খ আব্দুল্লাহ, তারপর এই মামুনুল হক ( জেল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জুমার নামাজে এক অভূতপূর্ব ঘটনা

লিখেছেন সাব্বির আহমেদ সাকিল, ১০ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০



মসজিদের ভেতর জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বাহিরে বিছিয়ে দেয়া চটে বসে আছি । রোদের প্রখরতা বেশ কড়া । গা ঘেমে ভিজে ওঠার অবস্থা । মুয়াজ্জিন ইকামাত দিলেন, নামাজ শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। হরিন কিনবেন ??

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৯



শখ করে বন্য প্রাণী পুষতে পছন্দ করেন অনেকেই। সেসকল পশু-পাখি প্রেমী সৌখিন মানুষদের শখ পূরণে বিশেষ আরো এক নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এবার মাত্র ৫০ হাজার টাকাতেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধখানা ভ্রমন গল্প!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৩৯


২০০২ সাল বান্দারবানের রিগ্রিখ্যাং-এর এই রিসোর্ট আজ সকালেই আমরা আবিস্কার করলাম! পাহাড়ের এত উপরে এই মোড়টাতে একেবারে প্রকৃতির মাঝে এমন একটা রিসোর্ট থাকতে পারে তা আমরা সপ্নেও কল্পনা করিনি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×