কৌশিকদা তাঁর এই পোস্টে কি বলতে গিয়ে কি বললেন সেটা আমার মোটা মাথার ব্রেইনে বোধগম্য হলো না।
"মাসকাওয়াথ নিজেই স্ট্রাগলিং রাইটার - শিমুলের মাঝে মাসকাওয়াথের প্রভাব মানে এটা মাসকাওয়াথের বিজ্ঞাপন -"
কে কার বিজ্ঞাপন দিবে সেটা কৌশিক আহমেদ কিংবা আমি ধুসর গোধূলি ঠিক করার কে?
আর ঠিক এখানে 'স্ট্রাগলিং রাইটার' বলতে তিনি কি বুঝাতে চাইলেন 'অখ্যাত লেখক'!
নাকি এমন একজন লেখক যিনি সর্বদা 'স্ট্রাগল' করছেন একটি প্রচলিত ট্রেণ্ডের বিরুদ্ধে, স্ট্রাগল করছেন নিজের লেখক সত্ত্বার সাথে যাতে করে নিজের লেখা টেলিফিল্মওয়ালাদের কাছে ফেরী করে 'ফ্ল্যাট কেনার টাকা' যোগাতে নাহয়, স্ট্রাগল করছেন অবিরত যাতে 'বেস্ট সেলার বুক' এর আইডেন্টিটি না নিয়ে অন্তত একটা সচেতন পাঠকচক্র তৈরী করতে, স্ট্রাগল করছেন ফোর্টনাইটলী একটা করে বই না লিখে বছরে একটা করে লিখতে যে বইটা পড়ার পরে অন্তত মনে হবে না সময়টা অপচয় হয়েছে।
এই যদি হয় স্ট্রাগলিং রাইটার এর সংজ্ঞা তাহলে আনোয়ার সাদাত শিমুল ভয়াবহ অন্যায় করে ফেলেছেন মাসকাওয়াথ আহসানকে তাঁর লেখালেখি- ভাবনায় মাসকাওয়াথ আহসানের দ্বারা প্রভাবাণ্বিত হয়ে। তাঁর আসলে প্রভাবাণ্বিত হওয়া উচিত ছিলো "হিমুর বিয়ে" টাইপের বই দ্বারা কিংবা "ভালোবাসা প্রেম নয়" দ্বারা! অন্তত কৌশিকদা নিশ্চই তাই বলতে চেয়েছেন!
"উদাহারণে কাউকে আনলে আরো অনেক সিঁড়ি উচুর কাউকে আনাই কি যুক্তসংগত হতো না, নিদেনপক্ষে পাঠক নামটা পড়ে চিন্তায় পড়ে যেত না এই ভেবে, কে মাসকাওয়াথ?"
- গুড, এপর্যায়ে এসে কৌশিকদার ক্ষেদের কারণটা খানিকটা বোধগম্য হয়। "কে এই মাসকাওয়াথ"!?
বীক্ষণ কতোজন পড়েন পুংখানুপুংখরূপে আমার সেটা জানার কথা না। বীক্ষণের সম্পাদকেরা এমন কোন প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছেন কিনা সেটাও বলতে পারছি না, কিন্তু যেটা বলতে পারছি সেটা হলো- "মাসকাওয়াথ আহসানের লেখা পড়ার সৌভাগ্য হয়েছে" -এমন কথা লেখার পরেও কৌশিকদা নিজেই প্রশ্ন তুলেছেন কে এই মাসকাওয়াথ!!
অন্য কারো কথা বাদ দিন কৌশিকদা, 'মাসকাওয়াথ' নামটা কি আপনার কাছে এতোটাই অর্বাচীন মনে হলো?
মাসকাওয়াথ আহসান যদি অখ্যাত-ই হয় তাহলে আপনি তাকে চেনেন কী করে?
কৌশিকদা, একটু দেখুন ভালো করে, কোন ক্রাইসিসে ভুগছেন নাতো আবার!
উদাহরণ হিসেবে টানার জন্য সিঁড়ির উঁচুতে কে আছে বলেনতো কৌশিকদা! হুমায়ুন আহমেদ (যার ফ্যামিলী নেইমের সাথে আপনার ফ্যামিলী নেইম ও মিলে যায়), মিলন, আনিসুল হক নাকি প্রণব ভট্ট! যদি তাই হয় আপনার সংজ্ঞা মতে তাহলে কিছু বলার নেই। শুধু অনুজ হিসেবে ছোট একটা আবেদন করি, হুমায়ুন আহমেদের কোন অটোগ্রাফ সংগ্রহে না থাকলে আজই সেটা সংগ্রহ করে নিন, তারপর সেটা টাঙিয়ে রাখুন বসার ঘরের চমৎকার দেয়ালে। ভবিষ্যতে কখনো বেড়াতে গেলে যেনো আমাকে কলার টেনে দেখাতে পারেন, 'দেখ ব্যাটা এরে বলে সিঁড়ির উঁচু জনের অটোগ্রাফ'!
শিমুলকে যতোটুকু জানি সে কখনোই বইমেলার মাঠের ধূলো গায়ে মেখে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকবে না আপনার সিঁড়ির উঁচু জনের অটোগ্রাফ নিতে, যেটা আপনি হয়তো অনায়াসে করবেন। কারণ আপনি 'স্টাবলিশড পাঠক'। স্টাবলিশড রাইটাররা আপনার মাঝে প্রভাব বিস্তার করে। আপনি রাত জেগে হিমুর হাতে কয়েকটি নীল পদ্ম দিয়ে, র্যাবের সাথে তার বিয়েতে বরযাত্রী হিসেবে যান, ভালোবাসা আর প্রেমের মধ্যে পার্থক্য নিরূপনে আশায় আশায় থাকেন আপনার মেয়ের সংসার নিয়ে, একটি ফুলের কয়েকটি গল্প নিয়ে আপনি উচ্চ গলায় জিজ্ঞেস করেন তুমি কার বলো!
আপনার অনুপ্রেরণা বা আপনার মাঝে প্রভাব আনয়নকারী নামীদামী কারও ব্যাপারে যথাযথ সম্মান দেখিয়েই বলছি, মাসকাওয়াথ আহসান হয়তো আপনার মতো ডাকসাইটে পাঠকদের মাঝে কখনোই কোন আবেদন তৈরী করতে পারবেন না, সেই চেষ্টাও হয়তো তিনি করবেন না। কিন্তু শিমুল কিংবা আমার তথা আমাদের মতো 'স্ট্রাগলিং পাঠকদের' জন্য তিনি বাতিঘর!
কারণটা বলি, মাসকাওয়াথ আহসান হলেন "রাইটার অফ দ্যা রাইটার্স", সম্ভবত "রাইটার অফ দ্যা রিডার্স" তিনি নন।
ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মে, ২০০৭ রাত ১০:১১