আগের পর্ব পড়ুন । পাইকপাড়া গাঁয়ের শেয়ালেরাঃ কোমরে লাল রঙা চাদর জড়িয়ে, জড়িয়ে নয় বলতে হবে পরে বাঁশীতে সুর তোলা আর ছাড়া গলায় এক লম্বাচুলো যুবককে গান ধরতে দেখেছি কয়েকদিনের মাথাতেই। সাথীদের জিজ্ঞেস করায় বললো যে, সে মোকামের পাগল, সারাদিন বনবাদাড়ে ঘুরেফিরে খেয়ে না খেয়ে মোকামের আশপাশে পড়ে ঘুমায় আর গান গাইতে থাকে। ঝড়-বৃষ্টিতেও তাকে দেখা গেছে ভারতের টিলায়। টিলার সবুজ ঘাসগুলোতে বৃষ্টির পর রোদের ঝলকানি আজো মনে মনে আমার দু'চোখ ধাঁধিয়ে দেয়। এত সুন্দর সূর্যডোবা প্রকৃতি অথচ তিন তিনটে ভয় ওখানেই বাসা বেঁধে বসে আছে।
কবর, মাযার, শ্মসান, তেতুল গাছ, তুলা গাছ, জোড়া তালগাছ আর তিন রাস্তার মোড়; এ জায়গাগুলোকে সে-ই ঘুম পাড়ানী জুুজুবুড়ির গল্পে বলা ভয়ের মতই মনে মনে ভর করে আছে। তাই 'বাবা'(?)র (নাম মনে পড়ছে না) মাযারকে ভয়ই পেতাম, তাছাড়া বাঁশের বেতা দিয়ে এমনভাবে বানিয়েছে যে, একটা মানুষ কোনমতে শুয়ে শুয়ে প্রবেশ করে ঠিক কবর বরাবর জায়গাটিতেই শুয়ে থাকতে পারবে; দেখতেই অন্যরকম লাগতো। দ্বিতীয় ভয়টি ছিল পাগল যুবকটি, কে জানে যদি সামনে পড়ে যাই আর ছোট্ট ঠ্যাং ধরে ছুঁড়ে মারে খরস্রোতা গাঙের পানিতে। তৃতীয় ভয়টি ছিল সেই হুক্কাহুয়ার দল, মোকামের দক্ষিন-পশ্চিমের টিলার বাগান ঘেঁষেই এ দু'গাঁয়ের কবরস্থান।
অনেক শিশু আর মুর্দাকে দুনিয়ায় পাহারা না দিতে হলেও মরণের পর পাহারা বসাতে হয় কবরস্থানে কেননা, এলাকার পাহাড়ী শেয়ালেরা কিভাবে যেন লাশের গন্ধ পেয়ে যায় আর রাত গভীরে এসে তাদের স্রষ্টা প্রদত্ত শাবল চালিয়ে খুঁড়ে নিয়ে মহাভোজের আয়োজন করে থাকে। পরদিন শোকার্ত পরিজনদের জন্য সে দৃশ্য হয় আরো হৃদয় বিদারক! প্রচলিত গল্পে অনেক শুনেছি যে, শিশুদের কলিজাটা না কি আগে খায় ওরা, কখনো কখনো শুধু কলিজাসহ আরো গুরুত্বপূর্ণ কিছু অঙ্গ খেয়েই বাকী দেহ রেখে চলে যায় ওরা।
পৃথিবীকে বুঝার বয়সের সাথে সাথে কখনো কখনো পত্রিকার পাতাও দেখেছি চারপেয়ে নয়; দু'পেয়ে শেয়ালেরা মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ভাগ বসাচ্ছে, হাত-পা এক জায়গায়, মাথা অন্য জায়গায়, বাকী দেহ অন্য কোথাও। এরাও শেয়াল, শুধু অবয়ব আর ভাষাগত পার্থক্যের কারণে আমরা কাছে থেকে না জানলে চিনতে পারি না কেবল।
(চলবে)
ছবির জন্য কৃতজ্ঞ যেখানে।
আলোচিত ব্লগ
মাটির কাছে যেতেই..
মাটির কাছে
যেতেই..
ঠিক যেন
খা খা রোদ্দুর চারদিকে
চৈত্রের দাবদাহ দাবানলে
জ্বলে জ্বলে অঙ্গার ছাই ভস্ম
গোটা প্রান্তর
বন্ধ স্তব্ধ
পাখিদের আনাগোনাও
স্বপ্নবোনা মন আজ
উদাস মরুভূমি
মরা নদীর মত
স্রোতহীন নিস্তেজ-
আজ আর স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
টাকা ভাংতি করার মেশিন দরকার
চলুন আজকে একটা সমস্যার কথা বলি৷ একটা সময় মানুষের মধ্যে আন্তরিকতা ছিল৷ চাইলেই টাকা ভাংতি পাওয়া যেতো৷ এখন কেউ টাকা ভাংতি দিতে চায়না৷ কারো হাতে অনেক খুচরা টাকা দেখছেন৷ তার... ...বাকিটুকু পড়ুন
বেলা বয়ে যায়
সূর্যটা বলছে সকাল
অথছ আমার সন্ধ্যা
টের পেলামনা কবে কখন
ফুটেছে রজনীগন্ধ্যা।
বাতাসে কবে মিলিয়ে গেছে
গোলাপ গোলাপ গন্ধ
ছুটেছি কেবল ছুটেছি কোথায়?
পথ হারিয়ে অন্ধ।
সূর্যটা কাল উঠবে আবার
আবারো হবে সকাল
পাকা চুল ধবল সকলি
দেখছি... ...বাকিটুকু পড়ুন
পর্ণআসক্ত সেকুলার ঢাবি অধ্যাপকের কি আর হিজাব পছন্দ হবে!
ইন্দোনেশিয়ায় জাকার্তায় অনুষ্ঠিত একটা প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশি নারীদের একটা রোবোটিক্স টিম। এই খবর শেয়ার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপিকা। সেখানে কমেন্ট করে বসেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন... ...বাকিটুকু পড়ুন
আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়
কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়
আমার বাবা-কাকারা সর্বমোট সাত ভাই, আর ফুফু দুইজন। সবমিলিয়ে নয়জন। একজন নাকি জন্মের পর মারা গিয়েছেন। এ কথা বলাই বাহুল্য যে, আমার পিতামহ কামেল লোক ছিলেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন