গালি দেওয়া পছন্দ করি না। কখনো করবোও না। এইটা নিশ্চিত । কোন ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে গালি দিতে অবশ্যই বাধে । বাধে রুচিতে । বাধে সংস্কারে । হয়ত সীমাবদ্ধতা ভাবেন কেউ কেউ । আমার চিন্তায় গালি "একটি দুর্বল অস্ত্র"। বাবা বলতেন , যে আসলেই শক্তিমান , সে কোন কথাই বলে না। তার নিরবতার শক্তি অনেক বেশি , ক্রোধোন্মত্ত চিৎকারের চেয়ে ! তার প্রমান ও পেয়েছি । স্কুলে পুরো ক্লাসকে পিন ড্রপ সাইলেন্সে আনতে আমার এক জোড়া চোখই যথেষ্ট ছিলো । ওরা জানতো , ক্ষমতা আমার হাতে । ক্লাস ক্যাপ্টেন ছিলাম যে!
স্কুল জীবনে ক্লাস টু থেকে ক্লাস ক্যাপ্টেন । পড়েছি ঢাকা শহরে ডিসিপ্লিনের জন্য বিখ্যাত এক স্কুলে । সর্বত্র ডিসিপ্লিন মেনে চলার একটা সুন্দর অভ্যাস ছিলো তখন । আর ক্যাপ্টেন হিসেবে আমি সর্বত্র ছিলাম " তীক্ষন নজরদারি" এর ভিতর । আমাদের, মানে ক্লাস ক্যাপ্টেনদের, আবার " আদর্শ " হওয়া ফরয ছিল । কিন্তু , ক্রোধ যে বাঁধ মানে না !
তখন ভীষন খারাপ গালি ছিলো "হারামজাদা" । আমার বন্ধু মহলে এই কথা উচচারনের কথা কেউ চিন্তাও করতে পারতো না। মনে আছে , একবার "শালা" শব্দটা উচচারনের জন্য একজন ছাত্রকে বন্ধুর লিস্টি থেকে " চিরতরে পরিত্যজ্য " করে দেওয়ার কথা । এখন প্রচন্ড হাসি পায় । হায় রে ! আমার সুললিত ভাষার চরম অধঃপতন ঘটে মেডিকেল লাইফে । দুনিয়ার কোন গালিই আর শিখতে বাকি থাকে না । তবে বেশির ভাগই ইংরেজি ।
কিন্তু , স্কুলের কোমল নিষ্পাপ দিন গুলোতে , কিছু ভদ্র গালির প্রয়োজন হয়ে পড়ে । রাগটাও প্রকাশ করা দরকার । আবার অপমান ও করা যাবে না ।
ক্লাসের ক্রিয়েটিভ টিম আমার জিগিরি দোস্তরা । অতএব , চললো সুললিত গালির সন্ধান । হয় নতুন , নয়ত পুরাতনকে ভদ্রতার কাপড়ে ঢেকে ।
এই গুলো আমাদের প্রিয় গালি -
১। পা পা ঝা - পাজির পা ঝাড়া
২। ভোনাব্যান - ভোদাইয়ের নাতি ব্যাঙ এর নানা
৩ । ময়লা চাদর
৪। খালি কাগজের ঠোঙ্গা
৫। থ্যাতলানো কলার খোসা
৬। নর্দমার তেলেপোকা
৭। শয়তানের দাঁতের ময়লা
৮। ডিম
৯। আউলা বনের বাউলা পাগল
১০। বান্দর বনের কালো বকরী
১১। সিন্ধী গরু
১২। উলু বনের ভুলু কুকুর
১৩। বৃন্দাবনের ভ্যন্দা
১৪ । গোবরের ব্যবসায়ী
১৫ । মজিদ [ লালসালু]
১৬। কাজের ছেলে কাঞচন
১৭। স্ত্রী এনোফিলিস মশা
আর মনে পড়ছে না। স্কুলের দোস্ত গুলারে ফুনাই ! তারপর কমুনে!
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ১০:২৮