পরিবেশ বান্ধব সাইক্লিং হতে পারে ঢাকাবাসীদের জ্যাম থেকে মুক্তির একটা চমৎকার উপায়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাইক্লিংকে উৎসাহিত করা হয়। যে হারে সড়কের উপরে যানহবাহনের চাপ বাড়ছে সেমাত্রায় সড়ক সম্প্রসারণ সম্ভব নয়। এমন অসুবিধার মুখোমুখি হয়ে ইউরোপ, সাউথ-ইস্ট এশিয়া, চায়নাতে ট্যুরিস্টসহ অফিসমূখী মানুষের জন্য সাইক্লিংকে বেছে নেয়ার জন্য সরকারী ও বেসরকারী প্রচারণাও বেশ সরগরম। এতে কেবল সড়কের উপরে যানবাহনের চাপ হ্রাস পাচ্ছে না, সেই সাথে পরিবেশ দুষণ কমছে, সাইকেলআরোহীর ফিজিক্যাল এক্সারসাইজও হয়ে যাচ্ছে।
উন্নত বিশ্বও যখন অব্যহতগতিতে বেড়ে যাওয়া যানবাহন ও সড়কের ইক্যুয়েশন মেলাতে হিমশিম খাচ্ছে, তখন ঢাকার কথা তো বলাই বাহূল্য। বিগত এক দশকে যে হারে যানবাহন বেড়েছে সে তুলনায় সড়ক সম্প্রসারণ আশ্চর্যজনকভাবে অপ্রতুল। ঢাকার প্রধান কমার্শিয়াল এলাকাগুলোর মধ্যে দূরত্ব অনুল্লেখ্য হলেও জ্যামের কারণে ২০ মিনিটের মতিঝিল থেকে ধানমন্ডীর দূরত্ব পিক আওয়ারে দুই ঘন্টার পথ হয়ে যায়। বনানী, গুলশান থেকে মতিঝিল পাড়ী দিতে অন্য একটা শহরে যাত্রার মত প্রস্তুতি নিতে হয়। অথচ জ্যাম না থাকলে ২০/৩০ মিনিটের পথ।
বিশ্বের মেগাসিটিগুলোতে সাইক্লিং এর হার কেমন তার কোন তথ্য আছে কিনা জানি না, তবে ঢাকা যে সে লিস্টে একদম শেষের দিকে থাকবে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। একটু খেয়াল করলে দেখবেন ঢাকাতে সাইকেল যাত্রী মাত্র হাতে গোনা। গতকাল আমি সারাদিন ঢাকার রাস্তায় মাত্র ৭ জন সাইকেল আরোহীর দেখা পেয়েছি। অথচ হাজার হাজার মানুষ ফার্মগেট থেকে শাহবাগ যাচ্ছে বাসে চড়ে, ৩০ মিনিট অপচয় করে। মহাখালী থেকে গুলশান যাচ্ছে তদ্রুপ সময় ব্যয় করে। একটা সময় ছাত্ররা সাইক্লিং করতো, আশংকাজনকভাবে এখন সেটাও কমে গেছে পারিবারিকভাবে নিরুৎসাহিত করার জন্য।
অচিরেই সরকারী ও বেসরকারী এমন কিছু উদ্যোগ নেয়া উচিত সাইক্লিং উৎসাহিত করার জন্য। প্রয়োজনে এজন্য রাস্তা সংস্কার করে সাইকেলের জন্য আলাদা লেন করা যেতে পারে। পরিবেশ বান্ধব সাইকেল আমাদের ফিরিয়ে দিতে পারে একটা জ্যামমুক্ত নগরী।