somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নববর্ষের সকালে সামহয়্যারের বদলে যাওয়াঃ সুনীল সমুদ্রের বিশ্লেষণ থেকে কিছু প্রস্তাবনা

২৮ শে এপ্রিল, ২০০৭ সকাল ১১:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নববর্ষের প্রথম সকালটা খুব সুন্দর হবার কথা ছিল।.... হয়নি।
চাইলেই সব সকাল আসলে সহজে সুন্দর করা যায়না....।
চাইলেই সুখের বাঁশী বেজে ওঠে না- হঠাত্ বদলে যাওয়া পরিবতির্ত কোন প্রাঙ্গনে...। চিরচেনা, মুখস্ত হয়ে যাওয়া কোন মুখ -সহসা বদলে গেলে কষ্ট বাড়ে প্রেমিকের..। চাওয়ার মতো করে পাওয়া হয় না বলেই- এলোমেলো রুদ্র বিক্ষোভে ফেটে পড়ে প্রকৃতি।

বৃষ্টির বিপুল আনন্দের বদলে নামে থমথমে অসুখী মেঘ। বিষন্ন, বিক্ষুব্ধ যতো মেঘ..। বোশেখের প্রথম প্রহরে সামহয়্যার-ইন-ব্লগের বদলে যাওয়া- আসলে মনে করিয়ে দেয় -এইসব ‌সত্যকেই।

বাংলা ব্লগের সীমান্ত জুড়ে এখন ‘টপমোষ্ট কমপ্লেইন’ ফেস করতে হচ্ছে ‘সামহয়্যার ইন কর্তৃপক্ষ’কে। পহেলা বৈশাখ থেকে সামহয়্যার ইন ব্লগের উত্তরণ ঘটেছে ইউনিকোডে।
সেইসঙ্গে বদলে গেছে এর টোটাল ডিজাইন।...বদলে গেছে সম্পূর্ণ আঙ্গিকটাই।

এই বদলে যাওয়া খুশি করেনি সামহয়্যার প্রেমিদের। প্রতিদিনই সামহয়্যার খুললে এখন একটা না একটা অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছেই। কি কারণে এতো অভিযোগ ? কোথায় মূল সমস্যা এতোসব অভিযোগের পেছনে?

পয়লা বৈশাখের রোদ-ঝলমল এক সকালে পুরনো প্রীতির অবয়ব পাল্টে নতুন রঙের ডানায় পাখা মেললো আমাদের খুব প্রিয় সামহয়্যার ইন। আমাদের আনন্দে উদ্ভাসিত হবার কথা।
কিন্তু হলো না । কেন? ...... এ জিজ্ঞাসা আসলে অনেকেরই।... আনন্দের বৃষ্টি নামার বদলে কেন তীব্র সমালোচনা আর শ্লেষের মুখোমুখী হলো সামহয়্যার-ইন ?

সুনীল সমুদ্রের বিশ্লেষণে এর কারণ হিসেবে চিহ্ণিত হয়েছে নীচের কয়েকটি বিষয়ঃ

(১) ইউনিকোডে বাংলা লেখার বিষয়ে অজ্ঞতাজনিত সমস্যায় পড়ে অনেকেই। তবে ইতোমধ্যে ইউনিকোড কী-বোর্ডে বাংলা লেখার বিষয়ে প্রয়োজনীয় টিপস, অভ্র কী-বোর্ড এর সাহায্য ইত্যাদির ব্যাপক প্রচার ও পরস্পর শেয়ারিং এর কারণে এ সমস্যা অনেকটাই কমে আসছে বলে মনে হয়।

(২) সামহয়্যার এর নতুন অবয়ব ভালো না লাগার প্রধান কারণ বোধহয় এর ডিজাইন ও কম্পোজগত দিক। সামহ্য়্যারের এই মুহূর্তের সবচেয়ে বড় ত্রু টি হিসেবে আমি চিহ্ণিত করতে চাই বাংলা অক্ষর বিন্যাস এর ক্ষেত্রে পরপর দুটি লাইনের মধ্যে ‘সিঙ্গেল স্পেস’ এর পরিবর্তে ‘দেড়-স্পেস’ ব্যবধান রাখার বিষয়টি।

কখনোই কোন কালে বাংলা লেখা সিঙ্গেল স্পেস ছাড়া অন্য কোন স্পেস (যথাঃ দেড়-স্পেস বা ডাবল স্পেস) বজায় রেখে লেখা হলে তা’ আমাদের চোখে কোন সৌন্দর্য্যের বোধ জাগাতে সক্ষম হয়নি।

আশার কথা, সামহয়্যার কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে ব্লগের প্রথম পাতায় প্রকাশিত লেখাসমূহের (অংশবিশেষ) ক্ষেত্রে দুটি লাইনের মধ্যে ‘সিঙ্গেল স্পেস ব্যবধান’ নিশ্চিত করেছেন কিন্তু ব্লগের ভিতরে ইনডিভিজুয়াল ব্লগারগনের লেখার ক্ষেত্রে এখনো দুটি লাইনের মধ্যে ‘দেড় স্পেস ব্যবধান’ রয়ে গেছে। ফলে এই দেড় স্পেস ব্যবধান নিয়ে ব্লগারদের লেখা কবিতা বা গদ্য গুলো বিসদৃশ এক অবয়ব নিয়ে ‘ছাড়া ছাড়া’ ভাবে উপস্থাপিত হচ্ছে ব্লগারদের কাছে।
ফলে ভালোলাগার মতো কোন সৌন্দর্য্য দেখানোর সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সামহয়্যার ইন ব্লগ।

(৩) ব্লগের প্রথম পাতার ডিজাইন আকর্ষনীয় হয়নি। প্রথম পাতার সবচেয়ে উপরের ইমেজটি ‘বাঁধ ভাঙ্গার আওয়াজ’-এই শ্লোগানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে করা উচিত (যেমনটি প্রথমদিকে ছিল) । বর্তমান ইমেজটির রঙ ও অন্যান্য ইফেক্ট বাচ্চাদের ‘সবুজ সাথী’ বইয়ের কথা মনে করিয়ে দেয়।

(৪) প্রথম পাতার বা দিকের কলামের লেখাগুলোকে এতো বড় ফন্টে কেন রাখতে হবে তা’ বুঝতে পারিনি একেবারেই...। সর্বোচ্চ ব্লগারদের তালিকার মধ্যে আবার সেই বিসদৃশ ‘দেড় স্পেস' ব্যবধান’। আমি খুব জোর দিয়েই বলবো- প্রথম পাতার বা দিকের কলামের সকল লাইনের মধ্যে দেড় স্পেস ব্যবধান বাদ দিয়ে সিঙ্গেল স্পেস ব্যবধান ফিক্স করলে এবং সেগুলোর শিরোনামগুলোর ফন্ট সাইজ কিছুটা কমিয়ে দিলেই সামহয়্যারের প্রথম পাতার সৌন্দর্য্যহানির মাত্রা অনেকটাই কমে আসবে।

(৫) বা দিকের কলামে ‘সর্বোচ্চ ব্লগার’ ছাড়াও ‘এ মাসের সর্বোচ্চ ব্লগার’ শিরোনামে প্রতি এক মাসে সর্বোচ্চ লেখা পোষ্টকারী দশজন ব্লগারের নাম লিংক সহ রাখা উচিত। এতে সুবিধা হবে দুটি। একটু উদাহরণ দিয়ে বলি...।

ধরা যাক, একজন ব্লগার হয়তো একসময় ১০০০ লেখা লিখে (প্রচুর অর্থে) সর্ব শীর্ষে সর্বোচ্চ ব্লগারের তালিকায় নাম উন্নীত করেছেন। কিন্তু গত ছয় মাস ধরে ব্যক্তিগত ব্যস্ততায় তিনি আর লিখছেন না। সেক্ষেত্রে ‘একটিভ ব্লগার’ হিসাবে সমসাময়িক কোন বিষয় তার লেখায় আর পাওয়া যাবেনা । একারণেই ‘এই মুহূর্তের একটিভ ব্লগার’ অথাত্ত ‘কারেন্ট পিরিয়ডের একটিভ ব্লগার’ কারা কারা আছেন তা’ জানাটা ব্লগারদের সবার জন্যই জরুরী একটি বিষয়। তাই ‘এ মাসের সর্বোচ্চ ব্লগার’ শিরোনামের তালিকা দেওয়া থাকলে সহজেই সেখান থেকে ‘কারেন্ট পিরিয়ডে’ কোন কোন ব্লগার বেশী লিখতে পারছেন বা একটিভ আছেন তা’ সহজে বোঝা যাবে। তবে এখানে আর একটি কথা না বললেই নয়...। কয়েক মাস আগেও সামহয়্যার ইন ব্লগে ‘এ সপ্তাহের সর্বোচ্চ ব্লগার’ শিরোনামে একটি তালিকা রাখা হতো যা’ পরবতীর্তে ‘ফ্লাডিং’ বন্ধ করার প্রয়োজনে স্থগিত করা হয়। আমার মনে হয়, ‘এ সপ্তাহের সর্বোচ্চ ব্লগার’-এর পরিবর্তে ‘এ মাসের সর্বোচ্চ ব্লগার’ চালু করলে একমাস ধরে ‘ফ্লাডিং’ করে নিজের নাম সর্বোচ্চ অবস্থানে নেওয়াটা খুব একটা সহজ হবে না , যতোটা সহজ ছিল ‘এ সপ্তাহের সর্বোচ্চ ব্লগার’-এর ক্ষেত্রে নিজ নাম শীর্ষে নেওয়া...।

তাই ‘এ মাসের সর্বোচ্চ ব্লগার’ এর তালিকা চালু করলে তা’ থেকে কারেন্ট পিরিয়ডের একটিভ ও লিখিয়ে ব্লগারদের ব্লগে দ্রুত ঢোকার সুযোগটি পাওয়া যাবে এবং নিশ্চিতভাবে তাদের ব্লগে সমসাময়িক বিষয়ের উপর পোষ্ট করা কোন লেখা পড়ার সুযোগ পেয়ে উপকৃত হবেন অনেকেই...।

(৬) ‘সাগর’ ইউনিকোড ফন্টটি একেবারে খারাপ নয়। তবে বার বার ফন্ট চেঞ্জ করে মোট ১৬ টি বাংলা ইউনিকোড ফন্টকে ‘বাংলা উইকিপিডিয়ায়’ একের পর এক প্রয়োগ করার একটি এক্সপেরিমেন্ট চালানোর পর আমার কাছে মনে হয়েছে ‘একুশে লোহিত’ নামক বাংলা ইউনিকোড ফন্টটিই বাংলা ওয়েবসাইট দেখা ও পড়ার জন্য শ্রেষ্ঠ। (এ যাব্ত প্রকাশিত বাংলা ইউনিকোডের বিভিন্ন ফন্টের সুবিধা-অসুবিধা ও তাদের প্রয়োগজনিত ত্রু টি-বিচ্যুতি বিষয়ে একটি পৃথক লেখা পোষ্ট করার ইচ্ছ রাখছি....)।


অনেককিছু সমস্যার পরেও সবচেয়ে সোজা-সাপ্টা কথা একটাই-‘খুব বেশী ভালবেসেছি তোমাকে সামহয়্যার ইন ব্লগ'।
তুমি যে বিশ্বজুড়ে বাঙালীর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অনুভব আর ভালবাসাকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছো এক সীমান্তে! তোমাকে ভাল না বেসে উপায় কি?

আমি আসলে চিনে নিয়েছি
অনন্ত গভীরের আদি অকৃত্রিম এক ‘তোমাকে’!

অতঃপর, বার বার পাল্টে যেতে পারে প্রতিকৃতি তোমার-
খোলস পাল্টে তুমি ঝলসে উঠতে পারো -বিভিন্ন অবয়বে-

আমার কাছে তুমি - তবু সেই চিরচেনা- ‘তুমি’ই রয়ে যাবে
যা দেখে শর্তহীণ, ধারণ করেছি এই বুকে, অনন্ত ভালবাসায়...।


......................................
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০০৭ দুপুর ১২:১৭
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অতিরিক্ত বা অতি কম দুটোই সন্দেহের কারণ

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩০

অনেক দিন গল্প করা হয়না। চলুন আজকে হালকা মেজাজের গল্প করি। সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নেই৷ জোসেফ স্টালিনের গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। তিনি দীর্ঘ ২৯ বছর সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান নেতা ছিলেন। বলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (দ্বিতীয় অংশ)

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:০৫


আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (প্রথমাংশ)
আমাদের সদ্য খনন করা পুকুরটা বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেল। যা মাছ সেখানে ছিল, আটকানোর সুযোগ রইল না। আমি আর দুইবোন শিউলি ও হ্যাপি জালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)

লিখেছেন অপু তানভীর, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৭



কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×