somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নেভিল কার্ডাস: কৃকেট সাহিত্যের শেক্সপিয়ার

২২ শে এপ্রিল, ২০০৭ দুপুর ১:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নেভিল কার্ডাস। তাকে বলা হয়ে থাকে কৃকেট সাহিত্যের শেক্সপিয়ার। কিন্তু কেন? কে এই নেভিল কার্ডাস?

স্যার নেভিল কার্ডাস একজন জনপ্রিয় ইংলিশ সাংবাদিক। লিখতেন ম্যানচেস্টার গার্ডিয়ান পত্রিকায় মিউজিক ও কৃকেট বিষয়ে। আজকের দিনের ক্রীড়া সাংবাদিকরা কৃকেটের চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন। লিখছেন কৃকেট বিষয়ক রসালো লেখা। কৃকেট রিপোর্ট বর্তমানে হয়ে গেছে সাহিত্য।এটা হয়তোবা সম্ভব হতো না যদি নেভিল কার্ডাস কৃকেট নিয়ে না লিখতেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য, আমাদের ক্রীড়া সাংবাদিকরা নেভিল কার্ডাসের কাছে ঋণী হলেও স্পোর্ট পাঠকদের কাছে তিনি এখনো অজ্ঞাত। এমনকি কার্ডাসের জন্ম-মৃতু্ বার্ষিকীতেও পত্রিকাগুলো তাকে টৃবিউট করে না! অথচ কৃকেট ও কৃকেট সাহিত্যের উন্নতি ও জনপ্রিয়তার নেপথ্যে নেভিল কার্ডাসের অবদান আকাশ ছোয়া। ওয়ার্ল্ড কাপের ডামাডোলে গত ২ এপৃল নিভৃতে চলে গেল নেভিল কার্ডাসের ১১৮তম জন্মবার্ষিকী।

জন ফ্রেডরিক নেভিল কার্ডাস ১৮৮৯ সালের ২ এপৃল ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারে জন্মগ্রহণ করেন। তার জন্মের পটভূমি উলল্লেখযোগ্য এমনকি স্বসতিদায়কও নয়। কারণ তার মা ছিলেন একজন রূপোজীবী এবং সেই সূত্রে তিনি নিজে দুর্ভাগা সন্তান। কার্ডাসের একাডেমিক শিক্ষা সামান্য হলেও পাবলিক লাইব্রেরির কল্যাণে তিনি হয়েছিলেন স্বশিক্ষিত। ছোটবেলায় তিনি মিউজিক ও কৃকেটে গভীরভাবে আকৃষ্ট হয়েছিলেন। ফলে একজন প্রফেশনাল কৃকেটার ও অ্যামেচার মিউজিশিয়ান রূপে তার আত্মপ্রকাশ হয়। শ্রেসবেরি স্কুলের কৃকেট কোচের দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি হেডমাস্টার সাইরিল অ্যালিংটনের সুনজরে আসেন। ১৯১৪ সালে হেডমাস্টার কার্ডাসকে তার সেক্রেটারি করেন। ১৯১৬ সালে অ্যালিংটন যখন ইটনে স্থানান্তরিত হলেন তখন কার্ডাসও স্থান পরিবর্তনের প্রয়োজনবোধ করেন। সৌভাগ্যবশত তিনি ম্যানচেস্টার গার্ডিয়ান পত্রিকায় জুনিয়র স্টাফ পদে চাকরি পেয়ে যান।

অ্যালিংটনের মতো বিখ্যাত সম্পাদক সিপি স্কটও কার্ডাসের প্রতিভা বুঝতে পেরেছিলেন। তাই স্বল্প সময়েই দ্বিতীয় নির্ভরযোগ্য থিয়েটার কৃটিক হিসেবে তার পদোন্নতি হয়। পরে ১৯১৯ সালে কৃকেট করেসপন্ডেন্ট এবং সেই সঙ্গে ১৯২৭ সালে তিনি পত্রিকার প্রধান মিউজিক কৃটিকে পরিণত হন। বিকালে লর্ডসের মাঠে খেলা দেখা ও সন্ধ্যায় গানের আসরে যাওয়া ছিল নেভিল কার্ডাসের মধুর নিয়তি। কিন্তু পত্রিকার পাঠকদের কাছে তার চেয়েও মধুর ছিল কার্ডাসের অসাধারণ সব রিভিউ।

মধ্যে ১৯৩৯-১৯৪৭ সাল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়াতে কাজ করা ও থাকার পর কার্ডাস তার বাকি দীর্ঘ জীবন ম্যানচেস্টার গার্ডিয়ানে (১৯৫৯ থেকে দি গার্ডিয়ান) কৃকেট ও মিউজিক বিষয়ে লেখালেখি করেন। মাঠের খেলাকেও যে সাহিত্যের বিষয় বানিয়ে ফেলা যায় সেটা নেভিল কার্ডাসই প্রথম দেখিয়েছেন। পরবতীতে তার সেরা কৃকেট লেখাগুলোর একাধিক সংকলন রূপার্ট হার্ট ডেভিস কর্তৃক প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু তার মিউজিক বিষয়ক লেখাগুলো, যা তিনি অধিক গুরুত্বপূর্ণ মনে করতেন, তা বই আকারে প্রকাশিত হয়নি।

নেভিল কার্ডাস প্রফেশনাল কৃকেটার ও গ্রেটেস্ট মিউজিশিয়ানদের কাছে সর্বোচ্চ সম্মানিত ব্যক্তি ছিলেন। তার মধ্যস্থতায় পরস্পর শত্রুভাবাপন্ন সেলিব্রেটির মধ্যে বন্ধুত্ব হওয়ারও নজির আছে।

কিংবদন্তি এই কৃকেট লেখক ১৯৬৭ সালে নাইট উপাধি লাভ করেন। ১৯৭৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি স্যার নেভিল কার্ডাসের বর্ণাঢ্য লাইফ ইনিংস শেষ হয়ে যায়। কিন্তু পরিতাপ এটাই আর কয়টা দিন বেচে থাকলে তিনি ওয়ার্ল্ড কাপ কৃকেটের প্রথম আসরটি দেখে যেতে পারতেন। হয়তো তখন সৃষ্টি করতেন আরো এক অনবদ্য কৃকেট রচনা!
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৫:৩৫
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যবহারে বংশের পরিচয় নয় ব্যক্তিক পরিচয়।

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৫

১ম ধাপঃ

দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে দেখা হয়। মানুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলেই লুকিয়ে রাখে। এভাবেই চলাফেরা করে। মানুষের আভিজাত্য বৈশিষ্ট্য তার বৈশিষ্ট্য। সময়ের সাথে সাথে কেউ কেউ সম্পূর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

×