somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মার্ক টোয়েন (পর্ব 30)

০৯ ই এপ্রিল, ২০০৭ ভোর ৬:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এক বিকেলে ভ্যালেন্স শহরের পনেরো মাইল দূরে নদীতে নৌকায় চড়ে বেড়ানোর সময় চিন্তাটা মাথায় এলো টোয়েনের । অন্যমনস্ক, স্বপ্নালু চোখে পূবের পাহাড়গুলো দেখছিলেন তিনি । হঠাৎ মনে হলো এর মধ্যে একটা পাহাড় দেখতে ঠিক নেপোলিয়নের মুখের মতো! ব্যাপারটা তিনি ডায়রিতে নোট করে রাখলেন । কিন্তু গোটা সফরে লেখার মত তেমন কিছু পেলেন না তিনি ।

সেই শীতে বার্লিনে কাটালেন তিনি । জার্মান সম্রাট কাইজার দ্বিতীয় ভিলহেল্ম দাওয়াত করলেন ডিনারে । রাণী ভিক্টোরিয়ার নাতি কাইজার ভালই ইংরেজি জানতেন, 'লাইফ অন দ্য মিসিসিপি' বইটা পড়ে খুব মজা পেয়েছেন । 'এ ট্র্যাম্প অ্যাব্রড' ও ভাল লেগেছে তাঁর । আসলে পুরো জার্মানীতেই মার্ক টোয়েন খুব জনপ্রিয় ছিলেন । এমন কী হোটেলের পোর্টারেরও মার্ক টোয়েনের বইয়ের সংগ্রহ ছিল । একদিন টোয়েনের পরিচয় জানতে পেরে সে তার ছোট্ট ঘরে মার্ক টোয়েনকে টানতে টানতে নিয়ে গেল ।

তারপরে নাউহাইমে গিয়ে ক্লিমেন্স কিছূটা মাথা ঠান্ডা করে কাজ করতে পারলেন । 'দ্যা এক্সট্রা অর্ডিনারি টুইনস' আর 'টম সয়্যার অ্যাব্রড' গল্প ও উপন্যাসে হাত দিলেন । প্রথম গল্পটা থেকে 'পাডনহেড উইলসন' বইটা বের হবে । দ্বিতীয়টা সেইন্ট নিকোলাস পত্রিকার জন্য ধারাবাহিকভাবে লেখা । বেড়াতে এলেন বন্ধু টুইচেল এলেন (এ ট্র্যাম্প অ্যাব্রডের সাথী), একদিন পার্কে বেড়াতে দুজনে রানী ভিক্টোরিয়ার বড় ছেলে সপ্তম এডওয়াডের্র সাথে দেখা হয়ে গেল । 'প্রিন্স অ্যান্ড দ্য পপারে' এডওয়ার্ডকে চরিত্র বানান নি বলে হয়তো ভালই করেছিলেন টোয়েন ।

ইতালির ফ্লোরেন্স শহরের বাইরে ভিলা ভিভিয়ানি ভাড়া নিলেন তিনি । সেখান থেকে লিখলেন 'টম সয়্যার অ্যাব্রড,' আর 'পাডনহেড উইলসান' । তারপরে মনে পড়ল একটা কথা ।

অনেক বছর আগে যখন তিনি হ্যানিবালে কম্পোজিটরের কাজ করতেন তখন রাস্তা দিয়ে যাবর সময়ে একটা বইয়ের ছেঁড়া পাতা এসে পড়েছিল । মার্ক টোয়েন পাতাটা কুড়িয়ে নিয়ে দেখলেন সেখানে জোয়ান অভ আকের্র একটা ছবি । বর্ম পরিহিত জোয়ান ঘোড়ার পিঠে চড়ে ফরাসী সৈন্য দল পরিচালনা করছেন ।

ছবিটা দেখে মার্ক টোয়েন এত মুগ্ধ হলেন যে তিনি ক্রমে ফ্রান্সের ইতিহাস হয়ে, গোটা পৃথিবীর ইতিহাস পড়ে ফেললেন । এর আগে মার্ক টোয়েনের বই পড়ারই অভ্যাস ছিল না ! (আগেই বলেছি ছয় বছর থেকে এগারো বছর পর্যন্ত স্কুলে গেছেন তিনি, এবং স্কুলে থাকার সময় বানান করতে শিখেছিলেন কেবল, ছাপাখানায় কাজ করার সময় তিনি পড়তে শিখেছেন) ।


সুতরাং পঞ্চদশ শতাদ্বীর ফরাসী কৃষক বালিকা জোয়ান (1412-1431), যিনি দখলদার ইংরেজের হাত থেকে ফরাসী দেশকে মুক্ত করতে যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সম্বন্ধে মার্ক টোয়েন লিখতে সবসময়েই আগ্রহী ছিলেন । 'দ্যা পার্সোন্যাল রিকালেকশন অভ জোয়ান অভ আর্ক' বইটা উত্তম পুরষে লেখা । জোয়ানের কাল্পনিক সচিব সোর দো কন্তের ভাষ্যে । 'আমি যদি নিজের নামে লিখি, তাহলে মানুষ হাসবে, ভাববে রসিকতা করছি। আসলে এটা অত্যন্ত সিরিয়াস একটা বই । আমি তাই এই বইটা ছদ্মনামে লিখব ।' এবং সোর দো কন্ত নামেই লিখতে শুরু করলেন টোয়েন ।

ছয় সপ্তাহে এক লাখ শব্দ লিখলেন । যে কোনো বিচারে অনেক লেখা, আরো বেশি যদি আমরা দেখি যে আসলে এ সময়ে টোয়েনকে ফরাসী ভাষায় লেখা অনেক রেফারেন্স ঘাঁটতে হয়েছিল । মিসিসিপি নদীতে পাইলট থাকার সময় ফরাসী আঢ়ার চর্চা করেছিলেন মার্ক টোয়েন । নিউ অর্লিয়ান্স তো এক সময় ফরাসীদের ছিল । মার্ক টোয়েনের যুগে অনেকই সেখানে ফরাসীতে কথা বলতো ।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×