somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মার্ক টোয়েন (পর্ব 29)

০৭ ই এপ্রিল, ২০০৭ রাত ১১:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

1889 সালে 'এ কানেক্টিকাট ইয়াংকি ইন কিং আর্থার্স কোর্ট' বের হলো । মার্ক টোয়েন খোলাখুলিই বললেন এ হচ্ছে তাঁর শেষ বই । 1884 সালে হাক ফিনের পর পাঁচ বছর কোনো বই বের করেননি তিনি । তবে কথা রাখেননি তিনি এর পরেও বই লিখবেন তিনি ।

'কানেক্টিকাট ইয়াংকি' ও ইংল্যান্ডের পটভুমিতে লেখা বই । তবে 'প্রিন্স অ্যান্ড দ্যা পপারের' মতো ঐতিহাসিক উপন্যাস না বরং টাইম ট্র্যাভেল-ফ্যান্টাসি । রাজা আর্থারও তো আর ঐতিহাসিক চরিত্র না ! আর বইটাতে প্রিন্স অ্যান্ড পপারের চেয়ে অনেক কড়া কৌতুককর ভাষায় লেখা ।

সেই গ্রীস্মে তাঁরা কোয়্যারি ফার্মে না গিয়ে ওন্টেওরাতে বন্ধুর কটেজে উঠলেন । সময়টা চমৎকার কাটল কিন্তু শেষ হলো খারাপভাবে । অগাস্টে কেওকুক থেকে ডাক এল, জেইন ক্লিমেন্স অসুস্থ । কয়েক সপ্তাহ পর মার্ক টোয়েনের মা অষ্ট আশি বছর বয়সে পরোলোক গমন করলেন । তারও কিছূ দিন পরে মার্ক টোয়েনের শ্বাশুড়িও মারা গেলেন ।

সময়টা মার্ক টোয়েনের জন্য ভাল যাচ্ছিল না । তিনি ভেবেছিলেন 'ইয়াংকি' বইটা থেকে তিনি যথেষ্ট টাকা পাবেন যাতে তিনি বর্তমানের প্রয়োজন কাটিয়ে উঠতে পারবেন । টাকা তিনি পেলেন ঠিকই কিন্তু টাইপ-সেটিং মেশিনটার পিছনে এতো টাকা গেল যে কুলিয়ে উঠতে পারা গেল না । এই যন্ত্রটা ছাপাখানা টাইপ স্বয়ংক্রিয়ভাবে সাজাতে পারত ।

মার্ক টোয়েন যিনি অনেক বছর হাতে ছাপার হরফ কম্পোজ করেছিলেন সাংঘাতিক ভাবে আকৃষ্ট হয়েছিলেন যন্ত্রটার দিকে । জেমস পেইজ নামে এক উদ্ভাবক প্রায় দশ বছর আগে মেশিনটার মডেল বানিয়েছিলেন । কিন্তু যন্ত্রটাকে বাস্তবে কাজে লাগানোর জন্য যে পরিবর্তনগুলো করার প্রয়োজন ছিল সেগুলো করতে টাকা বেরিয়ে যাচ্ছিল মাসে মাসে ।

1890 সালের শেষ দিকে মার্ক টোয়েন প্রায় দেউলিয়া হয়ে গেলেন যন্ত্রটার জন্য । প্রায় এক লাখ নব্বই হাজার তো চলে গেছিলই এর পিছনে, মোটা টাকা দেনাও জমেছিল তাঁর । সুতরাং মেশিনের চিন্তাটা বাদ দিয়ে আবার টাকার চিন্তা করতে হলো তাঁকে । প্রচুর পরিমানে প্রবন্ধ লিখতে লাগলেন তিনি । হাওয়েলের সাথে আবার ফেলে রাখা একটা নাটক মঞ্চস্থ করে ফেললেন 'দ্যা আমেরিকান ক্লেইম্যান্ট' ।

1891 সালের জুন মাসে, হার্টফোডের্র বাড়িটা বেচে দিলেন । সতেরো বছর সুখের নীড় ছিল বাড়িটা, পৃথিবীর অনেক জ্ঞানী গুনী এ বাড়িতে পায়ের ধুলো দিয়েছেন । এটা ছেড়ে যাওয়া নিঃসন্দেহে কষ্টকর ব্যাপার ছিল তাঁর পক্ষে । মিসেস ক্লিমেন্স শেষ বারের মত বাড়ির ঘর গুলো দেখে নিলেন । কোচোয়ান প্যাট্রিক ম্যাকালিয়ার, যে কিনা মার্ক টোয়েনে বিয়ের পর থেকেই এ বাড়ির কোচোয়ান শেষ বারের মতো ক্লিমেন্স দম্পতিকে স্টেশনে নিয়ে এল । এলমিরায় আর কখনো ফিরবেন না টোয়েন ।

প্রতিটা প্রবন্ধ এক হাজার ডলারে কিনে নেবে বলে খবরের কাগজের সাথে চুক্তি হলো । এই দুর্যোগে আমেরিকা না থেকে ইউরোপে থাকার পরিকল্পনা করলেন টোয়েন । হাতে ব্যাথা পাচ্ছিলেন তিনি, তাই উষ্ণ প্রস্রবনের জন্য বিখ্যাত এ-লো-বেঁ আর জার্মানীর মারিনবাডে ।

সেখান থেকে হাইডেলবার্গে গেলেন তাঁরা । রাইন নদীর অববাহিকায় কিছু দিন কাটিয়ে সুইজারল্যান্ডে উশি-লসানে গেলেন তাঁরা । কোনো বইয়ের জন্য প্লট খুঁজছিলেন তখন মার্ক টোয়েন । কিন্তু এত অলস জীবনে কোনোই সৃষ্টিশীল চিন্তা আসছিলো না ।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যস্ত বেকার

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ৩০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৫

আমার এই অবস্থা
আপনার কী অবস্থা কমেন্ট করে জানান:

ছড়া লেখা হয়না
রান্নার পোষ্ট হয়না
ফেইসবুকে কম আসা হয়
ব্লগ পোষ্ট হয়ান
কারণ : ফ্রিল্যান্স কোর্সে যুক্ত আছি, তায় অন্যসব থেকে দূরে আছি কারণ সময় পাইনা
ফ্রিল্যান্স... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্যারিয়ার কথন: ফ্রিল্যান্সিং, আউটসোর্সিং এবং সর্তকতা।

লিখেছেন জাদিদ, ৩০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৪

গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং, পেশা হিসাবে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সম্মানজনক সামাজিক স্বীকৃতি পাওয়ায় অনেকেই এই পেশায় যুক্ত হয়ে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। এছাড়া বাংলাদেশে কর্মক্ষেত্রে একজন মানুষকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজ মনটা কেমন যেন অনেক কিছু চিন্তা করছে।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ৩০ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



সকালের মৃদু আলোয় মোড়ানো একটি মনোরম দৃশ্য ধরা পড়েছে এই ছবিতে। এটি একটি খোলা জায়গা, যেখানে সবুজের সমারোহ এবং প্রকৃতির ছোঁয়া স্পষ্ট। ছবির বাম দিকে গাছের সারি এবং ডান... ...বাকিটুকু পড়ুন

তোমার ভাঁজ খোলো আনন্দ দেখাও :: দু শ'রও বেশি পুরোনো ব্লগারের প্রোফাইল পিকচার নিয়ে একটি মিউজিক ভিডিও

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ৩০ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৭

১৫ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে সামহোয়্যারইন ব্লগের দু শ'রও বেশি ব্লগারের প্রোফাইল পিকচার নিয়ে বানানো একটা মিউজিক ভিডিও শেয়ার করেছিলাম। যে-সব ব্লগার ঐ সময়ে অ্যাক্টিভ ছিলেন, প্রোফাইল পিকচারগুলো তাদের ছিল।



কয়েকদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রহস্যময় কলা

লিখেছেন বিষাদ সময়, ৩০ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:৩১




এই কলা শব্দটা আমার কাছে পুরাই বিভ্রান্তিকর। নারীদের কলা বলতে যে ছলাকলা সেটা ভালই বুঝি। সেই ছলাকলা দেখে গলা বাড়ালেই যে ষোলকলা পূর্ণ হয় সেটাও জানা। কিন্তু এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×