৩৫ বছর বয়সী কর্মজীবী পুরুষ ইনামুরা তাতিশি টয় পার্কে এসেছেন একটি মিনি কার কিনতে, যার আয়তন হাতের তালুর তুলনায় বড় হবে না। তিনি বলেন, এটা সত্যিই আমাকে নস্টালজিক করেছে। গত ছয় বছর ধরে আমি দুই হাজারেরও বেশি মিনি কার সংগ্রহ করেছি। এগুলো দারুণ শৈল্পিক, একেবারে বাস্তবের মতো। ছোটবেলায় আমার এগুলো কেনার সামর্থ্য ছিল না, তাই এখন এসব সংগ্রহ করার অনুভূতি স্বপ্ন পূরণের মতো।
বেশি বয়সীদের এই খেলনাপ্রীতির পেছনে কয়েকটি কারণ আছে। যাদের বয়স এখন ত্রিশ থেকে পঞ্চাশের মধ্যে তারা বেড়ে উঠেছিলেন জাপানের অর্থনৈতিক উন্নতির বছরগুলোতে। এটা ঠিক সেই সময় যখন সব ধরনের খেলনার বিপুল পরিমাণ উৎপাদন হচ্ছিল। টয় পার্কের পাবলিক রিলেশন বিভাগের ওগিশিমা হারুমির মতে, এই বয়সীদের এখন তাদের স্বপ্ন পূরণের জন্য কেনার সামর্থ্য হয়েছে। কিন্তু অন্য কারণটি হচ্ছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি খেলনাকে আরো আকর্ষণীয় করেছে। শুধু তাই নয়, খেলনার দামও কমিয়েছে। অনেকের কল্পনাকে দিয়েছে বাস্তব রূপ। যেমন - মি. তিসুকাহারা কেইসুকি যার বয়স এখন ৪০ তিনি ছোটবেলায় একটি হেলিকপ্টারের মালিক হতে চাইতেন। তার এই অলীক স্বপ্ন এতোদিন পর সফল করেছেন উড়তে সক্ষম একটি খেলনার হেলিকপ্টার কিনে। তিনি অফিস থেকে ফিরে কিংবা বন্ধের দিনে এটি ঘরে উড়িয়ে খেলেন।
অন্যদিকে কিছু খেলনা মূলত বয়স্কদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। গানের তালে পারফর্ম করা পুতুল রোবটগুলো মধ্যবয়সীদের কাছে খুবই প্রিয়। তারা এগুলো ঘরে সাজিয়ে রাখতে পছন্দ করেন।
কিন্তু বড়রা এখন শুধু খেলনা কিনেই ক্ষান্ত হচ্ছেন না, তারা খেলনার হসপিটালও খুলছেন। অনেক ক্ষেত্রে টয় হসপিটালগুলো চালাচ্ছেন কর্মজীবন থেকে অবসরপ্রাপ্তরা, যাদের হাতে মেলা সময়। কিছু চালাচ্ছেন মেরামতে পারদর্শী ইঞ্জিনিয়াররা। এসব খেলনার ডক্টর ঘরে বসে অথবা কোনো পাবলিক জোনে বিনামূল্যে খেলনা মেরামতের সেবা দিচ্ছেন। এ বিষয়ে ৮৯ বছর বয়স্ক টয় ডক্টর ইয়াশু মাসানোরি বলেন, এটা পাজল সমাধান করার মতো - যা কাজটাকে আকর্ষণীয় করেছে। মাসানোরির মতো আরো অনেকে খেলনা মেরামতের আনন্দ আবিষ্কার করছেন এবং ক্লিনিক খুলছেন।
মূলত প্রযুক্তির কল্যাণে ও সময়ের পরিবর্তনে বাচ্চাদের হৃদয় জয় করা খেলনা এখন সব প্রজন্মের কাছে আবেদন সৃষ্টি করছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৫:২২