কাল বিকেলে প্রার্থনা মন্দিরে যাওয়ার পথে আনন্দময়ী, বিকেলের হলুদ আলোয় ইউনুভার্সিটির ল্যান্ডস্কেপটা দারুন দেখতে লাগছিলো। মনে হচ্ছিল সবুজে ঢাকা চারিদিকের সব পাতা, সব গাছের ডাল, সব আকাশের মেঘেরা যেন কি বলতে চাইছে। আফসোস আমাদের সেই কান নেই আনন্দময়ী যে আমরা কান পেতে শুনতে পারি ওদের কথা। আমি অনেকক্ষন কান পেতে বসে রইলাম।
জগতের আনন্দযজ্ঞে আমার নিমন্ত্রন
ধন্য হলো ধন্য হলো মানব জীবন।
প্রার্থনা থেকে ফিরে এসে বারান্দার যে জায়গাটা থেকে অনেকটা দূর দেখা যায় সেখানটায় বসে গিয়েছিলাম। কার্নিশের উপরে একা, আনমনেই। সামনে একটা নাম না জানা অনেক বড় গাছ তার সব ডালাপালা দিয়ে কেমন সুন্দর মাটিকে আকড়ে ধরেছে। ওদের টান দেখে ঈষর্া হতে হতেও মিলিয়ে গেল। বেশতো আছে ওরা।
উপরে বাহু ছড়িয়ে দিয়ে গাছের ডালগুলো অসীমে কি যেন জানানোর আকুতি নিয়ে স্থির। শুধু পুরোটা গাছজুড়ে অদ্ভুত সুন্দর সবুজ রঙের হাজার হাজার পাতারা জগতের আনন্দযজ্ঞের পয়গম্ব নিয়ে নেচেই চলছিলো বিকেলের দমকা বাতাসে। একটু দূরেই সমুদ্রতট।
ওই মাটি আকড়ে ধরা শিকড়ের কাছে হঠাৎ দুটো পাখি এসে বসলো। এরপরে গাছের ডালে দূর থেকে উড়ে এসে আরেকটা। কি মজার জীবন তাই না ওদের? খেতে চাইলে খাও, সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে ঘুমাও, আবার ভোরে উঠে আকাশে ডানা মেলে দাও। মিলনের মৌসুমে মিলন, বিদায়ের মৌসুমে চলে যাওয়া।
তখন হঠাৎ মনে হলো আনন্দময়ী, আচ্ছা পাখিরা মরে যাওয়ার পরে ওদের মৃতদেহ কোথায় লুকায়? কখনো কাকের একটা দুটো মৃতদেহ ছাড়া পাখিদের মৃতদেহ চোখেই পড়ে না। ওরা এত সযত্নে, এত সাধের মৃতু্যকে কোন রহস্যে লুকায় বলতে পারো?
আনন্দময়ী তুমি ভালো আছো তো? এই দেখো তো, তোমায় চিঠি লিখতে লিখতে এখন দিব্যি মনটা ভালো হয়ে গেলো। বাকিটুকু একটা হিমশীতল কফিতে ঠোট ডুবিয়ে চুমুক দিলেই চাঙ্গা!
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০০৭ রাত ২:২৪