গতকাল নতুন ভাবে শুরু হওয়া একুশে চ্যানেলে অনেক আগের একটা অনুষ্ঠান পূন:প্রচারিত হতে দেখলাম। একটা পর্যায়ে অনুষ্ঠানের সঞ্চালিকা প্রশ্নের উত্থাপন করলেন "কেমন বউ পছন্দ..." । মতামতগুলো দেখানো হলো বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের। রিকশাওয়ালা দিয়ে শুরু হলো এবং শেষ হলো যাকে দিয়ে তিনি আমার বান্ধবীর হাসবেন্ড।
সবারই নিজস্ব চিন্তা ভাবনা থাকে, কিন্তু উনার মন্তব্যগুলো কেন জানি মাথায় আগুন ধরিয়ে দিল। উনার বক্তব্য ছিল, বেশি শিক্ষিত মেয়ে উনি পছন্দ করেন না কারণ তারা স্বামীর মত চাকরি করতে চায়। একটু খারাপই লাগল এরকম মন্তব্য শুনে। উল্লেখ্য, এক রিকশাওয়ালা "কেমন বউ পছন্দ" এর উত্তরে বলেছিল যে মেয়েকে অবশ্যই সংসারের কাজ করতে জানতে হবে । আমার বান্ধবীর হাসবেন্ড সরাসরি এরকমভাবে না বললেও মানেটা একই দাঁড়ায় বলেই মনে হল আমার কাছে।
আমার বান্ধবী আর উনার প্রেম করেই বিয়ে। যতদুর দেখেছি উনি নিজের চেষ্টায় লেখাপড়া করেছেন। তাই ধারণা ছিল উনি খানিকটা উদার ও উৎসাহী মনোভাবাপন্ন হবেন। বর্তমানে উনি একটি টেলিকম কোম্পানীতে কর্মরত আছেন। আমার বান্ধবী মাষ্টার্স পাস করেছে। ও পড়াশুনায় মনোযোগী ছিল বরাবরই। আমি কয়েকবারই ওকে বলেছি পি.এইচ.ডি. করে ফেলতে। ওরও খুব ইচ্ছা ছিল এটাই জানতাম। একবার ওদের দু'জনকে একসাথে পেয়ে বলেছিলাম, আমার বান্ধবী সেই টেলিকম কোম্পানীতে জয়েন্ট করলেই পারে। যাই হোক, গত বছর বান্ধবীর ফুটফুটে একটি মেয়ে হয়েছে। খুবই উচ্ছ্বসিত দু'জন । আমি ভেবেছি সংসারের চাপেই হয়ত পি.এইচ.ডি কিংবা চাকরী করা হচ্ছেনা ওর। কালকে ওর হাজবেন্ড এর কথাগুলো শুনে মনে হল ব্যস্ততা নয় এটার কারন হয়তো অন্য।
সংসারে থাকলে সংসারের কাজ করতেই হবে। একটা ছেলে সংসারের পাশাপাশি যদি career সচেতেন হতে পারে তাহলে আজকের আধুনিক যুগে একটা মেয়ের বেলায় কেন সেটা প্রযোজ্য নয় ! আমাদের বাবা-মা কিংবা দাদা-দাদীরা না হয় প্রাচীন ধারনাতেই বিশ্বাসী; তাতে তেমন অবাক হবারও কারণ নেই। কিনতু বর্তমান যুগের ছেলে এবং মেয়ে উভয়েরই বোধহয় শুধু বাইরে নয় ভেতরেও আধূনিক হতে হবে।
যাই হোক, উনি মনত্দব্যগুলো অনেক আগে করেছিলেন। তখনও আমার বান্ধবীর সাথে বিয়ে হয়নি তবে দুর্দান্ত প্রেম চলছিল। আমি আশা করি বর্তমানে উনার সেই মানসিকতা আর নেই।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মার্চ, ২০০৭ সকাল ৭:৫৫