somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটু চিন্তার খবর

৩০ শে মার্চ, ২০০৭ রাত ১০:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাভাইয়ের নির্যাতনকালে পুলিশ কার নির্দেশে নিশ্চুপ হয়ে যেত?
বাগমারায় নির্যাতিতদের প্রশম্ন
শিবলী নোমান, রাজশাহী বু্যরো দৈনিক সমকাল

রাজশাহীর বাগমারায় সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলাভাই সাধারণ লোকজনকে নির্যাতন করার সময় প্রায় মোবাইল ফোনে বিশেষ ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ করতেন। পুলিশ তার কাজে বাধা দিতে গেলে তিনি তখন মোবাইলটি পুলিশ কর্মকর্তার হাতে তুলে দিতেন। পুলিশ অদৃশ্য ওই ব্যক্তির নির্দেশে বাংলাভাইয়ের কাজে বাধা না দিয়ে বরং উৎসাহ দিতেন। বাগমারায় বাংলাভাইয়ের হাতে নির্যাতিত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যদের প্রশম্ন, এই অদৃশ্য ক্ষমতাধর ব্যক্তি কে বা কারা?
2004 সালের 4 এপ্রিল খুন হন ওসমান ওরফে বাবু। বাগমারার গোয়ালকান্দি বাজারের লন্ড্রি মালিক তাছের আলীকে বাংলাভাইয়ের এক সহযোগী ডেকে নিয়ে যায়। বাংলাভাই তাকে বলেন, 'তুই সর্বহারা। তোর কাছে রিভলবার আছে, দিয়ে দে।' তাছের নিজেকে নির্দোষ বলামাত্র বাংলাভাইয়ের ক্যাডাররা হকিসদ্বিক আর লোহার রড দিয়ে প্রকাশ্যেই তাকে বেধড়ক পেটাতে থাকে। তার আর্তচিৎকারে মানুষ ছুটে আসে। পাশের ফাঁড়ি থেকে পুলিশও বেরিয়ে আসে। বাংলাভাইয়ের কাছে পুলিশ পেটানোর কারণ জানতে চাইতেই বাংলাভাই তার মোবাইল ফোনে কাকে যেন ফোন করে বলেন, '...ভাই আপনি একটু বলে দেন।' নিজে কথা বলে মোবাইলটা পুলিশের কাছে দিতেই জাদুমন্পের মতো কাজ হয়। পুলিশ বাংলাভাইকে সসল্ফ্মানে নিয়ে যায় গ্রামের ভেতর। বাংলাভাই ও তার সহযোগীরা তাছের আলীকে পেটাতে পেটাতে বিভিল্পম্ন এলাকা ঘোরান এবং বাংলাভাই পুলিশকে বলেন, 'একে ওসমান বাবু হত্যা মামলার আসামি কর।' পুলিশ তার কথামতোই কাজ করে।
তাছের আলী নিজের শরীরে এখনো বয়ে বেড়ান সেই নির্যাতনের চিহক্র। তার চোখের সামনে এখনো ভাসে সেই দৃশ্য, বাংলাভাই মোবাইল এগিয়ে দিলেন পুলিশকে, পুলিশ নিশ্চুপ হয়ে গেল। ফোনের অন্য প্রানস্নে কে ছিলেন সেই শক্তিশালী ব্যক্তি? বাংলাভাইদের ফাঁসির পরেও তো সেই পরিচয় জানতে পারেননি তাছের। এখন তিনি তা জানতে চান, সেই নেপথ্য নায়কদেরও শাস্টিস্ন চান। শুধু তাছের একা নন, বাগমারায় বাংলাভাইয়ের হাতে নির্যাতিত অনেকেই দেখেছেন তার সেই ফোন-শক্তি।
2004 সালের 17 এপ্রিল হামিরকুৎসা মাঠে ইসলামী জলসা ডেকে প্রায় দেড় শ' মানুষের নাম ঘোষণা করেন বাংলাভাই। দাবি করেন, তারা সবাই সর্বহারা। তাদের আত্দ্মসমর্পণ করার 'নির্দেশ' দেন। রমজানকেও সেই মাঠে নেওয়া হয়। রমজান নিজেকে ষড়যন্পের শিকার বলে দাবি করলে বাংলাভাইয়ের ক্যাডাররা তাকে পেটাতে পেটাতে রক্তাক্ত করে ফেলে। বাংলাভাই নিজে এ সময় মোবাইল ফোনে কথা বলে পুলিশের হাতে তা ধরিয়ে দেন।
শিকদারি গ্রামের আইসত্রিক্রম বিত্রেক্রতা নাসিরকে বাংলাভাইয়ের ক্যাডাররা নির্যাতন করে। এর একপর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে যান নাসির। পরে তাকে ভ্যানে করে নিয়ে আসা হয় শিকদারি বাজারে। জ্ঞান ফিরে নাসির 'পানি, পানি' বলে চিৎকার করলে বাংলাভাইয়ের ক্যাডাররা ভ্যান থামিয়ে চায়ের দোকান থেকে গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে জোর করে তার গলায় ঢালে। এ সময় হাতুড়ি দিয়ে তার দুই পা ও বাঁ হাত ভেঙে ফেলা হয়। এরপর বাংলাভাই নিজেই তাকে মাটিতে ফেলে জবাই করতে চান। এ সময় চলে আসে পুলিশের গাড়ি। বাগমারা থানা পুলিশের তৎকালীন দারোগা সিরাজ ও করিম হাজির হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাভাই নাসিরের বুকের ওপর থেকে উঠে মোবাইল ফোন বের করেন। নিজে কথা বলে দুই দারোগার একজনকে ধরিয়ে দেন। মুহহৃর্তেই পুলিশের ব্যবহার বদলে গেল। সামনে দাঁড়ানো গদগদ পুলিশ সদস্যদের বাংলাভাই বলেন নাসিরকে ওসমান হত্যার আসামি করতে। 'নির্দেশ' পালিত হলো। নাসির বলেন, 'ওইদিনের পর থেকে বাংলাভাইকে যতটা না ভয়ঙ্কর মনে হয়েছে, তার চেয়েও বেশি ভয়ঙ্কর মনে হয়েছে সেই মোবাইল ফোনের নির্দেশদাতাকে।
2004 সালের 5 এপ্রিল তাহেরপুর হাট থেকে বাংলাভাই দলবল নিয়ে চলে যান এলাকার সংখ্যালঘু পল্ক্নী জেলেপাড়ায়। নন্দ কুমারকে লোহার রড ও হকিসদ্বিক দিয়ে নির্মমভাবে পেটানো হয়। এরপর পাবনাপাড়া মহল্ক্নার কল্যাণ কুমার দাশ, ঝ-ু কুমার দাশকেও পেটানো হয় একই কায়দায়। আহত অবস্ট্থায় ঝ-ুকে ধরে এনে তাহেরপুর পুলিশ ফাঁড়িতে দিয়ে আসে বাংলাভাই বাহিনীর লোকজন। এ সময় তারা পুলিশের হাতে একটি মোবাইল ফোন ধরিয়ে দেয়। কিছুক্ষণ কথা বলে কাজ হয়। ওসমান হত্যা মামলার আসামি হয়ে যান ঝ-ু।
2004 সালের 31 জুন বাগমারার শিকদারি গ্রামের কৃষক ইয়াসিনকে প্রকাশ্য জলসায় পিটিয়ে মারেন বাংলাভাই ও তার ক্যাডার বাহিনী। ইয়াসিনের লাশ নীরবে বাড়ি পেঁৗছে দেয় পুলিশ। এ ঘটনার পর ইয়াসিনের ছোট ভাই ইব্রাহিম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করতে গেলে বাগমারার তৎকালীন ওসি রুহুল আমিন তার মামলা নিতে চাননি। ইব্রাহিম জানান, ওসি বলেছিলেন এ মামলা নিলে তার চাকরিই থাকবে না।

সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রজাতির শেষ জীবিত প্রাণ !

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫১



বিবিসির একটা খবর চোখে এল সেদিন । উত্তরাঞ্চলীয় সাদা গন্ডার প্রজাতির শেষ পুরুষ গন্ডারটি মারা গেছে । তার নাম ছিল সুদান । মৃত্যুর সময় তার বয়স ৪৫। বিবিসির সংবাদটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মধ্যে সে একজন ।।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯



আপনারা কতজন Umma Kulsum Popi চেনেন, আমি ঠিক জানি না। আমার পর্যবেক্ষণ মতে, বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের একজন হলেন উনি। যদি বলি দেশের সেরা পাঁচজন কনটেন্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পোষ্টে যদি ক্রমাগতভাবে ০ কিংবা ২/১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, বুঝবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



আপনার পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০ কিংবা ১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, তখন খোঁজ নিলে দেখবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

কোন বিষয়ের উপর অনেক মানসম্পন্ন পোষ্ট লিখলেও সামুতে আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×