somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জিপিএ ৪.০.৩

২৯ শে মার্চ, ২০০৭ রাত ৮:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঢাকায় ফেরার সপ্তাহখানেক পরে ফোন পেলাম মোবাইলে। ধরতেই দেখি ছোকরা। প্রশ্ন করলাম কি অবস্থা। বলে কাজ হইসে। কি কাজ জিজ্ঞেস করতে বলল যে, সারদের বলেটলে রাজী করানো গেছে, তবে বলল স্যারেরা শাখামৃগের হটাৎ ভূমিঅবতরণের ইচ্ছাপ্রকাশে কিছুটা সন্দেহের চোখে এখনো দেখছেন। বলল যে, লম্বা গ্যাপের জন্য এখন পড়া সামলাতে গেলে এক দুইটা বিষয়ে প্রাইভেট পড়তে হবে, আর কলেজের বেতন তো আছেই। আবার ঝাড়ি দিলাম, যে; হাবিজাবি বাদ দিয়ে বল যে সব মিলিয়ে কত খরচ হবে। সব মিলিয়ে যে অঙ্কটা বলল সেটা আহামরি বিশাল কিছু না, আবার একদম পিচ্চিও না। কনভার্ট করলে, লন্ডনে আমার ছয়মাসের ট্রাভেল খরচের সমান।

ভেবে টেবে বললাম, যা আছে কপালে... তুই দৌড়া আমি আছি পেছনে। প্রতি দুই-তিন মাসে তোর খর্চা আমি ব্যাবস্থা করব মাগার ফেল করলে খবর। সেও দেখি লক্ষী ছেলের মত সব টার্মস এন্ড কন্ডিশন মেনে নিল। দেশে থকতে মানিব্যাগ খালি করে আমি কয়েক মাসের সাপ্লাই আম্মার হাতে দিয়ে এসেছিলাম আর বাকিটা আস্তেধীরে পাঠাব বলে চলে এসেছি।

গত এক বছরে আমকে দুই তিনবার পাঠাতে হয়েছে কিছু ঐ বাবদ। পাঠিয়েছি আর ভেবেছি, আহাম্মকটা আরেকবার না ডুবালেই হয়। কদিন আগে দেশে ফোন করেছিলাম। কথায় কথায় আম্মা বলল যে, তোমার জন্য খবর আছে। জিজ্ঞেস করলাম কি? বলে ওর বড়ভাই ঢাকায় আসছে, ওর এখন এত টাকা লাগবে। বললাম ঠিক আছে। বলল আরেকটা খবর আছে। জিজ্ঞেস করলাম কি? বলল, টেস্ট পরীক্ষা হয়ে গেছে, ও সবগুলোতে পাশ করেছে, জিপিএ ৪.০ নিয়ে।

খবরটা শুনে হৃদপিন্ডটা ছোটখাটো একটা লাফ দিয়ে গলার কাছাকাছি চলে আসল। অন্য দু-একটা টুকটাক কথা বলে ফোন রেখে দিলাম। মনে মনে ভাবলাম, আমাদের বর্তমানে এই অবস্থায় আসার পিছনে আমাদের মধ্যবিত্ত পরিবারে থেকে আব্বা আম্মা কি পরিমাণে যে রিসোর্স ইনভেস্ট করেছেন অসংখ্য ছেলেমেয়ের কপালে সেটা জুটেনি। তাদের অনেকেই হয়ত অনেক যোগ্যতর আরো প্রতিভাবান ছিল, প্রয়োজনীয় পরিচর্যা না পেয়ে ফুল ফুটাতে পারেনি।

এই বছর ও ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দিবে। বদমায়েশী, দুই নম্বরী যেভাবেই হোক যদি উৎরে যেতে পারে তাহলে আমার জন্য আমি বলব এটা একটা মাইলস্টোন। কেন লিখলাম এতগুলো কথা? প্রোজেক্ট ওয়ান আলোর মুখ দেখাতে মনের কোনা দিয়ে হালকা হালকা দুষ্টুমি উঁকি মারছে। সামনে আগিয়ে নেয়ার জন্য আমি দুই ধরণের প্রস্তাব রাখতে পারি।

একটা হল, স্প্যাম টাইপের, "যাহারা এই বার্তা পড়িলেন তাহাদের ওপর দায়িত্ব বর্তাইল যে, নিজে উপার্জনক্ষম হইলে আগামী এক বছরের মধ্যে কমপক্ষে একজন দরিদ্র ছাত্রের শিক্ষার খরচের ভার গ্রহণ করিবেন, অথবা কমপক্ষে শিক্ষার জন্য সহযোগিতা করিবেন।"


দ্বিতীয় প্রস্তাব হল, বাই চান্স যদি ছোকরা পাশ করে যায়, তাহলে আমার মনে হয় প্রস্পেক্টিভ জনা দশেকের একটা মিনি প্রোজেক্ট নেয়া যায়। যদি তাই নেই, তাহলে আমি হয়ত ব্লগের সামনে একটা ঝুলি রাখতে পারি তাতে যে যা পারেন দুই চার পয়সা দিয়ে হেল্প করতে পারেন।

জিয়া সাহেবের সময়ে নাকি একটা স্কীম ছিল যে, পরীক্ষায় পাশ করতে হলে কমপক্ষে এক দুইজন গরীব ছাত্ররে স্বাক্ষর করতে হবে, তাতে নাকি সব বাসার কাজের ছেলেরা হটাৎ করে স্বাক্ষর হওয়া শুরু করেছিল। আশা করি তার চেয়ে ভাল কিছু করা যাবে।

পিছে ৪.০.১ আর ৪.০.২ আছে

বাই দা ওয়ে গল্প শেষ এখানে
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মার্চ, ২০০৭ রাত ৮:২৯
১০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রোড জ্যাম ইন ভিয়েতনাম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৭



আমার ধারনা ছিল জটিল জ্যাম শুধু বাংলাদেশেই লাগে । কিন্তু আমার ধারনা ভুল ছিল । ভিয়েতনামে এরকম জটিলতর জ্যাম নিত্য দিনের ঘটনা । ছবিটি খেয়াল করলে দেখবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×