আমার নানাবাড়ীতে (ভিলেজ ভার্সন) আমি কয়বার গেছি তা হাতে গুণে ফেলা যাবে। মনে হয় এক হাতেই হয়ে যাবে। তাও আজকাল চেষ্টা করি এক দুবার ঘুরে আসতে। গতবার যখন দেশে গেলাম তখন তো ঘুরাঘুরির মধ্যেই আছি। একসময় ঘুরতে ঘুরতে আরেকদিকে গেলাম। সেখানে বড় মসজিদ কমপ্লেক্সের কাজ চলছে। আমি আরেকদিন সেটার ওপর লিখব। গিয়ে দেখি ফাউন্ডেশনের কাজ হবে তার জন্য প্রিপারেশন চলছে। এক সাইডে দেখি এক ছোকরা কোপা শামসু স্টাইলে মাটি কোপাচ্ছে। হটাৎ খেয়াল হল, এই ছোকরারে তো আমি চিনি। মনে পড়ল ঐ পোলার সাথে আমার অনেক কথা হয়েছিল গত বছর যখন ও মেট্রিক পরীক্ষা দিয়ে শেষ করেছে। আমার হিসাবে তো এতোদিনে কলেজের ফার্স্ট ইয়ার শেষের পথে থাকার কথা। কলেজে ফিল্ডিং মারা বাদ দিয়ে কোপাকুপি করে, ঘটনা কি?
জোহর সারতে হল পাশে মাদ্রাসার একটা রুমে অস্থায়ী মসজিদে। নামাজের পর ধরলাম ছোকরাকে। অনেক লম্বা সময় নিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কথা বলার পর খবর মোটামোটি বের হয়ে আসল। বাবা মারা গেছেন, বড় দুই ভাইয়ের সাথে থাকে। বড় ভাই সাউদীতে ব্যাবসা করে। ফলে পরিবারের ফাইন্যান্সিয়াল সোর্স বলতে বড়ভাইই আর তাই তার কথাই বাসায় ফাইনাল। মেট্রিকে মোটামুটি রেজাল্ট করে কলেজে ঢুকেছিল, টুকটাক ফাঁকিঝুকির সাথে পড়াশোনাও চলছিল, এর মধ্যে হুকুম আসল বড়ভাইয়ের, যে বেশী পড়াশোনা করে কি হবে? কাজকাম কিছু শিখলে তো কাজে আসবে। হুকুম হল ইলেক্ট্রিশিয়ানের কাজ শেখো, সাউদীতে ডিমান্ড আছে। সেজন্য গত তিন-চার মাস কাটিয়ে এসেছে সিলেটে এক কন্ট্রাক্টরের সাথে প্রজেক্টে কাজ করার জন্য। এখন প্রজেক্ট শেষ, এলাকায় এখানে কাজ হচ্ছে তাই এখানেই গতর খাটাচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, বিদেশ কবে যাওয়া হবে? বলে হয়ত আগামী বছর অথবা তার পর। মনে হল হাতের মুঠো থেকে কি যেন একটা বের হয়ে যাচ্ছে। রাতের বেলা নিজের সাথে যুদ্ধ করলাম অনেকখন। কি করা যায়, কি না করা যায়, কি করিলে কি হইবে, কি না করিলে কি হইবে না, ইত্যাদি ইত্যাদি...
৪.০.২ এবং ৪.০.৩ আসছেঃ)
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০০৭ সকাল ৭:৪৭