প্রায় ৬৫ বিলিয়ন ডলারের মালিক ও মাইক্রোসফট করপোরেশনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা উইলিয়াম হেনরি বিল গেটস। তাঁর সম্পদের পরিমাণ ঠিক কত, তা বোঝার জন্য ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ একটি হিসাব দিয়েছে। কেনিয়ার সমান দুটি দেশ, ত্রিনিদাদের সমান তিনটি ও ডজনখানেক মন্টেনিগ্রোর যে পরিমাণ সম্পদ আছে, তার সমপরিমাণ হলো বিল গেটসের সঞ্চিত অর্থ। ‘ফোবর্স’ ম্যাগাজিনের সম্পদশালীদের তালিকায় প্রায় দশক ধরে শীর্ষে থাকা বিল গেটস এখন বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ধনী। কিন্তু এ সম্পদকে তিনি আয়েশি জীবনযাপনে ব্যয় করতে নারাজ। তাঁর চেয়ে কম ভাগ্যবান মানুষদের জন্য এ অর্থকে খরচ করতে চান তিনি।
‘টেলিগ্রাফ’ জানায়, বিল গেটস এখন পর্যন্ত তাঁর সম্পদের ২৮ বিলিয়ন ডলার ইতিমধ্যে বিলিয়ে দিয়েছেন। এখন তিনি পোলিও দূর করার সংকল্প করছেন। তিনি বলেন, ‘এখন আমি নিশ্চিতভাবেই খাবার ও কাপড় কেনা ছাড়াও অর্থ খরচ করার উপায় খুঁজে পেয়েছি।’
বিল গেটস বলেন, ‘একটা নির্দিষ্ট পরিমাণের পর বাকি অর্থের কোনো প্রয়োজন নেই আমার। অতিরিক্ত অংশটি কাজে লাগবে একটি প্রতিষ্ঠান দাঁড় করাতে এবং বিশ্বের দরিদ্রতম মানুষদের উপকারে।’
বিল ও তাঁর স্ত্রী মেলিন্ডা তাঁদের দাতব্য প্রতিষ্ঠান ‘বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের’ মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন প্রকল্পে এ পর্যন্ত ২৮ বিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছেন। এর মধ্যে শুধু বিশ্বের স্বাস্থ্য পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য দেওয়া হয়েছে আট বিলিয়ন ডলারের বেশি।
বিল গেটস ‘টেলিগ্রাফ’কে বলেন, ‘বিশ্বের দরিদ্রতম মানুষগুলোকে সাহায্যের জন্য আমরা টিকাদান কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। আপনি একটি রোগকে ধারণ করার পর সেটি থেকে মুক্তিও পেতে পারেন। পোলিও কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আমরা এমনটাই করছি।’
‘পোলিও এক বিশেষ রোগ। এটিকে একবার নির্মূল করতে পারলে, পরে এর পেছনে আর কোনো অর্থ খরচ করার প্রয়োজন হবে না। ভবিষ্যতের জন্য এটা একটা সুখের বিষয়।’
নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে এ রোগটি এখনো মহামারি পর্যায়ের।
কিন্তু একটি বাধা এখনো আছে। ইসলামি গোষ্ঠীগুলো মনে করে, পোলিও টিকাদান কর্মসূচির মূল কাজ হলো তাঁদের নির্বংশ করা এবং পশ্চিমা ধারণার বিস্তার ঘটানো।
বিল গেটস বলেন, ‘এগুলো আমাদের পথরোধ করতে পারবে না। এর অর্থ হলো, পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে আমাদের আলোচনায় বসতে হবে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দেশটি কী পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা দেখতে হবে। যেসব নারী ঈশ্বরের দেখানো পথ অনুযায়ী কাজ করছে, তাদের রক্ষায় কী করা হচ্ছে এবং শিশুদের টিকা দেওয়ার জন্য কী ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, তা পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
সূত্র: প্রথম আলো।