somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টেস্টিং কেস

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৭ রাত ২:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কেমন যেন উসখুস করছে সজল। একবার সোফায় বসছে_ কি যেন ভাবছে_ আবার পায়চারী করছে। পাশেই দীর্ঘক্ষণ ধরে মোবাইল ফোনে ম্যারাথন আলাপচারিতা চালাচ্ছে ওর খালাতো বোন রুমকি। রুমকির রসিয়ে রসিয়ে কথা বলা দেখে সজলের পিত্তিটা একটু একটু করে জ্বলছিল। সজলের হাবভাব দেখে রুমকি ফোন রেখে বলল, কিরে কিছু বলবি?
সজল খুব আগ্রহভরে তার কাছে এসে বসল। তারপর বিজ্ঞের বলল, ব্যাপারটা হলো যে........ব্যাপারটা আর বলা হলো না সজলের এরই মধ্যে রুমকির মোবাইলটা " দুনিয়া কা মজা লে লো" বলে বেজে উঠল। ঢঙ্গিয়ে ভঙ্গিয়ে কথা চলল মাত্র আধা ঘন্টা। এরপর রুমকি বলল- হ্যাঁ বল, কি যেন বলছিলি?
সজল হাত কচলিয়ে ইনিয়ে বিনিয়ে বলল, তোদের এখানে বেড়াতে এসে ভালো লাগছে না। সব কিছুতেই কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা লাগছে।
_কেন? কিছুক্ষণ আগে আসা একটা এসএমএস খুব গুরুত্বসহকারে পড়তে পড়তে বলল রুমকি।
_ কেন আবার। তোকে একটা কথা বলি?
_দেখ সজল, হ্যাঙলামি না করে তাড়াতাড়ি বলে ফেল তো। আমার একটা জরুরি ফোন আসবে।
সজল এবার ঘাড়টা এদিক ওদিক দুবার ঘুড়িয়ে নিল। তারপর সোজাসুজি বলল, প্রেম করবি আমার সাথে?
সজলের কথাটা শোনার পর রুমকির মধ্যে কোন ভাবান্তর পরিলক্ষিত হলো না। এমন ভাব দেখে সজল বলল, কি হলো?
_তোর সাথে প্রেম করব? সজল তুই আমাকে হাসালি।
_ এতে হাসির কি হলো, শুনি।
_না এটা হাসির কোন বিষয় নয়। তবে কান্না করার মতও কোন বিষয় না। বুঝলি?
রুমকির উত্তরে সজল কিছুটা হতভম্ব হয়ে রহস্যমাখা কন্ঠে বলল, কি রে রুমকি তুই তো এমন ছিলি না। আমার যতদূর মনে পড়ে তোর তো না বলার অভ্যেস ছিল না।
_ আরে বাবা সেই ক্লাস সেভেন্ থেকে শুরু করেছি। ওসব করতে করতে একেবারে হাঁপিয়ে উঠেছি।
সজল এবার মিনতির সুরে বলল, আর একটা প্রেম করেই দেখ না। আমি বললাম তোর ভালো লাগবে।
_ কার সাথে?
_কেন আমার সাথে।
রুমকি কাকে যেন একটা মিস কল দিয়ে বলল, নারে তুই কিছু মনে করিস না। তোকে দেখলে না আমার কেমন জানি বমি বমি লাগে।
_আমারও তো তোকে দেখলে বমি বমি লাগতো। কিন্তু বড়ই খরার মধ্যে আছি। যাকে বলে পেমের খরা। ভালবাসার খরা। উপায় কিছু দেখছি না। কি করব তুই-ই বল?
সজলের একথা শুনে রুমকি তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে বলল, হারামী জানোয়ার তুই গলায় দড়ি দে।
রুমকির গালি হজম করে সজল কিছুটা অভিমানের সাথে বলল, তোদের এখানে আট দশ দিনের জন্য এসেছি। তুই এরকম করবি জানতাম না।
_ তো কি রকম করব?
_রুমকি তুই আমার সাথে টেস্টিং কেস হিসেবে প্রেমটা শুরু করতে পারিস। যদি ভালো না লাগে তো বাদ দিবি। তখন আমি আমার রাস্তা দেখব।
_ ও... তাই না। আর ভালো গেলে গেলে?
কাজ হবে ভেবে সজল একটু নড়েচড়ে রুমকির গা ঘেঁষে বসে বলল, ভালো লাগলে তোদের এখানে যে আট দশ দিন আছি_তার পুরোটা সময়ই আমার সাথে প্রেম করতে পারিস।
_ কেন? আট দশ দিন কেন? রুমকি বড় বড় চোখ করে বলল।
_কারণ আট দশ দিন পর বাসায় ফিরে আমার অনেক কাজ আছে। বগুড়া থেকে চুমকি, রাজশাহী থেকে রেশমী আমার বাসায় আসবে। এছাড়া ময়না, টিয়া, সোহাগী, আল্লাদীকেও অনেক দিন ধরে এ্যাপোয়েন্ট দিয়ে রেখেছি।
রুমকি কি যেন ভেবে বলল, কিন্তু..........
_ কিন্তু কি? এই আট দশ দিনের বেশি সময় চাও? তোমার পেছনে খরচ করার মত এত দীর্ঘ সময় আমার হাতে নেই।
রুমকি কিছুটা বিরক্ত হয়ে বলল, আরে আমার কথাটা আগে তো শোন। শুধু শুধু প্যাঁচ-প্যাঁচ করছ কেন?
_হ্যাঁ হ্যাঁ বল, শুনি।
_আমি বলছিলাম যে টেস্টিং কেস হিসেবে তোমার সাথে প্রেম শুরু করতে পারি। কিন্তু আমার ভালো লাগলেও কোনক্রমেই আট-দশ দিন প্রেম চালাতে পারব না।
সজল একটু ভরকে গিয়ে থতমত কন্ঠে বলল, কেন, কেন?
রুমকি ঠোটে লিপস্টিক লাগাতে লাগাতে বলল, তিন দিনের বেশি কোন ছেলের সাথে প্রেম করতে আমার মোটেই ভাল লাগে না।
রুমকির উত্তর শুনে সজলের কপালে চিন্তার সূক্ষ রেখা ফুটে উঠলো। সে মাথার চুলে বিচুলি কেটে গম্ভীরভাবে বলল, সিরিয়াস কেস। এ সমস্যাটা তো আমারও। এরই মধ্যে রুমকির মোবাইল ফোনে আবারো " দুনিয়া কো মজা লে লো " রিংটোন বেজে উঠল।####
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মাটির কাছে যেতেই..

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

মাটির কাছে
যেতেই..


ছবি কৃতজ্ঞতাঃ https://pixabay.com/

ঠিক যেন
খা খা রোদ্দুর চারদিকে
চৈত্রের দাবদাহ দাবানলে
জ্বলে জ্বলে অঙ্গার ছাই ভস্ম
গোটা প্রান্তর
বন্ধ স্তব্ধ
পাখিদের আনাগোনাও

স্বপ্নবোনা মন আজ
উদাস মরুভূমি
মরা নদীর মত
স্রোতহীন নিস্তেজ-
আজ আর স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাকা ভাংতি করার মেশিন দরকার

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:১০

চলুন আজকে একটা সমস্যার কথা বলি৷ একটা সময় মানুষের মধ্যে আন্তরিকতা ছিল৷ চাইলেই টাকা ভাংতি পাওয়া যেতো৷ এখন কেউ টাকা ভাংতি দিতে চায়না৷ কারো হাতে অনেক খুচরা টাকা দেখছেন৷ তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেলা ব‌য়ে যায়

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩০


সূর্যটা বল‌ছে সকাল
অথছ আমার সন্ধ্যা
টের পেলামনা ক‌বে কখন
ফু‌টে‌ছে রজনীগন্ধ্যা।

বাতা‌সে ক‌বে মি‌লি‌য়ে গে‌ছে
গোলাপ গোলাপ গন্ধ
ছু‌টে‌ছি কেবল ছু‌টে‌ছি কোথায়?
পথ হা‌রি‌য়ে অন্ধ।

সূর্যটা কাল উঠ‌বে আবার
আবা‌রো হ‌বে সকাল
পাকা চু‌ল ধবল সকলি
দেখ‌ছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পর্ণআসক্ত সেকুলার ঢাবি অধ্যাপকের কি আর হিজাব পছন্দ হবে!

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৩ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:২৭



ইন্দোনেশিয়ায় জাকার্তায় অনুষ্ঠিত একটা প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশি নারীদের একটা রোবোটিক্স টিম। এই খবর শেয়ার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপিকা। সেখানে কমেন্ট করে বসেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ২৩ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:১৪


কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়
আমার বাবা-কাকারা সর্বমোট সাত ভাই, আর ফুফু দুইজন। সবমিলিয়ে নয়জন। একজন নাকি জন্মের পর মারা গিয়েছেন। এ কথা বলাই বাহুল্য যে, আমার পিতামহ কামেল লোক ছিলেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×