বইমেলায় যাই না বহুবছর। বইমেলার সাথে একটা তিক্ত স্মৃতিও লেপটে আছে বর্ষার তক্ষকের মতো, মাঝে মাঝে সেটা ডেকে ওঠে ফাল্গুনের শুরুতে। তাছাড়া বইমেলায় গিয়ে কেনার মতো বই পাই না। বই কেনার ব্যাপারে আমি বরাবরই কৃপণ, আমি শুধু পড়ি।
তাছাড়া বইমেলায় না যাওয়ার পেছনে অজুহাত হিসেবে আমি আরো দাঁড় করিয়েছি দীর্ঘ কিউ এবং ধূলোকে। কোন কিছুর জন্য লাইন ধরে ধরে আমি ক্লান্ত, বইমেলার জন্য লাইন ধরতে আমি আরো নারাজ। আর ধূলা খাওয়ার বয়সও আমার পেরিয়ে গেছে বলেই ধারণা পালি মনে মনে। আমার চোখে ধূলা দিয়ে চারপাশে লাখ লাখ লোক গিজগিজ করবে ব্যাপারটা পছন্দ করে উঠতে পারি না।
তাছাড়া বইমেলায় আরো যাই না সময়টার কথা ভেবে। বসন্ত। চারিদিকে সেইরকম ব্যাপারস্যাপার। ফুল ফোটে, বাঁশি বাজে, পাখি গায়। মৃদুমন্দ সমীরণও বয়। এই আবহাওয়ায় কোন বালিকার সাথে নিভৃতে কামড়াকামড়ি করাই শ্রেয়তর। বইমেলায় গিয়ে ভিড়ামোদী জনতার অত্যাচার সহ্য করার কী দরকার।
তাছাড়া বইমেলায় না যাওয়ার আরো একটা কারণ হচ্ছে ব্লগ। বইমেলায় না গিয়ে বসে বসে ব্লগ পড়ি। পুরনো, নতুন লেখা, সব। সামহোয়্যার ইনকে আরেকবার ধন্যবাদ দিই, বইমেলায় না যাওয়ার পেছনে একটা অজুহাত আমাকে যোগানোর জন্য।
তবে মাঝে মাঝে ভাবি, একটু ঘুরে আসি। তখন আবার সেই অনেক পুরনো তিক্ত স্মৃতিই ডেকে ওঠে অদৃশ্য সরব তক্ষকের মতো। আমি আবারও অজুহাতগুলোকে টেনে বার করি নিজেকে আড়াল করার জন্য।
এমন আমার প্রাপ্য ছিল না তো।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০