somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অ্যানেকডট 6 ।। জোনাথন সুইফট (1667-1745)-এর বিনম্র প্রস্তাব

২৭ শে জানুয়ারি, ২০০৭ ভোর ৫:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জোনাথন সুইফট-এর বিনম্র প্রস্তাব

[ইটালিক] গালিভার ট্রাভেলস [/ইটালিক] (1727)-এর লেখক জোনাথন সুইফট-এর জন্মের আগেই হের বাপ মইরা গেছিলেন। ফলে সুইফট না-খাইয়া না-পইরা না-থাইকা বড় হইতে থাকেন। নিশ্চিত বাসস্থানের অভাব তারে নিরাপত্তাহীন একটা লাইফ উপহার দিছিল। অবশ্য বাপ নাইলে মায়ের দিককার আংকেলরা তারে খানিক দেখাশোনা করছিলেন। ওনারা পড়ালেখার খরচটা দিতেন। ফলে ট্রিনিটি কলেজ শিক্ষিত হইতে পারছিলেন সুইফট। এবং তিনি খারাপ ছাত্র আছিলেন। কলেজের বিশেষ অনুকম্পায় 1686 সালে একটা ডিগ্রিও শেষ পর্যন্ত পাইছিলেন। 1721 সালে 54 বছর বয়সে সুইফট [ইটালিক] গালিভার ট্রাভেলস [/ইটালিক] লেখতে শুরু করেন। 1725 সালে লেখা শেষ হয়। লেখক-এর পরিচয় গোপন কইরা 60 বছর বয়সে তিনি এই বই বাইর করেন।

সুইফট স্কটগো, বাচ্চাগো আর মেয়েগো হেইট করতেন এমন প্রচারণা আছে। একবার নাকি বলছিলেন, মেয়েরা প্রজাতি হিসাবে বান্দরেরও বাড়া। [ইটালিক] গালিভার ট্রাভেলস [/ইটালিক] বাইরানের দুই বছর পরে 'একটি বিনম্র প্রস্তাবনা' (A modest proposal, 1729) নামে প্যামফ্লেট চাউর করেন তিনি। এই লেখায় সুইফটের সরল প্রস্তাব আছিল যে মহান আইরিশরা হেগো জনসংখ্যা সমস্যার আশু সমাধান হিসাবে শিশু ভক্ষণরে বিবেচনা কইরা দেখতে পারে। গরিব বাপমায়ের গরিব বাচ্চারা নিজেগোরে খাইতে দিয়া কীভাবে রাষ্ট্র ও প্যারেন্টগো দায়ভার লাঘব করতে পারে এবং একই লগে কেমনে হেরা জনগণের জন্য উপাদেয় খাদ্যবস্তুতে পরিণত হইতে পারে সেই প্রসঙ্গে ভিগোরাস বর্ণনা দেন তিনি। সুইফট তার এই শিশুভক্ষণপ্রণালী লইয়া প্রচণ্ড সমালোচনার মইধ্যে পড়েন।

33 বছর বয়সে রেক্টর হিসাবে একটা অল্প চিনা আইরিশ চার্চে জয়েন করছিলেন তিনি। ওইখানে চার্চিতরা সুইফটের উদ্ভট ভঙ্গি আর অন্য রকম চালচলনের কারণে তারে 'ম্যাড' কইয়া ডাকত। সুইফট অত্যন্ত কৃপণ আছিলেন। এবং এই কার্পণ্যের সমান্তরালে গোনাগুনতির এক বাতিকও তার তৈরি হইছিল। তার বাড়ি থিকা যে সেন্টার অফ লন্ডনে পৌঁছাইতে 5,748 কদম লাগে এইটা সুইফট চিনাশোনা লোকজনরে জানাইছিলেন। অপরিচিত লোকগো লগে তিনি অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করতেন।

সুইফট অনাগত বার্ধক্যরে ভয় পাইতেন। তিনি তার আসন্ন অসুস্থতা ও বুদ্ধিভ্রংশরে দিব্যদর্শন করতে পারছিলেন। সুইফটেরও বন্ধু আছিল। এই রকম একজনরে তিনি বলছিলেন, 'আমি মারা যামু গাছের মত কইরা, আমার মউত শুরু হইব আমার মাথার সাইড থিকা'। শেষ বয়সে বুদ্ধি-বিবেচনা হারায় ফেলছিলেন তিনি। ব্যায়াম আর ডায়েটিং-এ অতি আসক্তি দেখা দিছিল। আর যখন খাইতেন ঘরের মইধ্যে হাঁটতে হাঁটতে খাইতে থাকতেন।

87 বছর বয়সে চূড়ান্ত বিকল হইয়া যাওনের আগে পাবলিকের কাছ থিকা পয়সা লইয়া তার বাড়ির চাকর তারে পাবলিকের কাছে শো করতো। 1745 সালে তিনি ডেড হন।

জনাথন সুইফট তার সমাধির এপিটাফে লেইখা গেছেন : 'জোনাথন সুইফটের মরদেহ; পবিত্র ধর্মতত্ত্বের ডক্টর, ক্যাথেড্রাল চার্চের ডিন এইখানে পইড়া আছেন। এইখানে চূড়ান্ত অবমাননা তার হৃদয় আর ভাইঙ্গা দিব না। যাও ট্রাভেলার, যদি পারো এমন একজনের ভঙ্গি ধরো যে তার সমস্ত শক্তি খতম কইরা দিছে স্বাধীনতা আয়ত্ত করতে করতে।'

ছবি : ট্রিনিটি কলেজে তরুণ সুইফট, A portrait of Jonathan Swift from his 1735 Works
লিংক : !@!14694 = http://art-bin.com/art/omodest.html
লেখাটা শুদ্ধ নাগরিক 'ডায়ালেক্টে' যায়যায়দিন পত্রিকার 21/9/6 সংখ্যায় ছাপা হইছিল।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জানুয়ারি, ২০০৭ সকাল ৭:২৫
১৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্যামুয়েল ব্যাকেট এর ‘এন্ডগেম’ | Endgame By Samuel Beckett নিয়ে বাংলা ভাষায় আলোচনা

লিখেছেন জাহিদ অনিক, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৮



এন্ডগেম/ইন্ডগেইম/এন্ডগেইম- যে নামেই ডাকা হোক না কেনও, মূলত একটাই নাটক স্যামুয়েল ব্যাকেটের Endgame. একদম আক্ষরিক অনুবাদ করলে বাংলা অর্থ হয়- শেষ খেলা। এটি একটা এক অঙ্কের নাটক; অর্থাৎ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রায় ১০ বছর পর হাতে নিলাম কলম

লিখেছেন হিমচরি, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১

জুলাই ২০১৪ সালে লাস্ট ব্লগ লিখেছিলাম!
প্রায় ১০ বছর পর আজ আপনাদের মাঝে আবার যোগ দিলাম। খুব মিস করেছি, এই সামুকে!! ইতিমধ্যে অনেক চড়াই উৎরায় পার হয়েছে! আশা করি, সামুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যাঙ দমনের নেপথ্যে এবং রাষ্ট্রীয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের সমন্বয়

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৭


ব্যাঙ দমনের বাংলায় একটা ইতিহাস আছে,খুবই মর্মান্তিক। বাংলাদেশে বহুজাতিক কোম্পানির কোন সার কেনা হতো না। প্রাচীন সনাতনী কৃষি পদ্ধতিতেই ভাটি বাংলা ফসল উৎপাদন করতো। পশ্চিমবঙ্গ কালক্রমে ব্রিটিশদের তথা এ অঞ্চলের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পজ থেকে প্লে : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

লিখেছেন বন্ধু শুভ, ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:১৫


.
একটা বালক সর্বদা স্বপ্ন দেখতো সুন্দর একটা পৃথিবীর। একজন মানুষের জন্য একটা পৃথিবী কতটুকু? উত্তর হচ্ছে পুরো পৃথিবী; কিন্তু যতটা জুড়ে তার সরব উপস্থিতি ততটা- নির্দিষ্ট করে বললে। তো, বালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামে ভুল থাকলে মেজাজ ঠিক থাকে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৫


বেইলি রোডে এক রেস্তোরাঁয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে একজন একটা পোস্ট দিয়েছিলেন; পোস্টের শিরোনামঃ চুরান্ত অব্যবস্থাপনার কারনে সৃষ্ট অগ্নিকান্ডকে দূর্ঘটনা বলা যায় না। ভালোভাবে দেখুন চারটা বানান ভুল। যিনি পোস্ট দিয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×