মনোযোগ দিয়ে জেমস বন্ড দেখছিলাম-You Only Live Twice. একসময় আপু এসে বলল, আরে এখনও জেমস বন্ড নিয়ে পরে আছিস। কারফিউ জারী হয়েছে জানিস কিছু। উঠে গেলাম টিভির সামনে। কিছুক্ষন খবর দেখার পর বুঝলাম আসল অবস্থা। তার কিছুক্ষন পর দেখি চ্যানেল গুলোতে খবর দেখানোও বন্ধ। কেমন একটু অস্থির লাগতে লাগল। একটা আজান আশঙ্কা মনের কোনার জমতে লাগল। চট করে পিসি অন করে ব্লগে এসে দেখি অণৃণ্য খবরটা আগেই চাউর করে দিয়েছ। সেখানকার মন্তব্যের ফলোআপগুলো পড়ে মনটা হালকা করার চেষ্টা করছিলাম। আপু বলল চাউল কিনতে হবে। সাড়ে আটটা বাজে, বাড়ির নিজেই বাজার। আমি আর ভাইয়া গিয়ে চাউল কিনে নিয়ে আসলাম। কিন্তু মনের অস্থিরতা আর অজানা শঙ্কাটা উদ্যম নৃত্য শুরু করেছে। আবার বাজারে যেতে হল টুকিটাকি কিছু জিনিস কেনার জন্য। সাড়ে নটা বাজে, দোকানদারা আলাপ করছে, "যাইগা বাড়ি গিয়া হুইয়া থাকিগা। এগারোটার পর আর বাড়িতথোন বাড়ান যাইবোনা।" আমি আমার কাজটুকু সেড়ে বাসায় চলে আসলাম। কিন্তু অস্থিরতাকে কোনভাবেই কমাতে পারছিনা। তারপর কতটা সময় পার করলাম, তারা বংলার নিউজ আর বিবিসির রেডিও শুনে আর ব্লগের পোস্ট গুলো পড়ে। নাহ আমার মনের শঙ্কার উদ্যম নৃত্যটাকে থামাতে পারলাম না। রাষ্ট্রপতির ভাষন শোনার পর আমরা সবাই যে যার মত ঘুমাতে গেলাম। আর আমি?
কারফিউ কি জিনিস জানিনা। 71' এর কথা বইতে পড়ে আর সামানত কিছু প্রামাণ্য চিত্র দেখে। জানতে পেরেছি বীভৎসতা। পরবর্তীতে আর কখনও কারফিউ জারী হয়েছে কিনা জানিনা। কিন্তু এবার বুঝলাম কারফিউ জিনিসটা মানুষের মনের অবস্থা কি করে ফেলে। বুকের মাঝের কারফিউ নামের ভীনদেশী নর্তকীর নগ্ন নৃত্যটা বড়ই অশ্লীল!! ঠেকে। এই আতঙ্ক, এই অস্থিরতা, এই ভীতি বড়ই অশ্লীল!! অশ্লীল!! অশ্লীল!! অশ্লীল!!
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০