somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এই দেশে আক্রান্ত হলেই বিদেশে 'ঠাঁই' (asylum) পাওয়া যায়, এই যে 'বাস্তবতা' তৈরি হয়ে আছে, এটা কি দেশের জন্য কোনো মতেই সুখকর? কিংবা সন্মানজনক?

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনুন্নত এবং বিপদসঙ্কুল দেশগুলিতে 'মুক্তমনা' এবং উচ্চকণ্ঠ লোকজন যখন বিপদে পড়ে তখন সুইডেন বা ইউরোপীয় কিছু দেশ তাদের 'আশ্রয়' দিতে আগ্রহী হয়ে থাকে। সাদা চোখে এতে আমরা কোনো সমস্যা দেখতে পাই না।

'অনুন্নত' বা বিপদসঙ্কুল রাষ্ট্রের ছাপ্পর গায়ে লাগিয়ে নিতে বাংলাদেশের খুব একটা কষ্ট করতে হয় নি। তসলিমা নাস্রীন সহ বেশকিছু উচ্চকণ্ঠ দেশ ছেড়ে 'পালাতে' বাধ্য হয়েছেন কিংবা নিহত হয়েছেন। যারা পালিয়ে বেঁচেছেন, তারা ঠিক কেমন জীবন যাপন করছেন, কিংবা তাদের অন্তর কতটুকু মুক্ত রয়ে গেছে তার খোঁজ কেউ কি রাখেন? আমরা দেখতে পাই তসলিমা দেশের ভেতরে থাকতে যতটুকু সাহসী ছিলেন, তার ছিটেফোঁটাও এখন তার ভেতরে হয়তো আর অবশিষ্ট নেই। ক্যাচাল বাধাবার একটা সাইকোলজিক্যাল সমস্যা তার ভেতরে এসেছে বলে বাজারে গুঞ্জন, অনেক দিন ধরেই।

বাকিদের কথা আমরা তেমন আর শুনতে পাই না। http://www.nagorikblog.com/node/8769 । এসাইলাম বা আশ্রয়প্রার্থনা নিয়ে যে কথাগুলি বলেছিলাম, তা বোধহয় আরেকধাপ বাড়িয়ে বলার সময় হয়েছে।

ইসলামিস্ট কিংবা তাদের তাঁবেদার সকল সরকার (বর্তমান কিংবা অতীত) দেশের এই উগ্র ও জঙ্গী 'ভাবমূর্তি' বজায় রাখতে খুবই আগ্রহী। তাই সরব কণ্ঠ যখন আক্রান্ত হয়, তখন বিদেশী মিডিয়া যেভাবে বিষয়টাকে অঙ্কণ করে, সরকার যেভাবে নীরব থাকে, পুলিস যেভাবে নিজের হাত, পা এবং বিশেষ অঙ্গ আপন গুহ্যদ্বারমধ্যে প্রবিষ্ট করে হাসিমুখে বসে থাকে, সকল প্রতিবাদ, সুবিচারের সকল আর্তনাদ বিফলে যেতে থাকে যেভাবে, তেমনি একটা শ্রেণীর মুখ থেকে শোনা যেতে থাকে অমোঘ সেই বাণী, " 'বেঁচে' থাকতে হলে সরব কণ্ঠকে দেশ ছেড়ে চলে যেতেই হবে!! "

কেন?

দেশ ছেড়ে চলে গিয়ে যদি বেঁচে থাকতে হবে, তাহলে দেশের ভেতরে অগনিত যতো সরব কণ্ঠ আছে, তারা কি মুখ বন্ধ করে এই পুঁতিগন্ধময় বাতাস সেবন করেই বেঁচে থাকবে? নিজেদের বুড়ো বাপের মতো তরুণ তরুণীরা কি রেখে ঢেকেই 'কথা' বলতে হবে শুধুমাত্র 'বেঁচে থাকা' নিশ্চিত করতে? আমরা কি আসলেই এতোটা ফাঁপা হবে জন্মেছি? নিজের মনের কথা খুলে বলা, বিজ্ঞাণ ও দর্শণ নিয়ে প্র্যাকটিক্যাল আলোচনা করা, বৈশ্বিক বলদারগু অর্থ্যাৎ 'ধর্ম' এবং এর অপব্যবহার নিয়ে উচ্চকণ্ঠ হওয়া কিংবা অর্থনীতির সমস্যাগুলি নিয়ে সরব হওয়া কি 'আক্রান্ত' হবার জন্য যথেষ্ট?

এই দেশে আক্রান্ত হলেই বিদেশে ঠাঁই পাওয়া যায়, এই যে 'বাস্তবতা' তৈরি হয়ে আছে, এটা কি দেশের জন্য কোনো মতেই সুখকর? কিংবা সন্মানজনক?

আমি যে দেশের নাগরিক, সে দেশটা কেন সেই আশ্রয়দানকারী ইউরোপীয় দেশটির মতো সহনশীলতা ও বাক-স্বাধীনতার চর্চা হবে না? সংবিধান যদি আমাকে এই বাক-স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেয়, তাহলে তার চর্চা করতে গিয়ে অপশক্তির হাতে আক্রান্ত হলে সেই রাষ্ট্র আমাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসবে না কেন?

কেন সেই দেশের গনমাধ্যম, সুশীল সমাজ ভেড়ুয়ার মতো লেজ লুকিয়ে গর্তে গিয়ে লুকোবে? সৌদি অর্থ এবং পাকিস্তানী ইনটেলিজেন্সের ছায়ায় গড়া ডিজিএফআই কি বসে বসে ঘাস খায়? ইসলামিস্ট মেশিনারী পুরো বিশ্বজুড়ে যে তান্ডব করছে, তার বিরূদ্ধে যুদ্ধে যদি সকলেই এক না হই, তাহলে যা আছে আমাদের তাও একদিন ছিনিয়ে নিয়ে যাবে ইসলামিস্ট এবং তাদের সুশীলগন।

আমাদের সরবতা আরো তীব্র হবে, নয়তো নিভিয়ে দেবার জন্য বিপক্ষ শক্তি সর্বদাই সচেষ্ট, কখনো প্রকাশ্যে কখনো চালাকির ভেতর দিয়ে।

এসাইলাম বা রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা তেমনই একটি চালাকি।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে দেখা - ১৩ মে

লিখেছেন জোবাইর, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:০৩

১৩ মে ২০০৬


দমননীতির অদ্ভুত কৌশল
সরকার নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দলের ওপর দমন নীতির আশ্রয় নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দ্রুত বিচার আইন ও পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে দমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×