somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পদত্যাগ এবং ভবিষ্যত

১২ ই ডিসেম্বর, ২০০৬ রাত ৩:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চার উপদেষ্টা পদত্যাগ করেছেন, তাদের পদত্যাগের কারনও তারা ব্যাখ্যা করেছেন সংবাদমাধ্যমের কাছে। দায়িত্বপালন করতে পারেন নি সঠিক ভাবে তারা কিংবা তাদের দায়িত্বপালনের মতো যোগ্য পরিবেশ সৃষ্টি হয় নি। যেহেতু কাজের পরিবেশ আর নেই তাই তাদের এই পদত্যাগকে আমি সঠিক সিদ্ধান্তই মনে করি।
যদিও সংবাদমাধ্যমের সামনে সবচেয়ে বেশী এসেছেন এই চার জন , আসিফ নজরুলের ভাষ্যমতে এরা এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে যতটা কাজ করতে পরেছেন অন্য কেউ ততটা কাজ করতে পারেন নি। আমার প্রশ্নটা তখনই মনে হলো কেনো আসিফ নজরুল সাহেব এমন একটা কথা বললেন। তার বিজ্ঞতা নিয়ে সন্দেহ নেই, তিনি বিখ্যাত শিক্ষক, তার কেনো মনে হলো েই 4 উপদেষ্টা প্রচুর দািত্ব পালন করেছেন। আসলেই কি তারা টাদের উপর ন্যাস্ত কর্মসম্পাদন করার সুযোগ পেয়েছেন। দেশের যেসব মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বে তারা ছিলেন গত 5 সপ্তাহে তারা তাদের দাপ্তরিক কাজ কতটুকু করতে পেরেছেন। নির্বাচনের সুষ্ঠ পরিবেশ তৈরি করা অবশ্যই তাদের কর্তব্যের ভেতরে পরে কিন্তু সেই নির্বাচনের সুষ্ঠ পরিবেশ তৈরির কাজে তারা কতটুকু সহযোগিতা পেয়েছেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি সাহেবের কাছে? কিংবা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে। চার দলীয় জোট প্রথম থেকেই একটা বাধার পাহাড় হয়ে আছে, তাদের একগুয়েমি মনোভাবের সাথে 14 দলীয় জোটের অনমনীয়তা। চলমান রাজনৈতিক অবিশ্বাস তাদের কর্ম সম্পাদনের পক্ষে কোনো সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে নি।
তাদের এত দৌড় ঝাঁপ আসলে কোনো সময়ই সমস্যার মুলে আঘাত করতে পারে নি। 28 তারিখ থেকেই একই রকম অবস্থা বিদ্যমান। ইয়াজুদ্দিনের অতর্কিতে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা বজায় না রেখে নিজেই প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নিয়ে নেওয়া, এবং এর পর তার নিরপেক্ষতার প্রমান দেখাতে না পারা। ইয়াজুদ্দিন এমন কিছু সমস্যা তৈরি করেছেন সজ্ঞানে সচেতন ভাবে যে সেই সময়ে উত্থাপিত নিরপেক্ষতার প্রমানক কোনো পদক্ষেপই আসলে সঠিক ভাবে গৃহীত হয় নি।
ইয়াজুদ্দিন সাহেব কেনো মিথ্যাচার করেন, তার দলীয় আদর্শ উর্ধে তুলে ধরার এমন তীব্র বাসনা কখনই 10 উপদেষ্টার সাথে তার দুরত্ব কমাতে পারে নি।
নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত কিংবা দাবি ছিলো সকল রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের সিদ্ধান্তের দাবিরসাথে ছিলো যে সব, তা হলো প্রশাসনিক কাঠামোকে ঢেলে সাজাতে হবে। কতিপয় সরকারী আমলাকে বদল করতে হবে। দলীয়সুবিধাভোগী সরকারী আমলাদের দলীয় আনুগত্য তাদের নিরপেক্ষতাকে প্রশ্ববিদ্ধ করেছে।
আজিজ কে সরানো, স ম জাকারিয়া কে সরানো একেবারে প্রাথমিক দাবিগুলো ছিলো। আজিজকে সরানোর জন্য যখন সবাই দাবি তুলছে তখন আজিজকে সরানো হলো তবে তার জায়গায় যাদের নিয়োগ দেওয়া হলো তাদের 2জন বি এন পির মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলো। সমস্যা সমাধানের চেয়ে সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তোলা হলো, পুরোনা দাবিরসাথে নতুন কিছু দাবিও তৈরি হলো। এই গোলোযোগে স ম জাকারিয়াকে সরানোরদাবিটাও থাকলো তবে এমন রাজনৈতিক ঝামেলায় স ম জাকারিয়াকে সরানোর দাবি থেকে পিছনে সরে আসে নি 14 দলীয় জোট।
ইয়াজুদ্দিন যদি সমস্যা সমাধানে আন্তরিক হতেন তাহলে স ম জাকারিয়াকে একেবারে প্রথম দিকেই বাতিল করতে পারতেন বা বরখাস্ত করতে পারতেন। এই বিতর্কিত 3 নির্বাচন কমিশনার, এক বিতর্কিত নির্বাচন কমিশন সচিবকে সরিয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিটা ইয়াজুদ্দিন প্রথমেই তার নিরপেক্ষতা প্রমানের সুযোগ হিসেবে গ্রহন করতেন।
ইয়াজুদ্দিন সাহেব নিজেও টার সিদ্ধান্ত গ্রহন করছেন না। এই 4 উপদেষ্টা দিনে রাতে টাদের উপর ন্যাস্ত মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পালন না করে 14 দল ড় 4 দলের মধ্যেদৌড়া দৌড়ি করছেন, এই দল সংবিধান সংবিধান করে মাথা গরম করছে অন্য দল নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে ঢেলে সাজানোর দাবি তুলছে।
ইয়াজুদ্দিনসাহেব দলীয় আনুগত্য ভুলতে পারছেন না। তার ব্যাক্তিত্বহীনতার সুযোগে তাকে দিয়ে বি এন পি ও চার দলীয় জোট নিজের কাজ করেই যাচ্ছে।
এইসব নতুন উদ্ভুত সমস্যা সমাধানের ব্যার্থ চেষ্টা করতে করতে যখন 4 উপদেষ্টা একেবারে গুছিয়ে এনেছিলেন সব তখন স ম জাকারিয়াকে রেখে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের আবদার, এবং এরও পরে সব উপদেষ্টার মতের অমতে গিয়ে সেনা মোতায়নের সিদ্ধান্ত গ্রহনের পর আসলেই এই 4 উপদেষ্টার কিছুই করার ছিলো না।
তার পদত্যাগ করেছেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা থাকলো। আর দেশের সব জনগন যারা এই সমস্যার একটা রাজনৈতিক সমাধান কামনা করেছিলেন তাদের এই শুভ কামনা সফল হোক এমন প্রত্যাশা করতে পারি আমি। অন্য সবার কথা জানি না, আমার মনে হয় যেভাবে চলছে তাতে আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবে না, ভোটার তালিকায় প্রায় 15 % বাড়তি ভোটার আছে। আমার পরিবারের অপ্রাপ্ত বয়স্ক কয়েকজনকে ভোটার লিষ্টে তোলা হয়েছে কারন তারা 4 দলীয় জোটের হয়ে মিছিল করে। আরেক জনকে অন্তত 4 জায়গায় ভোটার বানানো হয়েছে। সেও তুমুল বি এন পি সমর্থক। এখন কথা হলো এই যে অনৈতিকতা কিংবা নিজস্ব সমর্থকদের অন্যায় ভাবে ভোটার লিস্টে ঢুকিয়ে দেওয়া এটা নির্বাচনকে প্রভাবিত করবে কিনা? কিংবা যেই সকল লোক একাধিক জায়গা থেকে ভোটার হয়েছেন তাদের ভোটগুলো দেওয়া হবে না কখনই এমন নিশ্চয়তা কে দিবে।
এমন কারচুপির সুযোৎা সব সময়ই থাকছে। শিবিরের অপ্রাপ্ত বয়স্ক অনেক কর্মিই ভোটার হয়েছেন। তারাও ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন, কোনো ভাবেই একটা নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয় নি দেশে। এই পরিস্থিতিতে আওয়ামি লীগ যদি নির্বাচন না করে তাহলেও একগুঁয়ে চার দলীয় জোট নির্বাচনে যাবে। এবং আবারও 96 সামনে আসবে।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×