আগেই বলেছি ওর পুরো নাম নিজাম উদ্দিন আউলিয়া লিপু। বাবা কাজী গোলাম আউলিয়া রিয়াদে আমেরিকান দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা। ঢাকায় রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল থেকে নবম শ্রেণী পাসের পর লিপু বাবা-মায়ের সাথে সৌদি আরবে চলে যায়। রিয়াদ থেকে এসএসসি পাস করে। ভর্তি হয় রিয়াদস্থ পাকিসত্দান কলেজে। ছোটবেলা থেকে গাড়ির প্রতি ঝোঁক ছিল লিপুর। নতুন গাড়ি দেখলেই চড়তে ইচ্ছে করত। ছেলের আগ্রহ দেখে বাবা সৌদি আরবেই লিপুকে ড্রাইভিং শেখার সুযোগ করে দিলেন। সৌদি আরবে গাড়ি চালানোর লাইসেন্স পেল লিপু। এক সময় আবার বাংলাদেশে ফিরে এল সে। পড়াশোনার চেয়ে গাড়িই তাকে আকৃষ্ট করতে থাকল বেশি। একদিন জিগাতলার বাসায় গাড়ির কলকব্জা নিয়ে খুটখাট শুরম্ন করল। ব্যস ঐ যে শুরম্ন আজও চলছে!
কোনো মেশিনে নয় হাতে অত্যাধুনিক গাড়ি বানিয়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে সে। 82 মডেলের হোন্ডা সিভিক গাড়িকে ফেরারি কোইজিন টেসটারোসাতে রূপানত্দর করে লিপু প্রথম চমক দেখায়। এরপর ভক্সওয়াগন বিটলের ইঞ্জিন ও চেসিস দিয়ে তৈরি করে বিশ্বখ্যাত ইতালিয়ান গাড়ি ল্যামবার্গিনি। কিন্তু লিমুজিন বানানোর স্বপ্ন যেন মুছে ফেলতে পারছিল না সে। এক পর্যায়ে মাত্র 4 মাসের ব্যবধানে সফলভাবে তৈরি করে ফেলেন লিমুজিন। 2800 সিসির এই গাড়িটি তৈরি করতে তাকে সহায়তা করেছে ছোট ভাই দীপুসহ 4/5 জন তরম্নণ।
লিমুজিনতো বানানো হলো এবার ঝোঁক পড়ল বিশ্বখ্যাত মডেল ফেরারির প্রতি। 2002 সালের শেষের দিকে লিপু ফেরারি নির্মাণ শুরম্ন করে। এ সময় বিবিসি তাকে নিয়ে একটি বিশেষ রিপোর্ট প্রচার করে। এই রিপোর্টের সূত্র ধরে ফেরারি ওনার্স ক্লাব তাকে স্থান দেয় তাদের ওয়েবসাইটে। লিপুর বানানো স্বাধীনতা এফ-71 নামে একটি গাড়িকে এই সাইটে 'দ্য বাংলাদেশ ফেরারি' উপাধি দেয়া হয়।
অটোমোবাইল ডিজাইনার হিসেবে আনত্দর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছেন লিপু। বাংলাদেশে গাড়ি বানিয়ে বিদেশে তা রফতানি করতে চান। জানি না তার এ স্বপ্ন সফল হবে কিনা। তবে একটি কথা না বললেই নয় লিপুর কৃতিত্ব নিয়ে পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যত না আলোচনা হয়েছে তার ছিটেফোঁটাও হয়নি নিজের দেশে। আমরা মনে করি লিপুর ব্যাপারে রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও আলোচনা হওয়া জরম্নরি। তা না হলে হয়তো একদিন দেখা যাবে লিপু চলে গেছে অন্য দেশে। তখন হয়তো বলতে হবে লিপু আমাদের ছিল। এখন আমাদের নয়।
[link|http://automekanik.com/ep1.avi|ce
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০০৬ বিকাল ৪:৫৭