somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাক্ষাৎকারে বিল গেটস: আমার অর্থ দরকার নেই

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

উইলিয়াম হেনরি “বিল” গেটস। বিল গেটস নামে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি তার। মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, সাবেক প্রধান সফটওয়্যার নির্মাতা এবং প্রতিষ্ঠানটির সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। টানা ১৩ বছর পৃথিবীর শীর্ষ ধনী ব্যক্তি ছিলেন তিনি। কোন পর্যায়ের ধনী সেটা অনেকের ধারণার বাইরে! প্রায় ৬ হাজার ৫০০ কোটি (৬৫ বিলিয়ন) মার্কিন ডলারের সম্পদের মালিক তিনি। এই ‍অংক ইকুয়েডরের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) সমান, দু’টি কেনিয়ার জিডিপির সমান, তিনটি ত্রিনিদাদের ও কয়েক ডজন মন্টিনিগ্রোর জিডিপির সমান।

১৯৫৫ সালে ওয়াশিংটনের একটি উচ্চ-মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৪ সালে মেলিন্ডা ফ্রেঞ্চকে বিয়ে করেন এই প্রযুক্তি ব্যক্তিত্ব।

সম্প্রতি পোলিও রোগ চিকিৎসায় ভ্যাকসিন দিতে নিজের দাতব্য তহবিলে দুই হাজার ৮০০ (২৮ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার দান করেছেন। এ নিয়ে যুক্তরাজ্যের একটি সংবাদ সংস্থার সাংবাদিক নেইলি টুইডির সঙ্গে কথা বলেছেন।

টুইডির নেওয়া সাক্ষাৎকারটির চুম্বক অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

প্রথমেই একজন বিল গেটস হয়ে ওঠার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা তুলে ধরে এই শীর্ষ ধনী বলেন, “শৈশব থেকেই খাদ্য ও পোশাক কেনা ছাড়া অর্থ সংগ্রহে যথেষ্ট সচেতন ছিলাম আমি। তবে অর্থ লাভের মোহ আমাকে বহুদূরের এই নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছে দেয়নি। আমার শ্রম-নিষ্ঠাই আমাকে এতদূর এনেছে। আর এটার লাভ আমাকে একটি প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠিত করেছে, তারপর দরিদ্র বিশ্বে সম্পদশালী করে পাঠিয়েছে।”

গেটস বলেন, “প্রযুক্তি ও সৃষ্টিশীলতা মানুষকে অনেক দূরের লক্ষ্যে যে খুব দ্রুত পৌঁছে দেয়, তা বর্তমান সময়ই প্রমাণ করে।”

নিজেদের অর্জনের পেছনের গল্প তুলে ধরে বিল গেটস বলেন, “যারা মাইক্রোসফটে কাজ করেছে তারা দেখেছে এবং বুঝেছে। আপনি যদি সৃষ্টিশীল, পরিশ্রমী মানুষকে টেনে নেন, তবে কাজের ক্ষমতা ও নিষ্ঠা আপনাকে অনেক সুন্দর, অমূল্য এবং নাটকীয় জিনিস উপহার দেবে।”

গেটস যেখানেই গেছেন সেখানেই অর্থ ব্যয় করেছেন। এখন পর্যন্ত তাঁর স্ত্রী ও তিনি দাতব্য তহবিলে দুই হাজার ৮০০ কোটি মার্কিন ডলার দান করেছেন। এর মধ্যে ৮০০ কোটি মার্কিন ডলার দিয়েছেন বৈশ্বিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে।

‌এ ব্যাপারে গেটস বলেন, “আমার স্ত্রী ও আমি অনেক লম্বা সময় ধরে আলোচনা করেছি কিভাবে আমরা সম্পদ অর্জন করেছি, আর আমরা খুব সৌভাগ্যবান যে আমরা খুব ভালো পথে বিশ্বকে তার অধিকার বুঝিয়ে দিচ্ছি।”

দাতব্য তহবিলে অর্থ দানের প্রসঙ্গ তুলে ধরে এই ধনকুবের বলেন, “পোলিওমুক্ত হওয়ার কাজে এই দান। যেটাতে শুধ আফগানিস্তান, নাইজেরিয়া কিংবা পাকিস্তান নয়, আমরা সবাই ভুগছি। তাছাড়া এটা মানবতার কাজ, ঈশ্বরের কাজ!”

শিশু স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়ার ব্যাপারে গেটস বলেন, “এটা স্বীকার করতেই হবে যে, প্রত্যেক শিশুরই রয়েছে সুন্দর ও সুস্বাস্থ্য নিয়ে জীবনযাপনের অধিকার। এ অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে আমাদেরই। কারণ, ওরাই একদিন পৃথিবী গড়বে।”

“কোনো ধরনের বিতর্ক আমাদের সাফল্য রথকে থামিয়ে দেবে না” উল্লেখ করে গেটস বলেন, “বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ঈশ্বরের কাজ করতে থাকা সেইসব সেবক-সেবিকাদের সঙ্গে মিশে যাচ্ছি ‍আমরা।”

ভবিষ্যৎ কাজের পরিকল্পনা তুলে ধরে গেটস বলেন, “আমি মাইক্রোসফটকে ভালোবাসি। কারণ এটা আমাকে বর্তমান পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। এই পথে আমি দেখেছে কম্পিউটার ও অনলাইন মাধ্যমের বিপ্লব। একই সঙ্গে দেখেছি একসময় প্রায় মহামারি আকার ধারণ করা শিশু মৃত্যুর হার কীভাবে সবার প্রচেষ্টায় কমে আসছে। আমি অনেক সময় ধরে কাজ করি এবং অনেক বেশি শেখার চেষ্টা করি। আমি এই কাজগুলো করে যেতে চাই, কারণ আমি এগুলো অনেক পছন্দ করি।”

বিশ্বের দরিদ্র মানুষদের স্বাস্থ্য রক্ষায় প্রচারণার জন্য প্রত্যেকটি সরকারের নেতৃত্ব দেওয়ার প্রতি জোর দেন গেটস।

তাঁদের অর্জনের কারণে সন্তানদের আর কোনো কর্ম করতে হবে না এমন মন্তব্য নাকচ করে দিয়ে গেটস বলেন, “আমাদের সন্তানের‍ ঐতিহ্যগত কোনো সম্পদ পাবে না। তারা মাল্টি-বিলিয়নেয়ার হওয়া থেকে বঞ্চিত হলে সেটা তাদের ভাগ্যের দোষেই হবে। তাদের মেধা-পরিশ্রমই তাদের একদিন কোটিপতি বানিয়ে দেবে।”

গেটস বলেন, “মারা যাওয়ার ২০ বছরের মধ্যেই আমাদের উপার্জিত সম্পদের ৯৫ শতাংশ সম্পদ দাতব্য তহবিলে চলে যাবে।”

গেটস বলেন, “এটা কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। এটা মানবতার জন্য ঈশ্বরের কাজ!”

“নিজেদের স্বাস্থ্য চিকিৎসায় আমরা যেমন ব্যয় করি, অন্য মানুষের স্বাস্থ্যের প্রতিও আমাদের তেমন ভাবা উচিৎ।”

আগামী ২৯ জানুয়ারি বিবিসিতে তারুণ্যের ধর্ম নিয়ে ‘ডিমব্লেবি লেকচার’ শীর্ষক বক্তৃতাটি সম্প্রচারিত হবে।
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। শেষ মুহূর্তে রাইসির হেলিকপ্টারে কী ঘটেছিল

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২২ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৩২

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগে কী ঘটেছিল, সে সম্পর্কে এখন পর্যন্ত খুব কমই জানা গেছে। এবার এ ঘটনার আরও কিছু তথ্য সামনে এনেছেন ইরানের প্রেসিডেন্টের চিফ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনারই মেরেছে এমপি আনারকে।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২২ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


ঝিনাইদহ-৪ আসনের সরকারদলীয় এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিল তারই ছোটবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনার আক্তারুজ্জামান শাহীন!

এই হত্যার পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল আরেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের কিছু উল্টা পালটা চিন্তা !

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২২ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:১০

১।
কলকাতা গিয়ে টুকরা টুকরা হল আমাদের এক সন্ত্রাসী এমপি, কলকাতা বলা চলে তার ২য় বাড়ি, জীবনে কতবার গিয়েছেন তার হিসাব কেহ বের করতে পারবে বলে মনে করি না, কলকাতার অলিগলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাটির কাছে যেতেই..

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

মাটির কাছে
যেতেই..


ছবি কৃতজ্ঞতাঃ https://pixabay.com/

ঠিক যেন
খা খা রোদ্দুর চারদিকে
চৈত্রের দাবদাহ দাবানলে
জ্বলে জ্বলে অঙ্গার ছাই ভস্ম
গোটা প্রান্তর
বন্ধ স্তব্ধ
পাখিদের আনাগোনাও

স্বপ্নবোনা মন আজ
উদাস মরুভূমি
মরা নদীর মত
স্রোতহীন নিস্তেজ-
আজ আর স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

পর্ণআসক্ত সেকুলার ঢাবি অধ্যাপকের কি আর হিজাব পছন্দ হবে!

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৩ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:২৭



ইন্দোনেশিয়ায় জাকার্তায় অনুষ্ঠিত একটা প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশি নারীদের একটা রোবোটিক্স টিম। এই খবর শেয়ার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপিকা। সেখানে কমেন্ট করে বসেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×