তৃতীয় শক্তির রূপ কি হবে বা কি হতে পারে তা নিয়ে নানারকম হাইপোথিসিস হয়েছে। এখানে বেশ খানিকটা ঘি ঢালেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাস্ট্রদূত হ্যারি কে টমাস যিনি কালা জাহাঙ্গীর নামে সমধিক পরিচিত ছিলেন। তিনি রাজনীতিবিদদের সতর্ক করে দিয়ে কোন একটি বক্তৃতায় বলেন, রাজনীতিবিদরা ব্যর্থ হলে এদেশে তৃতীয় শক্তির উদ্ভব হতে পারে। এ পর্যন্ত বলেই তিনি মুখে কলুপ আটেন। এ বিষয়ক আর কোন বক্তব্য তিনি দেননি। প্রসংগত বলে নেয়া ভালো, আমাদের রাজনীতিবিদরা ব্যর্থ তাতে সন্দেহ নেই তবে দেশের মানুষ সেই ব্যর্থতা যেভাবে মূল্যায়ন করে মার্কিনীরা সেভাবে করেনা। সে এক ভিন্ন আলোচনা।
সাধারণভাবে তৃতীয় শক্তি বিষয়ক আলোচনায় যে বৈশিষ্ট্যগুলি পাওয়া যায় তার প্রধান দিকটি হচ্ছে, তৃতীয় শক্তি একটি অনির্বাচিত এবং অরাজনৈতিক সরকার গঠনের পরিকল্পনা। কারন মূলধারার রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ, বিএনপির বাইরে কোন শক্তিশালী তৃতীয় রাজনৈতিক ধারা দৃশ্যমান নয়। তৃতীয় শক্তির উথথানে সুশীল সমাজের একটি কার্যকর ভুমিকা থাকবে। এবং সর্বোপরি তৃতীয় শক্তিকে পেছন থেকে সহযোগিতা দেবে সামরিক বাহিনী। দিতেই হবে। তাছাড়া কোনভাবেই একটি অনির্বাচিত সরকারের অস্তিত্ব সম্ভব না।
এখন গুরুতর প্রশ্ন হচ্ছে, জনগণের বিকল্প প্রত্যাশার ক্ষেত্র থেকে তৃতীয় শক্তি কি ভূমিকা পালন করতে সক্ষম? তৃতীয় শক্তি বিষয়ে অন্যান্য কি প্রবণতা ক্রিয়াশীল আছে?
প্রশ্নহীনভাবে একথা সত্য যে আমাদের রাজনীতিবিদরা ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ছাড়া আর কিছুই নন। আমাদের নির্বাচন পদ্ধতিতে কোনভাবেই জনগনের মতামতের প্রতিফলন ঘটেনা। কিন্তু নামকাওয়াস্তে হলেও যে গণতন্ত্রটুকু আছে তাও একসময় ছিলোনা। গত কয়েক বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে একথা যেমন সত্য তেমনি একথাও সত্য যে গণরোষের ভয়ে বিগত সরকারগুলি গ্যাস রপ্তানীর মতো আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়েও তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। অন্যান্যভাবে গুরুতর জাতীয় স্বার্থবিরোধী একাধিক পদক্ষেপেই বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে গণরোষের ভয়। পাঁচ বছরে একবার হলেও তো ভোটের জন্য মানুষের কাছে যেতে হয়। যদিও যুবরাজ তারেক রহমান এসবের ধার না ধেরেই অবাধে লুট করেছেন হাজার হাজার কোটি টাকা। এ পরিস্থিতি ভয়াবহ সন্দেহ নেই। তবে অনির্বাচিত কোন সরকারও যে এরচেয়ে ভালো কিছু দিতে পারবেননা তাতেও সন্দেহ নেই।
সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির রাজনৈতিক কুটকৌশল ও সেই কুটকৌশলের অন্যতম সেনাপতি ইয়াজউদ্দিন আহমেদ তৃতীয় শক্তির একটি ঘনঘটা জাতিকে শোনেচ্ছেন। সামরিক বাহিনী নিয়োগে ব্যর্থ হয়ে তারা যে অন্য কোন চাল চালবেন তাও পরিস্কার। এত কিছুর পরেও মার্কিনিদের নি:শর্ত সমর্থন ইয়াজউদ্দিন সরকারের কুটকৌশলের পালে জোর হাওয়াই দিচ্ছে।
আর আমি আপনি কি করতে পারি। জাফর ইকবালের মতো 10 জন উপদেষ্টার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া এ মুহুর্তে আমাদের আর কিছু করণীয় নেই।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০