somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ক্যাম্পাস

০৬ ই নভেম্বর, ২০০৬ ভোর ৬:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজকে ক্যাম্পাস এর কথা মনে পরছে অনেক। রাসেল এর পোস্ট পরে মনে হয়। কতদিন যাইনা...মনটা খারাপ হয়ে গেল....5 টা মাস আগেও ক্যাম্পাস ছিল আমার ঘরবাড়ি...সপ্তাহের শেষে বাসায় যেতাম বেড়াতে ...মাঝে মাঝে তাও বাদ দিতাম,,,,কতো বকা খাওয়া হলে থাকা নিয়ে....

তুহি এখনো হল ছাড়েনি শুনলাম,তবে প্রায় গুছিয়ে এনেছে,,,ছেড়ে দেবে খুব তাড়াতাড়ি...বাবলি আছে...আমিও বোধ হয় থাকতে পারতাম সামনের বছরটা...কিন্তু উপায় তো নেই।

সব মিস করছি ক্যাম্পাসের, সব। মেইন বিলডিং এর চওড়া বারান্দাগুলো, লিফট বন্ধ পেয়ে মেজাজ খারাপ করে অনেক কষ্টে সিড়ি বেয়ে বেয়ে 5 তলায় ওঠা...হঠাৎ কোন কোন বিকালে আকাশের রং দেখে হা করে তাকিয়ে থাকা...আকাশে এত রং থাকতে পারে? নিজের চোখকে বিশ্বাস হতনা মাঝে মাঝে..এত এত রং....সূর্যটা ডোবার আগে আকাশে একদম একটা মাস্টারপিস এঁকে যেত...আমি সেই বিকালের রোদ্দুরে 5 তলার সেই লম্বা করিডোর মার্কা বারান্দায় দাড়িঁয়ে আকাশ কে দেখতাম চুপচাপ....শর্মীর সতর্কবানী মনে থাকতনা তখন.."সকালের রোদ আর বিকালের রোদে বের হবিনা কখনো..ঐ সময়কার রোদ বেশি ক্ষতিকর..''

টিভি রুমের সামনের শিউলি গাছটা...আবার শীতকাল এসে পড়লো...এখনো নিশ্চই সকাল বেলা সাদা হয়ে থাকে নিচের ঘাসগুলো...অনার্সের সামনের কাঠগোলাপ গাছটা...রাতের বেলা দল বেঁধে সেটার ডালে বসে গল্প করা...সবসময় ফুল থাকত গাছটাতে...নার্গিস আপু একটা বাঁদর এনে সেই গাছটার সাথে বেঁধে রাখল একদিন, আর আমাদের সে কি দুঃখ,,,,আমরা আর গাছের ধারেকাছে যেতে পারিনা...

আর সেই মাঠের মাঝখানের বিশাল রেইন ট্রি টা? ঘাসের উপর শুয়ে শুয়ে ওটার পাতার ফাঁকফোকর দিয়ে আকাশ দেখা,,,,তারা দেখা,,,,কত মন খারাপের রাত গুলো কাটিয়েছি ওখানে...আমাদের কত কত কান্নার সাক্ষী...

সেই আড্ডার রাতগুলি...তুহি ঘুমে ঢুলুঢুলু...বাবলার নিয়ম করে 12টায় ঘুমিয়ে যাওয়া...শুধু আমার চোখেই ঘুম থাকতোনা কেন জানি...তখনি টের পেতাম এইদিন গুলো শেষ হয়ে যাবে খুব তাড়াতাড়ি...তাই একদম ঘুমুতে চাইতামনা...যতক্ষণ জেগে থাকা যায়...

কলাভবনকে মিস করব জন্মেও ভাবিনি,,,আমি চিরটাকাল দিকহারা,,,5 বছর কাটিয়েও নিজের ডিপার্টমেন্ট ছাড়া অন্য কোন ডিপার্টমেন্টে যেতে গেলেই পুরো কলাভবন ঘুরপাক খেতাম বারবার..কিছুতেই খুঁজে পেতাম না। ডিপার্টমেন্টের সামনে যেই ছোট চৌকো জায়গাটা সেখানে একটা আম গাছ ছিল...মাঝে মাঝে নিচে হিস্ট্রির ছেলেদের দেখতাম গাছ বেঁয়ে উঠে আম পাড়তে...আর ছিল একটা কামরাঙা গাছ,,ওটাতে কখনো কামরাঙা দেখেছি বলে মনে পড়েনা..কিন্তু ছোট ছোট বেগুনি ফুলগুলি অনেক পছন্দের ছিল আমার। থার্ড ইয়ারের শুরুর দিকে হঠাৎ দেখি কামরাঙা গাছটা তার নিচের লতাপাতা সহ উধাও! কলাভবনের সৌন্দর্য বৃদ্ধি প্রকল্পে বেচারা কে তার বাচ্চাকাচ্চা সহ জীবন দিতে হল...খুব মন খারাপ ছিল কয়েকদিন গাছটার জন্য। পরে দেখলাম ঐ জায়গা টা পুরো সাফ করে ফেলে কি কি সব বিদেশী ফুল গাছ লাগিয়ে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে তারা।

কলাভবনের সামনের রাস্তাটা আমার অনেক অনেক প্রিয় ছিল। বিরাট চওড়া একটা রাস্তা...রাস্তা পার হতে সবার কি ভয়...আমার লাগতো মজা...সব গাড়ি এখানে খুব সাবধানে চলত, কোন অ্যাকসিডেন্ট হলে গাড়ি কি চালক কারোই আস্ত থাকার কোন সম্ভাবনা নাই...সেই খানে হঠাৎ একদিন দেখি কিসব মাপজোখ শুরু হল..এবং কয়েকদিনের মধ্যেই ডিভাইডার নামে একটা আখাম্বা পাঁচিল তুলে ফেলা হল পুরো রাস্তা বরাবর। আমার কটা দিন ধরে সে কি মেজাজ খারাপ,,,আরো মেজাজ খারাপ হত যখন সবাই বলত এটা হওয়াতে ভালো হয়েছে,তারা নাকি এখন বেশি সেইফ ফিল করে! তো তাদেরকে আরো বেশি সেইফ রাখতে পুরা ক্যাম্পাসে স্পিড ব্রেকারের একটা নতুন ভার্সন ছড়ানো হল..এইরকম খাস্তা কবর মার্কা স্পিড ব্রেকার আমি আর কোথাও দেখিনি,,,,আর কোথাও দেখবো বলে আশাও করিনা।

শুরু করলাম কি দিয়ে আর নিয়ে আসলাম কোথায়! নো ওয়ান্ডার জীবনেও কোন পরীক্ষায় ভাল করতে পারিনি... :(

তবে ব্যাপার হল....ক্যাম্পাসের সবকিছু মিস করছি আমি,,,এমনকি সেই আখাম্বা পাঁচিল আর সেই খাস্তা কবরগুলো তক!
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই নভেম্বর, ২০০৬ ভোর ৬:৫০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×