সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৭ রাত ১১:২৪
মাথায় ওটা কি যেনো??
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
আমি কি তোমাদের থেকে অনেক আলাদা? প্রতিদিনইতো একই সাথে স্কুলে যাই, ক্লাসে ফাকি দেই, ক্যান্টিনের লম্বা লাইনে পা ব্যাথা করে দাড়িয়ে থাকি। স্কুলের শেষে হইচই করে ফেরা, কফিশপে একটু থামা। আর অদ্ভুত সব জিনিষ নিয়ে কথা বলা - কোনটাই বাদ থাকে না। মার সাথে ঝগড়া করে কাঁদতে কাঁদতে ফোন করা বা পরীক্ষার আগের রাতের টেনশন ভাগাভাগি করে নেওয়া। দিনের অর্ধেকটাই কাটে তোমাদের সাথে, তবুও আমি আলাদা? চারকোনা ছোটখাট একটা কাপড় কত কিছু বলে দিতে পারে। এনে দেয় করুণা - "ইস! খারাপ তোমাকে দেখলে!" ...বিশ্বয় - "ওটাতে গরম লাগেনা??" ...অচেনা মানুষকে আপন করে ফেলার আনন্দ - "আসসালামু আলাইকুম সিস্টার। নামাজের রুমটা কোথায় বলতে পারবে?" ...অথবা ভয় ও ঘৃণা - কিছু মূর্খ্য মানুষের মনে। যা যা বলুক, আমার কাছে আনন্দের উচ্ছাসটাই সবচেয়ে বেশি স্থায়ী হয়। হতে পারে এর কারণ আমি যা পরি, ভালোবেসেই পরি। তাই কেও করুনার হাত বাড়িয়ে দিলে বিরক্তি বোধ করি। যার করুণার দরকার নেই, সে তা দিয়ে কি করবে? কেও বিশ্বয় প্রকাশ করলে ভালো লাগে, মাঝে মাঝে তাদের ভুল ভেঙে দিতে পারি, মাঝে মাঝে পারিনা। তাও ভালো লাগে। আর ভয় ও ঘৃণা? ওদের ঘাড়ে পুরোটা দোষ দিব না। চারপাশ থেকে শিখেই তাদের মনে এগুলো জন্ম হয়েছে। শপিং সেন্টারে বা ট্রেনে দাড়িয়ে থাকলে, মাঝে মাঝে এরকম কিছু পিচ্চি দেখা যায় - যারা এক দৃষ্টিতে ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে থাকে। নিষ্পাপ চোখগুলোতে ভয় দেখতে খারাপ লাগে।তাই হেসে ফেলি। হাসি দিয়ে বুঝিয়ে দিতে চেষ্টা করি, ভয়ের কিছুই নাই। তোমার ভেতরে যেরকম লাল রক্ত প্রবাহীত হচ্ছে, আমার ভেতরেও ঠিক তাই। বেশির ভাগ সময়েই ওরা বুঝে, এবং ওরাও হেসে দেয়। কারোও ভয় ভাঙা বড়ই আনন্দদাওক অনুভুতি । ঘৃণা জিনিষটা ছোটদের মাথায় ঠিক আসে না। এটা শুধু বড়দেরই রোগ। এর উৎস কোথায় এখনোও ভালো ভাবে বুঝতে পারিনি। মাঝে মাঝে কোন কারণ ছাড়াই এটা বের হয়ে পড়ে। এইতো সেদিন, স্কুল থেকে ফিরছিলাম। বন্ধুদের বিদায় দিয়ে বাস থেকে নেমে হাটছিলাম। একা। পাশ দিয়ে দুটো সাইকেল গেলো, দু'জন লোক গলা ফাটিয়ে কথা বলছে। স্বাভাবিক ভাবেই আমি এক পলক তাকিয়েছি। শুরু হলো মৌখিক নির্যাতন! "WHAT ARE YOU DOIN IN THIS COUNTRY? GO BACK TO WHERE YOU CAME FROM YOU F****** MUSLIM...." এর পরে প্রতিটা কথাতেই চার অক্ষরের অকথ্য শব্দে ভরা ছিলো। আমি কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। এরকম সরাসরি অপমান আগে আমাকে কেউ কখনও করেনি। বুঝতে পারছিলাম মুখ গরম হয়ে উঠছিলো। উলটা পালটা কিছু কথা মুখে চলে এসেছিলো, কিন্তু নিজেকে থামিয়েছি সাথে সাথেই। আমার শুধু শুধু নিজেকে টেনে ওদের মত নিচে নামানোর দরকার কি? আমার বন্ধুরা আমাকে বুঝতে দেয়নি আমি আলাদা। কিন্তু আশেপাশের মানুষ জোড় করে বুঝিয়েছে। তবে আমি ওদের কাছে কৃতজ্ঞ। পৃথিবীর শক্ত ও জটিল নিয়মগুলো জানিয়ে দেওয়ার জন্য, কিছু জিনিষের প্রতি বিশ্বাস ও ভালোবাসা বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য।
৩১টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes
শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন
রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!
রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।
আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!
এই... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাঁচতে হয় নিজের কাছে!
চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু। লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা
২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন
সামুতে আপনার হিট কত?
প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন