somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দরকার নাপিতকে ডাক্তারি শেখানো

২২ শে অক্টোবর, ২০০৬ দুপুর ১২:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেশের নেতৃত্বের কথা উঠলে, ভবিষ্যতের কথা উঠলে প্রায় সবাই বলে, ভুল লোকগুলো ভুল জায়গায় বসে আছে। তাতে কি? এসব ছুটকো কারণে গদি থেকে নিতম্ব সরানোর কথা তারা ভাবেন না । চেয়ার দখলে থাকায় আর টেন্ডলদের হাম্বারবে বরং তারা একসময় ভাবতে থাকে দক্ষতা তাদের থাকুক না থাকুক জনসমর্থন তাদের পেছনেই আছে। গদিনশীন তাদেরকে সালাম ঠুকতে ঠুকতে জনগণ অভ্যসত্দ হয়ে যায় এরকম ছায়াছবিতে আর ভাবতে থাকে বিষয়টা পরদাদাদের আমল থেকে এরকমইতো ছিল। সুতরাং কোনো অদল-বদলের দাবী ওঠে কদাচিৎ। দর্জি চালাতে থাকে বিদু্যৎ মন্ত্রণালয়, ডাক্তার কূটনৈতিক অর্থনীতি বিষয়ে বক্তৃতাবাজি করে জাতিসংঘের সম্মেলনে, জমির দালাল পত্রিকা প্রকাশনা চালিয়ে যায়, সিপাহী পানির বোতলে ফুঁ দিয়ে মরমীবাদ বেঁচে।

জনগণকে বোকা ভাবার কোনো কারণ নেই। তারা হাততালি দেয় সুবিধা বুঝেই। রোকনউদ্দৌলা মোবাইল কোর্ট বসিয়ে যখন বনানীর দামী রেস্টুরেন্টগুলোর জরিমানা করে তখন তারা পুলকিত হয়। আবার সরকারী লোকজন চলে যাওয়া মাত্র লাইন দিয়ে সেখানেই খাবার কিনতে যায় আর বয়-বেয়ারার সাথে বাতচিতে সরকারের গুষ্ঠি উদ্ধার করে। ম্যাজিস্ট্রেটের পাওয়া খাবারের তেলাপোকাটি আসলে জায়ফলের শেকড় ছিল এমন ব্যাখ্যা মেনে নিয়ে তারা রেস্টুরেন্টের মালিকের সাথে সহাস্যে মাথা নাড়ে। তারা কোনো নতুন বিদআতে যায় না। অথচ ভ্যাটসহ রশিদটা নিতে তারা ভুলে যায়, নিজে বাড়তি টাকাটা দিলেও দোকানমালিককে ট্যাঙ্রে হাত থেকে বাঁচিয়ে সমাজসেবা করার আনন্দ পায় তারা।

দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় জনগণ জানে গ্রামে পেটের অসুখ দেখা দিলে এ্যাডভোকেট সাহেবকেই ধরতে হবে। কারণ হাসপাতালের সব ওষুধ আর কেমিক্যালগুলো আপাতত: তার গুদামেই চালান হয়ে গেছে। ডাক্তারগুলো ছেলে-মেয়েকে ইংলিশস্কুলে পড়ানোর সুবিধা ছাড়তে চায় না বলে উপজেলার সরকারী হাসপাতালে তারা আসে পনেরদিনে একবার। তারচেয়ে এ্যাডভোকেট সাহেবকেই হাসপাতালের ডাইরেক্টর বানিয়ে দেয়া ভালো। নাহয় তিনি ডাক্তার না কিন্তু তার ফার্মেসিটা তো সবসময় খোলা পাওয়া যায়। তারা আসলে যে ভুল ভাবে এমন বলা যাবে না।

গল্পের সেই নাপিতের কথা মনে আছে নিশ্চয়ই। ডাক্তারহীন গ্রামে যে ছিল জনপ্রিয় শল্যবিদ। ক্ষুরের পোঁচেই সে করে ফেলতো বড় সড় অপারেশন। তারপর নতুন পাশ করা ডাক্তার এসে যখন দেখলেন কেউ তার কাছে আসছে না বরং ছুটছে নাপিতের দিকে তখন তিনি সিদ্ধানত্দ নিলেন নাপিতকেই বরং কিছুটা ডাক্তারি শিক্ষা দেবেন। তাতে তার ব্যবসা নদীতে ডুবুক গ্রামের লোকের কিছু লাভ হয়। নাপিতও পরম আগ্রহে শিখতে থাকে এনাটমি, ফিজিওলজি। কিন্তু যত শেখে ততই দ্বিধা বাড়তে থাকে তার। আগের মত ফচাফচ ক্ষুর চালাতে গেলে হাত চলে না। নতুন শেখা বিদ্যার কত সূত্র, কত নিয়ম-কানুন। সে বরং রোগীদের ফেরৎ পাঠায় পাশ-করা ডাক্তারের কাছে। জনগণ বেজার হলেও পাশ-করা ডাক্তার খুশিতে বাকুম বাকুম করে।

আমাদের যতসব নরসুন্দর-নাপিত-শীল, চারপাশে করছে কিলবিল, তাদেরও এমন করে সূত্র বা নিয়ম-কানুন শেখানোর একটা উদ্যোগ যদি নেয়া যেত। যদি বলা যেত, ব্যবসার পসার তো আপনার রয়েছেই, নাহয় আরেকটু ইংরেজি-ফারসি শেখে আমাদের সামনে নাচলেন কুঁদলেন, আমরা গরীব জনগণ, আপনারাই আমাদের বুশ-বেস্নয়ার, হলিউড-বলিউড; আমরা একটু গর্বভরে ঘুমাতে পারতাম।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
১৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×