somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

[গাঢ়]বিরানপুরের সহযাত্রী-4ঃ শেখ জয়েন উদ্দিন[/গাঢ়]

০২ রা অক্টোবর, ২০০৬ রাত ১১:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পারিবারিক পরিমন্ডল লেখার জন্য খুবই প্রয়োজনীয় বিষয়। পরিবারের সদস্যদের অনুপ্রেরণা না থাকলে লেখালেখি প্রায় অসম্ভব। যদি সাহস দেন পরিবারের সবাই তবে লেখায় ঘটে স্ফুরণ। আর পরিবারেরই কোনো সদস্য যদি লেখেন তা হয় আরও সোনায় সোহাগা। আমাদের পরিবারের তেমন একজন সদস্য নিয়ে এবারকার বিরানপুরের সহযাত্রী পর্ব।

শেখ জয়েন উদ্দিন। জন্ম 1 জানুয়ারি 1962। শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএসসি (গণিত)। স্থায়ী নিবাস টাঙ্গাইল। তিনি আমার সহোদর। পেশায় ব্যাংকার। আগে স্কুল শিক্ষক ছিলেন। তবে প্রথম জীবন থেকেই তাঁর সাংবাদিকতা নেশা ছাড়েন নি। মফস্বলে থেকেও করে যাচ্ছেন তাঁর নেশার কাজ। কয়েক ধরণের লেখালেখিতেই সিদ্ধহস্ত তিনি। ছড়া, কবিতা, গল্প, নাটক, প্রবন্ধ, পত্রিকায় কলাম লেখেন। তবে গল্পেই স্বচ্ছন্দবোধ করেন বেশি। একটি গল্পের বইও বেরিয়েছে তাঁর। 2001 সালের ফেব্রুয়ারিতে।

তাঁর গল্পের বই 'প্রেম বিরহ জ্বালা'-এর কৈফিয়তে তিনি বলেছেন- আমার হৃদয় নিংড়ানো প্রেমটুকু নিঃশেষ করে দিতে চেয়ে গিয়েছি সবার দুয়ারে। ফিরে এসেছি বারবার ব্যর্থ হয়ে। বিরহের পাহাড় বুকে চেপে কেঁদেছি নিরালায়। জ্বলছে চিতা অন্তর জুড়ে। এ জ্বালার কিছুটা ভাগি হলে আমি সবার কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকবো।

প্রেম বিরহ জ্বালা একটি গল্প গ্রন্থ। সাদামাটা প্রচ্ছদ। আটচলি্লশ পৃষ্ঠার বইটিতে মোট নয়টি গল্প আছে। চলমান, গ্লাস, মা, অপু, বাঁধ ভাঙ্গা নদী, ওরা চাকর, স্বাধীনতা, উপহার এবং প্রেম বিরহ জ্বালা। অধিকাংশ গল্পে প্রতিফলিত হয়েছে তাঁর আশির দশকের ছন্নছাড়া জীবনের বিচ্ছিন্ন ঘটনাসমূহ। ঘটরাবহুল মানব জীবনের বাস্তব প্রতিকৃতি আঁকার আপ্রাণ চেষ্টার বহিঃপ্রকাশই 'প্রেম বিরহ জ্বালা'।

শুরুতে বলেছিলাম লেখালেখিতে পারিবারিক পরিমন্ডলে অবদানের কথা। আমার লেখালেখিতে সবচেয়ে অনুপ্রেরণাদানকারী আমার সবচেয়ে কাছের সহোদর শেখ জয়েন উদ্দিন। ঢাকা কলেজে এইচএসসি পড়াকালীন সময়ে তাঁর ছন্নছাড়া জীবনের ছায়ায় ছিলাম আমি। তিনি একটি পত্রিকার সাব-এডিটর ছিলেন তখন। আমিও লিখতাম তাঁর পত্রিকায়। মূলত তাঁর অনুপ্রেরণাতেই আমার লেখালেখি আরও ত্বরান্বিত ও বিকশিত হয়। সে সময়কার ছাপানো তাঁর একটি কবিতা আমার সংগ্রহে আছে। কবিতাটি আমার খুব ভালো লাগে এবং প্রিয় কবিতা। শেখ জয়েন উদ্দিন-এর সেই কবিতাটি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।

[গাঢ়]যাবো না আমি যাবো না/ শেখ জয়েন উদ্দিন[/গাঢ়]

[রং=0অ00অ0]শ'তলা ইট-সুড়কীর ইমারত
রঙিন চকচকে আসবাব
ডেফোডিলের বাগান, রোটরেন্ডিয়ামের সারি
বৈদ্যুতিক অত্যাধুনিক সরঞ্জাম
কাঁচের চৌবচ্চায় রঙিন মাছের সাঁতার
সাম্রাজ্যবাদী বারুদাস্ত্র ইত্যাদি
আমার না জানা নামে আরো অনেক বিচিত্র সম্পদ আছে
দূরদর্শনে দেখতে পাও পৃথিবী
তবুও যাবো না
আমি যাবো না তোমার কৃত্রিম মাটিতে।

বিচালীর দোচালা- ফাঁকে ফাঁকে চাঁদের লুকোচুরি
মাটির ঠুনকো সানকি
আমের মুকুলে কোকিলের কুহু
বাঁশের ডোলে সোনালি ধান
নকশী কাঁথার স্বপ্নভরা বিছানা
মাঝির ভাটিয়ালী গান
পাপিয়ার 'পিয়া পিয়া'- প্রিয়াকে কাছে টানার অদম্য স্পৃহা
প্রাণে প্রাণে বিনিসূতোর কোমল বাঁধন
প্রত্যুষে কাকের কা-কা
তারও আগে শেয়ালের শেষ প্রহর ঘোষণা
দুপুরে ঘুঘুর ডাক
অশ্বত্থের শীতল ছায়ে কান্তের ঝিমুনী
সাঁঝের কালে নীড়ে ফেরার আনন্দ কোলাহল
এর একটিও কি আছে তোমার মাটিতে?

এছাড়া আমার অস্তিত্ব কল্পনায় শিউরে উঠি আমি
আমার প্রাণের ছোঁয়ায় বেড়ে ওঠা
প্রকৃতির অঢেল অমূল্য রত্নভান্ডারে পরিপূর্ণ
কী অপরূপ আমার দুঃখিনী বাঙলা!
এখানেই মুদিত হোক আমার আঁখি
পঞ্চমাত্মার বলাকারা উড়ুক এ আকাশেই
আমার মাটি ছেড়ে যাবো না আমি
আমি যাবো না মরণের পরেও
তোমার সাম্রাজ্য দিলেও না
যাবো না যাবো না না-না-না![/রং]

প্রকাশ: সাপ্তাহিক মানচিত্র- ঢাকা, 11 সেপ্টেম্বর 1983

সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০০৬ রাত ১১:৫৭
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসানের মা হিজাব করেন নি। এই বেপর্দা নারীকে গাড়ি গিফট করার চেয়ে হিজাব গিফট করা উত্তম।

লিখেছেন লেখার খাতা, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩


ছবি - সংগৃহীত।


ইফতেখার রাফসান। যিনি রাফসান দ্যা ছোট ভাই নামে পরিচিত। বয়স ২৬ বছর মাত্র। এই ২৬ বছর বয়সী যুবক মা-বাবাকে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দিয়েছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রোফেসরদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসুন সমবায়ের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন করি : প্রধানমন্ত্রী

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১২ ই মে, ২০২৪ ভোর ৪:১০



বিগত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নিজ সংসদীয় এলাকায় সর্বসাধারনের মাঝে বক্তব্য প্রদান কালে উক্ত আহব্বান করেন ।
আমি নিজেও বিশ্বাস করি এই ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক ।
তিনি প্রত্যন্ত অন্চলের দাড়িয়ারকুল গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×