somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জগিং অথবা একটি প্রেমের গল্প

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




আমি তখন ফ্রীল্যান্সিং করি। রাত জেগে ক্লায়েন্টের সাথে স্কাইপিতে বগর বগর আর কোডিং। কোডিং করতে খারাপ লাগতো না। কিন্তু ক্লায়েন্টের একের পর এক প্রোগ্রাম চেঞ্জ একটুও সুখকর ছিল না। প্রায় সময়ই কাজ করতে করতে ফজরের আজান দিয়ে দিত। যদিও কখনো চারটার আগে বিছানায় যাওয়া হত না। ফজরের আজান দিলে মসজিদে ফজরের নামাজ পড়তে চলে যেতাম। ততক্ষণে একটু ক্ষুধাও লেগে যেতো। আমাদের আশে পাশের হোটেল গুলো ভালো ছিল না। তাই একটু দূরে চলে যেতাম। মেইন রোডে গিয়ে প্রায় সমই নাস্তা করে আসতাম।
চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলাম। এ সময় সবাই একটু হতাশ থাকে। পড়া লেখা শেষ করে কি করবে। সবাই একটু আধটু চিন্তিত ছিল। আমার মধ্যে এসব হতাশতা ছিল না। ক্লাস কর খাও আর ঘুমাও, মাঝে মাঝে রাতে একটু আধটু কাজ আর সারাক্ষন ফেসবুকিং। এর থেকে বেশি কি লাগে? নাহ! আসলে আমিও হতাশ ছিলাম। তবে অন্যদের মত না। যখন কাজ বা পড়ার চাপ কম থাকত তখন একটু একা একা অনুভব করতাম। মনে হতো পাশে একজন থাকলে কত না সুখী হতাম আমি। আবার এক্সামের সময় বা কাজের প্রেসারের সময় সব ভুলে যেতাম। যখন দেখতাম ফ্রেন্ডরা তাদের গার্ল-ফ্রেন্ডের সাথে ঘুরতে যায়, তাদের সবচেয়ে সুখী এবং সুন্দর দেখায়। আমি একা একা তখন নেটবুকে ফেসবুক নিয়ে পড়ে থাকি আর স্ট্যাটাসদি।
সকাল বেলা একদিন নাস্তা করে ফিরছিলাম। একটি মেয়ে দেখি জগিং করতে আমি যে দিকে যাচ্ছি তার বিপরীত দিকে যাচ্ছে। মানে আমার দিকে আসছে। আঠারো কিংবা উনিশ বছর হবে বয়স। আমার ধারনাই ছিলনা যে এ বয়সী মেয়েরা জগিং করবে। মেয়েরা হচ্ছে রাজ্যের অলস। তার উপর সুন্দর হলে তো কথাই নেই। চারপাশের সবাইকে চাকর ভাবতে থাকে আর নিজের সব কাজ করিয়ে নেয় তাদের দিয়ে। ঘুম থেকে উঠে সকাল দশটার পর। এ মেয়েকে শুধু সুন্দর বললে হবে না, এটা তো পুরো অপ্সরী। গায়ে সাদা জ্যাকেট, পরনে সাদা টাউজার আর পায়ে সাদা ক্যাডস। মাথায় টেনিস খেলোয়াড়দের ক্যাপের মত কমলা কালারের ক্যাপ। এ মেয়ে এত সকালে ঘুম থেকে উঠলো আবার জগিং ও করে। বাহ বাহ!!
একদিন আমার ফেসবুক ফ্রেন্ড নাবিল আমিনের শেয়ার করা লিঙ্ক থেকে স্মার্ট-ফোনের জন্য রানিং ট্র্যাকিং সফটওয়ার Endomondo এর লিঙ্ক পেয়েছিলাম। ওয়েব সাইটে গিয়ে সুন্দর একটি মেয়ের ছবি দেখলাম। হাপ প্যান্ট হাপ টি-সার্ট আর কমলা কালারের টেনিস ক্যাপ পরা। সুন্দর ফিগার। আমি কিছুক্ষণ ছবিটির দিকে তাকিয়ে ভাবলাম এ মেয়ের মত একটা মেয়ে কেন আমার চোখে পড়ে না। আল্লাহ মনে হয় আমার কথা রেখেছে।
জগিং করা মেয়েটি থেকে আমি চোখ ফেরাতে পারি নি। অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম। যখন মেয়েটি আমাকে পাশ কাটিয়ে চলে গেলো তখন আমার খবর হলো। কি করব কিছু বুঝতে না পেরে মেয়েটির পিছনে পিছনে জগিং স্টাইলে হাটা ধরলাম। মেয়েটি খেয়ালও করে নি যে আমি তার পিছনে আসছি।
অনেক দূর হাটার পর দেখলাম একটা গেটে মেয়েটি ঢুকে যাচ্ছে। আমি গেট পর্যন্ত গিয়ে থামলাম। এতক্ষণ কোথায় দিয়ে কোথায় আসছি কিচ্ছুই জানি না। আমি শুধু পর্যাপ্ত দূরত্ব বজায় রেখে মেয়েটির পেছনে পেছনে গেলাম। হয়তো মেয়েটির পেছনে লেখা ছিল বিপদজনক! ১০০ হাত দূরে থাকুন! আমিও দূর থেকে অনুসরন করলাম। মেয়েটি আমাকে কেমন জানি বিমোহিত করল। কিছুক্ষণ গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থেকে বাসায় চলে আসলাম।
ঐদিন আর আমি ঘুমুতে না গিয়ে সোজা গুলিস্তান স্পোর্টস মার্কেটে চলে গিয়েছি। জগিং, রানিং ইত্যাদি থেকে দূরে থাকার কারনে টাউজার ও কিনা হয় নি জ্যাকেটও না। সাদা রঙের জ্যাকেট, সাদা ক্যাটস এবং একটা নীল রঙের ঐ টেনিস ক্যাপ একটা কিনে বাসায় ফিরলাম। এসেই ঘুম।
দিনে ঘুমালে হয়তো কেউ স্বপ্ন দেখে না। সব সময়ই আমি দিনে ঘুমাই। হয়তো স্বপ্ন দেখার জন্য নিস্তব্ধ পরিবেশ লাগে। তা না হলে ঐ মেয়ে আমার স্বপ্নে এসে একবার হলেও উকি দিত। কারণ সর্বক্ষণই ঐ মেটির কথা মনে পড়ে। কম্পিউটারের সামনে বসছি, মনিটর দেখি না ঐ মেয়ের মুখ দেখি আমি কনফিউজড।
এ পর্যন্ত পছন্দের কোন মেয়ের সাথে হ্যালো পর্যন্ত বলা হয় নি। আসলে এমন কাউকে পছন্দও হয় নি। ক্লাসমেট বা আশে পাশের মেয়েদের সাথে প্রয়োজনীয় দুই একটা কথা বলেই আমি যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচি। আশে পাশের ছেলেদের কান্ড দেখে তখন হাসি পেত। ভেবে পেতাম না কিভাবে মানুষ এত কথা বলতে পারে মেয়েদের সাথে। কিন্তু মনে হচ্ছে এ মেয়ের সাথে আমি আজীবন কথা বলে যেতে পারব।
আমার কাজ লাটে উঠছে। কিচ্ছু হচ্ছে না। ফেসবুকে কয়েকটি সুন্দর সুন্দর রোমান্টিক স্ট্যাটাস দিয়ে ফেললাম। একজনের মন্তব্য এক রকম। কেউ বলে নিলয় তোমার স্ট্যাটাস তো বেশি সুবিধের না, কি হয়েছে খুলে বলো। কেউ বলে এ ছেলে নিশ্চয়ই প্রেমে পড়ছে। কাছে বন্ধুরা বলে যাক, শেষ পর্যন্ত নিলয় তোর একটা গতি হলো। আমি বসে বসে ওদের কমেন্ট পড়ি আর মুচকি হাসি।
এ দিকে ছোট বোনও দেখল আমি কেমন অদ্ভুত আচরণ করছি। একবার কম্পিউটারের সামনে বসছি, আবার উঠছি। একবার আম্মুকে পাক ঘরে গিয়ে জিজ্ঞেস করছি আম্মু কি করছেন। আবার টিভি রুমে গিয়ে কিছুক্ষণ টিভি ছেড়ে দিয়ে বসে দেখি। ফারজু জিজ্ঞেস করল ভাইয়া তোমার কি হয়েছে। আমি বলি, কিছু না। সে বলল, না! কিছু একটা তো হয়েছে নিশ্চয়ই। অন্যদিন তোমাকে ডাকলেও কম্পিউটারের সামনে থেকে উঠাতে পারি না। কিছুক্ষণ পর তুমি জিজ্ঞেস কর “কিছু বলছিস?” আর আজ তুমি কেমন কেমন আচরণ করছ। আমি একটু মুচকি হাসি দিয়ে তার সামনে থেকে চলে আসি।

বিছানায় কিছুক্ষণ শুয়ে থাকি, সময় কেন কাটে না সে চিন্তা করি। অহ!! প্রতিদিন যেখানে রাত জেগে থাকি, আজ তাও বিরক্ত লাগে। এখন ঘুম আসলে তো সকালে উঠেই কি সুন্দর বের হওয়া যেত। এভাবে মেয়েটির কথা ভাবতে ভাবতে আর চটপট করতে করতেই ফজরের আজান দিল।

আমি বের হয়ে পড়লাম। ঐ বাসার পাশে গিয়ে হাটা হাটি করতে লাগলাম। মেয়েটি কেন বের হয় না। আহ! এখানেও সময় কাটে না। মোবাইল বের করে হেড-ফোনে গান শুনতে লাগলাম।

অনেক্ষন পর মেয়েটি বের হলো। আমার দিকে তাকিয়ে প্রায় একই পোশাক দেখে কিছুটা অবাক হলো। যেন কিছু হয় এমন ভঙ্গিতে জগিং করতে করতে সামনে এগুলো। বুকের ভেতর কেমন করে উঠল। অটোমেটিক আমার মনে ভেতর থেকে রোমাটিংক সব গান মুখ দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করল। মুখ কন্ট্রোল করে হেড-ফোন পকেটে রেখে আমি ও জগিং শুরু করলাম। কিছুদূর গিয়ে মেয়েটির পাশাপাশি গিয়ে তাকে হ্যালো বললাম।
মেয়েটি একবার তাকালো। আবার হাটা শুরু করল। আমি আবার বললাম হ্যালো আমি নিলয়, আপনি?
তারপরও কোন কথা নেই। আমি ভেতর ভেতর কেমন হতাশ হয়ে যাচ্ছিলাম। আর রাগে ফুসতে লাগলাম। মেয়েটি কি তার নাম বলতে পারে না? নাকি বোবা যে কথা বলতে সমস্যা? আমি মেয়েটিকে হারাতে চাই না। তাই সহ্য করলাম। আসলে আমি হারাতে পারব ও না। মনে হচ্ছিল মেয়েটির জন্য আমি যে কোন কিছু করতে পারব।
আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, কথা বলতে আপনার সমস্যা হচ্ছে?
মেয়েটি এবার মুখ খুলল। দেখুন আমি আপনাকে চিনি না।
আমি বললাম তো, আমি নিলয়।
না, মানে আপনি কি করেন, কোথায় থাকেন।
আমি কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর ব্যাচেলর ডিগ্রি নিচ্ছি। এবার চতুর্থ বর্ষ। থাকি এই যে, সামনে দুই গলি পরে।
মেয়েটি তখন ভাব নিয়ে বলল, হুম।
এবার তো অন্তত আপনার নামটি বলবেন প্লিজ?
-আমি ঊর্মি।
আমি তখন বললাম, সুন্দর নাম। ঊর্মি তখন একটু হাসল। আমি আর নিজ থেকে কিছু বলি নি ঐ দিন। কিছু জিজ্ঞেস ও করি নি। শুধু ঊর্মি যে দিকে দৌড়চ্ছিল আমিও সে দিকে। আমাদের দুই জনের একই রকম ড্রেস-আপের কারনে চারপাশের সবাই তাকিয়ে দেখছিল। তা হয়তো ঊর্মির নিজের চোখেও পড়ছে। সে নিজেও কিছু বলে নি।
পরের দিন ও আমি গিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম কখন ঊর্মি বের হয়। ঊর্মি বের হলে আমি বললাম, হ্যালো ঊর্মি। আজ ঊর্মি বলল হ্যালো। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কেমন আছো? আমার নামটা কি মনে আছে? ঊর্মি একটু হাসল। যার অর্থ হ্যাঁ বা না দুটাই হতে পারে।
আমি কিছুক্ষণ পর পর প্রশ্ন করে তার থেকে অনেক কিছু জেনে নিতে চেষ্টা করলাম। আর মনে মনে গালি দিতে লাগলাম কেন মেয়েটি নিজের থেকে কিছু বলে না। জানলাম ঊর্মি মেডিকেলের ছাত্রী। মাত্র প্রথম বর্ষ।
মনে মনে ভাবলাম মেডিকেলের ছাত্রী হয়তো এ কারণেই সকালে ব্যায়াম করে। শরীরের যত্ন নেয়। এ বয়সের ছেলে মেয়েরা সকালে ঘুম থেকে উঠবে তাই কল্পনার বাহিরে। আমি নিজেও একই দলের। সকালে ঘুম থেকে উঠে তো বুড়োরা। ডাক্তারের কাছে যেতে যেতে যারা ক্লান্ত তারা। তাদেরকে ডাক্তারে বলে দেয় সকালে ব্যায়াম করতে হবে, তাই করে। হয়তো এর ব্যতিক্রম ও কিছু আছে। তবে খুব বেশি নেই আমি সিউর।
এর পর থেকে প্রতিদিনই সকালে চলে যেতাম ঊর্মিদের বাসার কাছে। সে বের হলে এক সাথে জগিং। দৌড়াতে দৌড়াতে ঊর্মি থেকে অনেক কিছুই জানলাম। তার আস্তে আস্তে মুখ খুলতে লাগল। আমার সাথে দুই একটা কথা বলা শুরু করল। নিজেকে তখন সত্যই অনেক সুখী সুখী লাগত। আমিও মন খুলে সব বলতাম। সম্পর্কটা আপনি থেকে তুমিতে নেমে আসল। মাঝে মাঝে তাকে বিকেলে কফি-সপে আসতে বলাতাম। আসতো। এক সাথে বসে আড্ডা দিতাম। বাসায় এসে মোবাইলে কথা বলতাম। ফেসবুকে বসলে চ্যাট। কম্পিউটার ছিল আমার সব চেয়ে প্রিয় বস্তু। যদিও এখনো কম্পিউটারই আমার সবচেয়ে প্রিয় বস্তু। কিন্তু ঊর্মি অন্য কিছু। কোন কিছু দিয়ে আমি বুঝাতে পারব না। আমার শরীরের একটা অংশ। যে অংশ ছাড়া আমি অসম্পুর্ন।

এভাবে এক বছরের ও বেশি সময় কেটে গেলো। ঊর্মিকেএখনো বলতে পারিনি ঊর্মি তোমাকে আমি অনেক অনেক ভালোবাসি। এতদিন সত্যি সত্যি আমি অসম্পুর্ন ছিলাম। এখন আমি সম্পূর্ণ হলাম। তোমাকে আমি হারাতে চাই না। বলতে পারি নি কারণ ভয় লাগে। যদি আমাকে না বলে দেয়। যদি বলে তার অন্য কোন ছেলের সাথে সম্পর্ক আছে। আমি সহ্য করতে পারতাম না। তাই বলিও নি। তার সাথে কথা বলতে পারি, তার সাথে সকালে জগিং করতে পারি। মাঝে মাঝে বিকেলে এক সাথে বসে গল্প করতে পারি। সবটুকু পেতে গিয়ে এটুকু আমি হারাতে চাই না।
আমার গ্রাজুয়েশন শেষ হলো কিছুদিন হয়েছে। ডক্টরেট করার জন্য বিদেশ যাবো কিছুদিন পর। আচ্ছা, এখানে মাস্টার্স করে পরে এক সাথে ঊর্মিকে নিয়ে বিদেশ গেলে কেমন হয়? সে তার উচ্চতর ডিগ্রী নিতে পারবে বিদেশ গিয়ে।

অনেক ভাবনা চিন্তা করে ঠিক করলাম ঊর্মিকে আজ প্রপোজ করব। চিন্তা করে রাখলাম ঊর্মি যদি না করে তাহলে কয়েক দিনের মধ্যেই দেশ ছেড়ে চলে যাবো। আর কখনো আসবো না ঊর্মির সামনে। আমি জানি ঊর্মি কে না থেকে থাকতে পারব না। বার বার তাকে দেখতে ইচ্ছে করবে। তখন তার ছবি গুলো দেখেই হয়তো চোখে পানি ফেলতে পারব।

আজও তার সাথে জগিং করে ফিরে নাস্তা করে আর ঘুমাইনি। নিউ মার্কেট চলে গিয়েছি। ছোট্ট এবং সুন্দর দেখে একটা প্লাটিনামের রিং পছন্দ করলাম।
সন্ধ্যায় তাকে চাইনিজ রেস্টুরেন্টে আসতে বললাম। বলল আসবে। ওয়েটারদেরকে বলে রাখলাম যদি ঊর্মি আসে তাহলে যেন হালকা মিউজিক ছেড়ে দেয়।
আজ ও অপেক্ষা! সময় কাটতে চায় না। কে জানত আজ ঊর্মি শাড়ি পড়ে আসবে। তাও আকাশী কালারের? আমি তাকিয়ে অবাক চোখে ছিলাম। ওয়েটারদের ও হয়তো একই অবস্থা। তারাও মিউজিক দেরি করে ছাড়ল। আর ঊর্মি এসে জিজ্ঞেস করল কেন ডাকছি। আমি তখনো অবাক চোখে তাকিয়ে ছিলাম। ঊর্মি কেন এত সুন্দর হতে গেলো? আমি কি তাকে আঁকড়ে ধরতে পারব? সে কি আমার হবে?
আমি তার দিকে তাকিয়েই পকেট থেকে আংটিটি বের করে বললাম “ঊর্মি, আমি তোমাকে প্রতিদিনই একটি কথা বলব বলব বলে মুখিয়ে থাকি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বলতে পারি না। আমার গলায় এসে আটকে যায়। কারণ যদি আমি না শব্দটি শুনি। যদি আমি তোমাকে এটুকুও না পাই। যদি তুমি আমার সাথে কথা বলাই বন্ধ করে দাও। নিজেকে আর কন্ট্রোল করতে পারছি না। আমি তোমাকে অনেক বেশি পছন্দ করি। অনেক অনেক ভালোবাসি”। বলতে বলতে তার হাতের আঙ্গুল খুঁজে রিংটি পরিয়ে দি।
ঊর্মি বলল “ তুমি একটা গাধা। প্রতিদিনই তোমার মুখে তিনটি শব্দ শুনব বলে তোমার কাছে ছুটে আসি, কিন্তু শুনতে পাই না। সারা রাত তোমার কথা ভেবে ভেবে ঘুমুতে যাই। প্রায় সময়ই স্বপ্নে দেখি তোমার সাথে একটি গ্রামের রাস্তা ধরে হাটে থাকি, সবুজ রাস্তা। হাটতে হাটতে পথ ভুলে যাই। তোমাকে জিজ্ঞেস করি কি করব, তুমি বল এখানে থেকে গেলে কেমন হয়? আমরা দু জন থেকে যাই অজানা জায়গায় ” বলতে বলতে আমাকে জড়িয়ে ধরে।
আমার ঘাড়ের উপর ছোট ছোট জলের কণা পড়তে থাকে। আমি দেখতে পারি না তা কিসের জল। হয়তো ঊর্মির চোখের জল। আমি তার চোখের জল মুছে দিতে ও চাই না। এ ভাবে ঊর্মিকে জড়িয়ে ধরে রাখতেই ভালো লাগছে। থাকুক না আরো কিচ্ছুক্ষণ।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুন, ২০১৩ রাত ৯:৪৫
৪২টি মন্তব্য ৪০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×