সাংবাদিক পেটানোর মামলায় ৫৩ দিন কারাগারে কাটিয়ে জামিনে মুক্তি পেলেন ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ গোলাম মাওলা রনি।
Published : 16 Sep 2013, 11:37 AM
সোমবার বেলা ১১টা ১২ মিনিটে তাকে গাজীপুরের কাশিমপুরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে মুক্তি দেয়া হয়।
কারা তত্বাবধায়ক মো. জাহাঙ্গীর কবির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তিন মামলায় জামিনের কাগজপত্র হাতে আসার পর তা যাচাই-বাছাই করে গোলাম মাওলা রনিকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।”
ছোট ভাই শহীদুল হাসান কবির ও নেতাকর্মীরা এ সময় কারাগারের বাইরে উপস্থিত ছিলেন।
রনির করা তিনটি আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি নিজামুল হক ও বিচারপতি কাশিফা হোসেনের বেঞ্চ গত মঙ্গলবার তার জামিন মঞ্জুর করে।
হাকিম ও জজ আদালতে ব্যর্থ হওয়ার পর সাংবাদিক পেটানোর মামলায় জামিন চাইতে হাই কোর্টে আসেন রনি। চাঁদাবাজি ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে গত ১১ অগাস্ট পটুয়াখালী গলাচিপা থানায় দায়ের করা দুটি মামলায়ও তিনি জামিন পান।
অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের তথ্য সংগ্রহের জন্য গত ২০ জুলাই পল্টনে রনির কার্যালয়ে গিয়ে মারধরের শিকার হন ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ইমতিয়াজ মমিন সনি ও ক্যামেরাম্যান মহসিন মুকুল। ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, সংসদ সদস্য রনি নিজেই প্রতিবেদক ও ক্যামেরাপার্সনের ওপর চড়াও হয়ে লাথি মারছেন।
ঘটনার পর ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ রনিকে আসামি করে শাহবাগ থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে এই মামলা করে।
রনি পরদিন বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিলেও টেলিফোনে হুমকির অভিযোগে ইনডিপেন্ডেন্ট কর্তৃপক্ষ একটি জিডি করার পর ২৫ জুলাই জামিন বাতিল করে তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয় আদালত।
ওই আদেশে গোয়েন্দা পুলিশ সাংসদ রনিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করলে হাকিম আদালত জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠায়।
হাকিম আদালতে জামিন না পেয়ে গত ২৮ জুলাই জজ আদালতের কাছে আবেদন করেন রনি। কিন্তু সেখানেও জামিন না মঞ্জুর হয়।
এ মামলা সম্পর্কে অ্যাডভোকেট বাসেত সাংবাদিকদের বলেন, “বাস্তবতার সঙ্গে ঘটনার কোনো মিল নাই। এটা শত্রুতামূলক। আদালত সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে তাকে জামিন দিয়েছেন।
একজন সংসদ সদস্য হিসাবে সংসদের আগামী অধিবেশনের আগে তার জামিন হওয়া উচিৎ বলেও আদালতে যুক্তি দেখান রনির আইনজীবীরা।
অন্যদিকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাসুদ হাসান চৌধুরী পরাগ শুনানিতে বলেন, “একজন সংসদ সদস্য হয়েও উনি সাংবাদিকদের গায়ে হাত তুলেছেন। জাতি উনার কাছ থেকে এটা আশা করে না। উনি জামিন পাওয়ার পরও শর্ত ভঙ্গ করে হুমকি দিয়েছেন। তাই উনাকে জামিন দেয়া ঠিক হবে না।”
তবে আদালত সাংসদ রনির পক্ষেই আদেশ দেয়।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের টিকিটে পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন গোলাম মাওলা রনি। এর আগেও তার বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের নিগৃহীত করার অভিযোগ উঠেছে।