somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শুধু আস্ত মেয়ে নয় সবাই পড়ুন।

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৬ ভোর ৫:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বেনিত মুসোলিনির সময় আন্তোনিও গ্রামসি নােেম একজন দার্শনিক লেখক বাস করতেন । তিনি বাম রাজনীতিবিদ ছিলেন , মুসোলিনির চক্ষুশূল ছিলেন। যেহেতু তিনি স্বাধীন মত বা ভাবনার কথা প্রকাশ করতেন সেহেতু তিনি সোভিয়েত বুদ্ধিজীবিদেরও ক চক্ষুশূল ছিলেন।তার লেখনির মধ্যে একটি শব্দ সমাজবিজ্ঞানে বেশ আলোড়ন তৈরী করেছিল। শব্দটির নাম হেজিমনি। হেজিমনি শব্দটি তিনি যে অর্থে ব্যবহার করেছেন তা বেশ জটিল । রাষ্ট্রের দর্শন এবং মানুষের চিন্তার জগত বোঝাতে তিনি এই শব্দটি তুলে আনলেও ইদানিং কালে রাষ্ট্র , ক্ষমতা , দর্শন, সমাজ ব্যবস্থ্যা অনেক কিছুই হেজিমনি দিয়ে বোঝানো হচ্ছে। এত কিছু যা দিযে বোঝানো হয় সেই হেজিমনি জিনিষটা আসলে কি? গ্রামসি যে ভাবে তাকে ব্যাখ্যা করেছেন তা তার অর্থ দাড়ায় একটি শক্তিশালি ভাবনা অন্য ভাবনার পথকে রুদ্ধ করে দিতে থাকে, এবং এই শক্তিশালি ভাবনা গুলো যাতে অন্য কোন ভাবনা তৈরী না হতে পারে সে দিকে ল্য ক্ষ রেখে সে তার সকল কর্মকান্ড তৈরী করতে থাকে । সমাজ, ধর্ম ,ভাষা, শিক্ষা, ধর্ম, চিন্তা . বিশ্বাস , সংস্কৃতি সকল কিছুর মধ্যে দিয়ে এমন ধারনা দিতে থাকে তাতে জনগন ঠিক সেই ভাবে চিন্তা ভবনা করে । একটা উদাহরণ দিলে বিষয়টি আরেকটু সহজ হবে। ইসলাম ধর্ম সন্ত্রাসবাদের ধর্ম, ইসলাম ধর্ম মাথা গরম করা ধর্ম, এই ধারনা কে পাশ্চাত্য এমন জোরাল ভাবে তৈরী করেছে যে এটা এখন শুধু বাকী বিশ্ব নয়, অনেক মুসলিমের বিশ্বাস এর কাছাকাছি। টুইন টাওয়ার , পাতাল রেলে বোমা এগুলো মারার পেছনে যারা আছেন তাদেরকে সন্ত্রাসী বলে আখ্যায়িত করা হয়। এবং পুরো প্রক্রিয়াকে সন্ত্রাস বাদ বলে আখ্যায়িত করা হয়। আমিও বিশ্বাস করি তারা ভূল কাজ করেছে । কিন্তু এর চেয়ে ঢের বেশী সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পাশ্চত্য পরিচালনা করছে মুসলিম বিশ্বের উপর। এমন হেজিমনি তৈরী করেই মুসোলিনির সময় ফ্যসিষ্টরা ক্ষমতা দখলের জন্য । তারা এমন ধারনা তৈরী করে যাতে জনগন বিশ্বাস করতে বাধ্য হয় গনতন্ত্র খারাপ। যদিও হিটলার এবং মুসোলিনি উভয়ই আজ বিশ্ব দুশমন। তারা কিন্তু ক্ষমতা দখন করেছেন মানুষের মধ্যে ভালত্বের ধারনা বিস্তার করে। জনগণ এই ধারনার মধ্যে পড়ে গিয়েছিল তারাই তাদের সবচেযে মঙ্গলকামি। প্রচার যন্ত্র এমন ভাবে প্রচার করতে শুরু করছিল তাতে জনগনের বিকল্প ভাবাই কঠিন হয়ে পড়ে। এরা রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে দেশের যাবতীয় দূর্দশার ভার সংখ্যা লঘুদের উপর চাপিযে দেয়। যাদের কারনেই সে সময় দেশদুটিই হয়ে ওঠে সংখ্যালঘুদের জন্য নরক। তারা মতা তৈরী করার জন্য ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতি সবকিছুকেই ব্যবহার করে । যখন তারা ভাষাকে ব্যবহার করতে শুরু করে তখন শব্দ আর শব্দ থাকে না, সেটাও রাজনৈতিক হাতিয়ারে রুপান্তরিত হয়। এবং সেই শব্দটি মানুষকে আহত করার জন্য একটি জোরাল হাতিয়ারওঠে হয়ে । আজ বিশ্ব এর চেয়ে বড় হেজিমনির চর্চা দেখছে। আজ সংস্কৃতির দিয়ে দখন করা হচ্ছে মনোজগত। এই মূহুর্তে পাশ্চাত্য কালচার ইসলামি জগতকে আক্রমন করতে উদ্যত। এই কাজে সবচেযে জোরাল ব্যবহার হচ্ছে বাক্য ও শব্দ। বাক্যর আক্রমন যে কত জোরাল তা বিশ্বকাপের ফাইনালে বোঝা গেছে। যদিও মাতারাজ্জি বলেছেন তিনি, জিদানকে সনত্রাসী বেশ্যার ছেলে বলেননি, কিন্তু পুরো ফ্রান্স দলে একজনকেই কেউ এই কথা বলতে পারে, কারন জিদানই পুরো ফ্রান্স দলে মুসলিম বংশদ্ভুত। ফ্রান্স দলে আরেকজন মুসলিম আছেন বটে , কিন্তু তিনি মুসলিম মেয়েকে বিয়ে করে ধর্মান্তরিত মুসলিম হয়েছেন। বিশ্বকাপ বিতর্কে ইতালির ডানপন্থি রাজনীতিবিদরা ফ্রান্স দল সমন্ধে বেবুনের দল, দূষিত রক্তের দল এই সব বিশেষনে অভিহিত করেছেন। এশিয়ান এনার্জি তেল গ্যাস রা কমিটির লোকজনকে বহিরাগত বলে অভিহিত করেছেন। লক্ষ্য করেছেন, বহিরাগত শব্দটি এখানে আর নিরপেক্ষ থাকেনি । এটা হয়ে উঠেছে তেল গ্যাস রক্ষা কমিটিকে আক্রমন করার হাতিয়ার । এই মূহুর্তে বাংলাদেশের জনগন এক দ্বৈত হেজিমনিতে পড়ে গেছে। একদিকে প্রতিনিয়তই তারা ভারত বিরোধী প্রচারনার মধ্যে দিয়ে অতিক্রম করছে, আবার প্রতিনিয়ত সে ভারতিয় সংস্কৃতির হেজিমনিতে পড়ে যাচ্ছে। আজ বাংলাদেশের ঘরে ঘরে হলিউডের হিন্দি গান, পোষাক । বাংলাদেশ এর খনিজ সম্পদ তাকে আরেক আনর্্তজাতিক হেজিমনির দিকে ঠেলে দিচ্ছে । বাংলাদেশ এখন মৌলবাদের চাষ হচ্ছে, এই হেজিমনির মধ্যে আনর্্তজাতিক সমপ্রদায় বাংলাদেশকে চিনতে শুরু করছ্ ।ে; হেজিমনি নিয়ে এত কথা লেখার উদ্দেশ্য হচ্ছে, প্রতিনিয়তই আমরা এই হেজিমনির মধ্যে আটকে যাচ্ছি, নিজেদেরই ভাষা যেন শক্তিশালি নিপিড়কের ভাষা হয়ে না উঠে। মানুষের সবচেয়ে বড় শক্তি তার চিন্তা করার ক্ষমতা। আমরা যেন সেই শক্তি হারিযে না ফেলি । আমার ভুল আস্ত মেয়ে আপনি নেটে একটা লেখা দিয়েছেন যার নাম ভালোলাগার একটি সন্ধ্যা । যেখানে লেখার সাথে একটা ছবিও ছিল । ছবিতে তিনজন ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছিল যার মধ্যে একজন পূরুষ। যার নাম আপনি বলেছেন নাজিম , সামনে একজন শ্বেতাংগ মেয়ে যার নাম সুজান কারল্যান্ড। আর একজন ছিল যার পরিচয় আপনি দেন নি। কৌশিকের মন্তব্য ছিল , অন্যটি কে? আস্ত অন্ধকারের মন্তব্য , সিমস সো ? আস্তমেয়ের মন্তব্য: ওরে বাবা সেখানে আস্ত মেয়ে নেই । মেয়েটা ফ্রেঞ্চ আলজেরিয়ান হাইব্রিড। আমি বুঝেছি আপনি তৃতীয় জনকে পরিচয় করানোর জন্য হাইব্রিড বিশেষনটি ব্যবহার করেছেন। এমনও হতে পারে সেটি আপনি? অথবা যেই হোন নিছক মজা করে পরিচয় দেওয়া । কিন্তু সমাজ বিজ্ঞানে হাইব্রিড শব্দটি প্রচন্ড বর্ণ বৈষ্যমূলক একটা শব্দ। যদিও জেনেটিক ইনিঞ্জনিযারিং থেকে কথাটা এসেছে । হাই ব্রিড মানে হল উচ্চ প্রজননশীল । দুটো ভিন্ন ধরনের ভ্রণ থেকে যে সমস্ত সমস্ত বর্ণ শঙ্কর প্রজাতির উদ্ভিদ যা বেশী ফসল দেয় । এ রকম ভাবে যদি কোন মুসলিম মেয়েকে পরিচয় করে দেওয়া হয় তাহলে তার মানে কি দাড়ায়? মালূ অথবা ম্লেছ শব্দটি দুষ্টামি করেও বলা যায় কিন্তু তবু তা এক ধরনের ঘৃনা মুলক শব্দ। এটা হতে পারে যে পুরো মন্তব্যটাই আমি সাম্যক ভাবে উপলদ্ধি করতে পারি নি। তাহলে আমি আমার মন্তব্যর জন্য দূ:খিত। আপনার লেখা চমৎকার । নেটে নিয়মিত লিখতে থাকুন।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৬ ভোর ৫:৩২
৯টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে দেখা - ১৩ মে

লিখেছেন জোবাইর, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:০৩

১৩ মে ২০০৬


দমননীতির অদ্ভুত কৌশল
সরকার নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দলের ওপর দমন নীতির আশ্রয় নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দ্রুত বিচার আইন ও পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে দমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×