somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলাম ও মেডিটেশন - শরীর + যুক্তি + আত্মা

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



Meditation এর উদেশ্য কি? কেন Meditation করবেন ? Meditation এর পদ্ধতি কি ?
আমার মতে আত্বিক উন্নয়নের জন্য, আত্ব নিয়ন্ত্রনের জন্য মানুষ meditation করে

আমি এই লাইনে খুব একটা অভিজ্ঞ না কিন্তু কিছু জিনিস আমাকে নাড়া দেয় ।

আত্বিক উন্নয়নের ব্যাপার টা কেমন ?
মনে করেন আমি একজন কৃপণ ব্যক্তি, পরশ্রী কাতর ব্যক্তি
তার মানে আমার আত্বিক ত্রুটি রয়েছে , এখানে উন্নয়ন দরকার

এর জন্য আমার meditation করা দরকার বা ধ্যান করা দরকার

আমার রাগ অতিরিক্ত , রাগ উঠলে হিতাহিত জ্ঞান থাকে না , এখানে আমার নিয়ন্ত্রণ দরকার

এর জন্য আমার meditation করা দরকার বা ধ্যান করা দরকার

কিভাবে করবো ?

আমরা মানুষ আত্বিক , যৌক্তিক আর জৈবিক গুনাবলীর সমন্বয়ে গঠিত

আমরা যখন পুরা মাত্রায় সচেতন থাকি তখন আমাদের জৈবিক বোধ গুলা যেমন গরম বা ঠান্ডা লাগা, ক্ষিধা লাগা ইত্যাদি সক্রিয় থাকে

আবার যৌক্তিক গুনাবলীর জন্য আমাদের চিন্তা ভাবনার অংশ ও খুবই সক্রিয় থাকে
যেমন আমরা চিন্তা করি বিকাল বেলা বাজারে যাব, বাটার দোকানে ২০% ডিসকাউন্ট এ স্যান্ডেল সেল করতেছে ওই গুলা দেখব পছন্দ হলে কিনব , মাসুদের সাথে দেখা করে শিক কাবাব দিয়ে সন্ধায় নাস্তা করবো , এর পরে বাজার করে বাড়ি আসব।

কিন্তু আমাদের আত্বিক অংশটার ব্যাপারে আমাদের খোজ খবর ই নেয়া হয় না

তো কিভাবে একটা মানুষের আত্বিক উন্নয়ন হবে ?

তো আত্বিক উন্নয়ন করতে গেলে প্রথমেই আমাদের এই ৩ অংশের মানুষের থেকে প্রথম ২ টাকে অফ বা নিষ্ক্রিয় করে দিতে হবে ।

জৈবিক অংশ আর যৌক্তিক অংশ কে অফ করে দিতে হবে ।

তখন পড়ে থাকবে শুধু আত্বা

এখন এই আত্বা কে আপনি যেই আকার দিতে চান সেইটা নিয়ে কাজ করুন

তো দেখি ইসলামে এই ধ্যানের ব্যাপারে কি আছে ?

উপরোক্ত যে জৈবিক আর যৌক্তিক সাইড অফ করে দেয়ার কথা বললাম , নামাজে ঠিক এরকম ই করার কথা বলা আছে ।

অজু করে নামাজের প্রস্তুতি মানে আত্বাকে জাগ্রত করা, আত্বায় একটা পবিত্র ভাব নিয়ে আশা হচ্ছে,
জৈবিক অংশকে ধীর স্থির করে ফেলা হচ্ছে, যৌক্তিক অংশকে সিগন্যাল দেয়া হচ্ছে আপাতত আগামী আধা ঘন্টার জন্য সমস্ত কাজ অফ , সমস্ত পরিকল্পনা স্থগিত ( এটা অবশ্য আজানের সময় থেকেই শুরু )



এর পরে অজু শেষে মসজিদে ঢোকার দুয়ার ( হে আল্লাহ আমার জন্য তোমার রহমতের দরজা খুলে দাও ) মাধ্যমে আল্লাহর সাথে যোগাযোগ শুরু।
খেয়াল করেন কিভাবে ধীরে ধীরে আত্বিক চেতনা সক্রিয় হচ্ছে আর জৈবিক ও যৌক্তিক চেতনা অফ হয়ে যাচ্ছে ।

এখন আপনি আর অস্থির চিন্তা করছেন না, চিল্লা চিল্লি নাই , লাভ লসের হিসাব নাই - আল্লাহর রহমত আর ক্ষমা এর দিকে আপনি চিন্তা করছেন

ক্লাস রুমে যখন আমরা ঢুকি তখন ও আমরা চিল্লা চিল্লি করি না, কিন্তু স্যার আজকে পরা ধরলে তো খবর আছে, শাহিনের কাছে থেকে কেমিস্ট্রি এর নোট্ তা নিতে হবে, আবুল শালা সেদিন ১০০ টাকা নিছিল এখন ও দেয় নাই, অর আজকে খপর করে দেব - যাই হোক মসজিদে ঢোকা আর ক্লাস রুমে ঢোকার সময় আত্বিক অবস্থার যে পার্থক্য আছে এইটা একটু খেয়াল করবেন , তখন বুঝা যাবে কিভাবে আত্বিক চেতনা সক্রিয় হচ্ছে আর জৈবিক ও যৌক্তিক চেতনা অফ হয়ে যাচ্ছে

এরপরে নামাজে দাড়ায়ে যখন আল্লাহু একবার বলে হাত উঠালেন - নামাজ যারা শেখায় তারা বলে এর মানে - এই মনে মনে চিন্তা করা যে - আল্লাহ সব চেয়ে বড় , আমার ব্যবসা , আমার চাকরি , আমার ফ্যামিলি এইগুলা সব গৌন - এইগুলাকে পিছনে ফেলে আল্লাহর সামনে আমি হাজির হলাম - যিনি বিশ্ব জগতের মালিক , আমি কিছুই না , আমার ডক্টরেট ডিগ্রী , আমার মন্ত্রিত্ব , আমার কোনো কিছুই কিছু না

এর পরে সুরা ফাতেহা পড়া শুরু হলো মানে আসমান জমিনের মালিক আল্লাহর সাথে কথপোকথন শুরু হলো এই বলে যে সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজগতের মালিক আল্লাহ তোমার , তুমি অসীম দয়ালু , পরম করুনাময় , বিচার দিবসের মালিক । এই মুহুর্তে আপনার আত্মা আল্লাহর বড়ত্ব আর দয়ার কাছে নত, আর বিচার দিনের ব্যাপারে ভিত আর দয়ার কাঙ্গাল হয়ে বিনয়ী ভাবে আল্লাহর সামনে হাজির

এখন কি আপনি গরম বা ঠান্ডা অনুভব করতেছেন? অথবা আবুল যে ১০০ টাকা নিছিল ঐটার কি খবর আছে ?

নামাজের দাবি হচ্ছে ঐগুলার খবর থাকবে না

তো এতক্ষণে আপনার জৈবিক আর যৌক্তিক চেতনা অফ হয়ে আত্তিক চেতনার উন্নয়ন শুরু হয়ে গেছে , আপনার আত্মা বিনয়ী হয়ে গেছে অলরেডি

এর পরে আল্লাহর কাছে আপনি বলতেছেন যে আল্লাহ, আমি তোমারি ইবাদত করি অন্য কারো ইবাদত করি না , তাই একমাত্র তোমার কাছেই সাহায্য চাই

এভাবে সুরা পড়তে থাকলেন আর আল্লাহর সাথে আপনার কথোপকথন চলতেই থাকলো

এর পরে রুকুতে গিয়ে আল্লাহর সামনে আপনার মাথা ঝুকায়ে আল্লাহর প্রতি আপনার আনুগত্য প্রকাশ করলেন

আবার মাটিতে আপনার নাক , কপাল, মাথা ঘষে আল্লাহর সামনে আপনার আনুগত্য আর ক্ষুদ্রতা প্রকাশ করে আল্লাহর ক্ষমার প্রত্যাশা করতেছেন - যেখানে শুধুই পরমাত্মার সাথে আত্মার সম্পর্ক , আর কিছু নাই

এরকম এক অবস্থায় মানুষ পৌছে যায় যে জৈবিক চেতনা এমন ই অফ হয়ে যায় যে -
আলী ( রা: ) এর শরীরে তীর লেগেছিল , নরমালি বের করা যাচ্ছিল না , তো উনি যখন নামাজে দাড়িয়েছেন তখন তীর টা বের করা হলো উনি টের ও পান নাই ।

এভাবে ৪ রাকাত বা bivinno সংখ্যক রাকাত নামাজ আদায় করলেন , প্রতিদিন ৫ বার করে

আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি আপনার আত্বিক উন্নয়ন এবং আত্ম নিয়ন্ত্রণ অবশ্যই আসবে
এরকম মানুষ রিক্সায়ালা বেশি ভাড়া চাইলে থাপ্পর মারবে না , গরিব কে দেখলে অবহেলা করবে না



সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×