somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আবেগ নয় বাস্তবতা ও সহনশীলতাই হোক সকলের চিন্তাশক্তির উৎস, রক্ষণশীলতা বা মৌলবাদীতা নয় মধ্যম-পন্থাই হোক সকলের একমাত্র পাথেয়।

১৮ ই আগস্ট, ২০০৬ ভোর ৬:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানুষ কোন যান্ত্রিক রোবট নয়, এর আবেগ আছে। তবে এই আবেগ অবশ্যই যোক্তিক হতে হবে, কেননা আবেগ্লপ্লুত হয়ে আমরা ভুল করতে পারি। সবসময়ই সতর্ক থাকতে হবে যেন আবেগ বাস্তবতাকে অতিক্রম না করে।

পৃথিবীর সফল জাতিগুলো থেকে আমরা এই শিক্ষা নিতে পারি। জাপানের হিরোসিমা, নাগাসাকিতে লিটলবয় আর ফ্যাটম্যান এর কান্ড-কারখানা জাপানীরা কেন পৃথিবীবাসী কখনোই ভুলবে না। অথচ আজকে কুইজুমির জাপান বুশের আমেরিকার প্রধান মিত্র। সহনশীলতার এমন নজির দেখাতে পেরেছে বলেই জাপান পৃথিবীর অর্থনৈতিক পরাশক্তি।

বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে কমিউনিষ্ট চীন হংকংয়ে পুঁজিবাদী ব্যবস্থা মেনে নিয়েছে। একদেশ দুই-নিতী বলে যারা চীনকে নিয়ে হাসি-তামসা করত তারাই আজ চীনের প্রসংসায় পন্চমুখ, কারণ চীনের প্রবিদ্ধি বৃদ্ধির হার 10এর মত যাকে এখন আমেরিকাও হুমকি মনে করছে।

বিতর্কিত ছোট রাষ্ট্র ইসরায়েল (এদের থেকে অনেককিছুই শেখার আছে যদিও আমি ব্যাক্তিগতভাবে ইসরায়েলকে আগাগোড়া অবৈধ রাষ্ট্র মনে করি), যার জন্য আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোর বর্তমানে অকুন্ঠ সমর্থন রয়েছে। অথচ এই ইহুদিরাই ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে বারবার বিতারিত হয়েছিল অতীতে। বিতর্কিত হলোকাষ্ট আর লিন্চ শব্দদুটি যেন ইউরোপ ও আমেরিকায় ইহুদীদেরই প্রতিশব্দ।

একটু খেয়াল করলে দেখবেন পিছিয়েপড়া জাতি মাত্রই সহনশীলতার অভাব রয়েছে। আমরা মুসলমানরা সহনশীলতার পরিচয় দিতে ব্যার্থ হয়েছি। আর আমরা বাঙ্গালীরা বরাবর উশৃঙ্খল জাতি। মোঘলদের সময় বার-ভঁূইয়াদের বিদ্রোহ, যে মোঘলদের সময় বাংলার অর্থনিতী ফুলেফেপে ওঠে (টাকায় 8 মন চাল!)। পলাশীর বিশৃঙ্খলার সুযোগ নিয়ে বাংলার মধ্য দিয়ে এই উপ-মহাদেশে ইংরেজদের প্রবেশ আবার এই বাংলাতেই সবচেয়ে বেশি প্রতিরোধের মুখোমুখি হয় ইংরেজরা। উশৃঙ্খল বাংলার প্রসাসনকে সুশৃঙ্খল করতে লর্ড কার্যনের বঙ্গভঙ্গ আবার বাংলার মানুষের বিদ্রোহের ফলে 5/6 বছরের মাথায় ব্রিটিস সিদ্ধান্ত বঙ্গভঙ্গ বাতিল। 47এ আবার বাংলা দ্বিখন্ডিত হওয়ায় বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনকারীরা তৃপ্তির ঢেকুর তোলে।


পূর্ববঙ্গ হল পূর্ব-পাকিস্তান, আবার আন্দোলন জ্বালাও পোড়াও। ইন্ডিয়াতে জাতীয় ভাষা হিন্দী হলে পাকিস্তানে উর্দূ হতে সমস্যা কোথায় ছিল (কোন ঘোষনা দিয়ে, আইন করে মানুষের মুখের ভাষা পরিবর্তন করা সম্ভব নয়, আমি যতটুকু জানি পৃথিবীর কোথাও ভাষার জন্য রক্ত দিতে হয়নি, বাংলদেশেও হত না। এমনকি আজকের পাকিস্তানেও মাত্র 9% লোক তাদের জাতীয় ভাষা উদর্ূতে কথা বলে। বাকি 90% লোকের তো কোন সমস্যা হয়না; সিন্ধু, বেলুচ, পান্জাবী, পশতু কতভাষা কতজাত। সমস্যা শুধু এক বঙ্গালীর। তাছাড়া উর্দূকি জিন্নার নিজের ভাষা ছিল নাকি যে উর্দূর প্রতি জিন্নার এত দরদ থাকবে? অত্যন্ত বাস্তববাদী এ মানুষটি চেয়েছিল সকল ধর্ম আর ভাষার লোককে একটি ল্লাটফর্মে নিয়ে আসতে। আমি আসলে ব্যাক্তিগতভাবে সকল বিভক্তির বিরুদ্ধে। ভাবুন একবার, যদি ভারত বিভক্ত না হত আজ আমাদের আমেরিকার চামচামি করতে হত না, আমেরিকাকে চ্যালেন্জ করতাম।)?

খুবই ভাল কথা, ভাষা আন্দোলনের হাত ধরে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। এখনত আমরা মুক্ত, ধমর্ীয় ও জাতিগত বিভেদ নেই। প্রায় 90% লোক বাঙ্গালী এবং মুসলমান। এবার শুরু হল নিজেরা নিজেরাই। আউয়ামী-লীগ এর তখন ঐশ্যরিক ক্ষমতা; তখন কি দরকার ছিল বাবা বাকশাল কায়েম করার? উশৃঙ্খল বাঙ্গালীরা তাদের নেতা মুজিব ও জীয়কে নির্মমভাবে হত্যা করল। তারপর সৈরাচার এরসাদ ও হরতালবাজ হাসিনা-খালেদার সময়। এদের সম্পর্কে কিছু বলে নিজেকে অপমান করতে চাই না, প্রয়োজনও নাই।

তারপরও দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, ভাবতে ভলই লাগে। বর্তমানে আমাদের দেশের প্রবিদ্ধি বৃদ্ধির হার 6এর উপর, দেশের সরকারের চেয়ে প্রবাসী বঙ্গালীর প্রেরিত রেমিটেন্সের ভূমিকাই এখানে বেশি ।

আমাদের শুধু দরকার স্থিতিশীল সরকার, বিনিয়োগের শুষ্ঠু পরিবেশ। বিদেশী বিনীয়োগই হতে হবে এমনটা নয়, 35ল প্রবাসী বাঙ্গালীর কিছু অংশও যদি বিনিয়োগে এগিয়ে আসে দেশের চেহারা পাল্টে যেতে বাধ্য।

আমাদের সুযোগ ও সম্ভাবনা উভয়ই আছে। মানুষ যদি হয় সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব, আশরাফুল মাখলুকাত, তাহলে এ সম্পদে আমরা সমৃদ্ধ। আমাদের শুধু একটা জিনিস দরকার আর তা হল সহনশীলতা যা নিশ্চিত করবে গণতন্ত্র, স্থিতিশীলসরকার, নিয়ে আসবে বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ; স্বার্থক হবে আমাদের স্বাধীনতা।


সকল মত পথ ভুলে, সবার উপরে মানুষ সত্য কথাটি সত্যিকার অর্থেই বিশ্বাস করে আমরা কি পারবনা একটু সহনশীল হতে?
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
১৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×