somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রিলিজিয়াস সিম্বলজি: সিজদা

০৮ ই আগস্ট, ২০০৬ সকাল ১১:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার মাথা নত করে দাও হে তোমার চরনধুলার পরে,
সকল অহংকার হে আমার ডুবাও চোখের জলে

ইসলাম মানে যদি হয় আত্নসমর্পন, তবে সেই স্পিরিটটাকে খুব চমৎকার ভাবে ধারন করেছে রবীন্দ্রনাথের এই গানটির লাইনগুলো। মাথা নত করার যে পদ্ধতি সেটাকে আরবী শব্দ সিজদা হিসেবে মুসলিমরা জানে। মজার বিষয় হলো সিজদা কেবল ইসলামের অংশ নয়, বৌদ্ধরা সিজদা করে, হিন্দুরা করে, ইহুদীরা করে, খ্রিস্টানরা সর্বাঙ্গাসনের মতো পুরো শরীর দিয়েই সিজদা করে। লেখার শেষে উদাহরন হিসেবে বিস্তারিত ছবির লিঙ্ক আছে, আগ্রহীরা দেখতে পারেন।

তবে বিভিন্ন ধর্মের সিজদা মূলত এই পোস্টের বিষয় না। আগ্রহটা সিজদার সিম্বলজি নিয়ে। এ ক্ষেত্রে মুসলিম মরমীদের ব্যাখ্যার দ্বারস্থ হতে চাই। মুসলিম মরমীদের ব্যাখ্যাটা সিজদার প্রতীক নিয়ে হলেও এর ভিতরে আবার কয়েক স্তরের সিম্বলজি আছে।

বলা হয়, [গাঢ়]যেভাবে ইসলামে সিজদা করা হয়, সেই শারীরিক অবস্থানটি প্রার্থনার মধ্যে একমাত্র অবস্থান যেখানে মাথা বা মস্তিষ্ক এর অবস্থান থাকে হৃদয়ের নীচে। অন্যভাবে বললে সিজদায় হৃদয়ের অবস্থান, মস্তিষ্কের উপরে। প্রতীকির মূল জায়গাটা সেখান থেকে শুরু।

মস্তিষ্ক বা মাথা হলো ইন্টেলেক্ট, যুক্তি বা চিন্তা করার ক্ষমতার প্রতীক। হৃদয় হলো অন্তরস্থ অনুভূতির প্রতীক। ইসলামি স্পিরিচুয়ালিটিতে হৃদয় আরো ব্যপক গুরুত্ব বহন করে। এই হৃদয় ফিজিক্যাল হৃদয় বা হৃদপিন্ড না। এই হৃদয় হলো আনমেনিফেস্ট বা অদেখা সেই অন্তর যার ব্যাপ্তির সীমাপরিসীমা নেই। তাই বলা হয় হৃদয় অসীম ভালোবাসা ধারন করতে পারে। আর মুসলিম মরমীরা তাই বলে হৃদয় হলো খোদার প্রকৃত সিংহাসন। সেজদা বা সিজদা হলো শারীরিক প্রকাশের ভিতরে আত্নসমর্পনের সবচেয়ে নিবিড় প্রকাশ। [/গাঢ়]

মানুষের মূল এসেন্সটা স্পিরিচুয়াল (স্পিরিট বা আত্না) হলেও দেহ মানুষের অস্তিত্বের একটা বড় অংশ। Our body is the vessel for our Spirit or Soul. Submission to God, thus have certain physical forms. Prostration is the most beautiful of its kind.

নবী মুহাম্মদ (সালাম) বলতেন, প্রার্থনার ভিতরে সিজদা হলো স্রষ্টার কাছে সবচেয়ে প্রিয় অবস্থান এবং এ কারনে সিজদায় প্রার্থনা করাকে তিনি ভালোবাসতেন। তিনি বলতেন সিজদা অবস্থায় প্রার্থনা করলে তা স্রষ্টা গ্রহন করেন। তিনি নিজেও প্রার্থনার অনেক বড় অংশ সিজদার অবস্থায় প্রার্থনা করতেন।

ক্রুশে বিদ্ধ হওয়ার আগের রাতে যিশু সিজদায় স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করেছিলেন। সেটা এখনো বাইবেলে স্পষ্ট বর্ণর্না আছে। And he went a little further, and fell on his face, and prayed, saying, O my Father, if it be possible, let this cup pass from me: nevertheless not as I will, but as thou {wilt}. - (KJV) Matthew 26: 39

সিজদা আছে ইহুদীদের তাওরাতেও, And the Lord spoke unto Moses and unto Aaron, saying: 'Separate yourselves from among this congregation, that I may consume them in a moment'. And they fell upon their faces, and said, O God, the God of the spirits of all flesh, shall one man sin, and wilt thou be wroth with all the congregation?- (KJV) Numbers 16: 20-22। ইহুদীরা এখনও তাদের প্রার্থনায় সিজদা করে থাকে।

মূল বিষয়ে ফিরে যাই, সিজদার এই অবস্থানটিতে ইন্টেলেক্টকে হৃদয়ের নিচে স্থান রাখার প্রতীকটা হলো, স্রষ্টার উপলব্দি যুক্তি, চিন্তার সীমাবদ্ধতার ভিতরে সীমিত করে আনা সম্ভব না। ইন্টেলেক্ট অবশ্যই মানুষের অন্যতম সেরা কম্পোনেন্ট যা তাকে সৃষ্টির সেরা জায়গায় নিয়ে যায়, কিন্তু ইন্টেলেকচুয়ালকেও আত্নসমর্পণ করতে হয় যে জায়গাটায় সেটা হলো স্রষ্টার প্রশ্নে। এর মানে এই নয় যে স্রষ্টাকে জানার জন্য ইন্টেলেক্টকে বিসর্জন দিতে হবে। বরং উল্টো। যে ইব্রাহিম (সালাম) কে ইসলাম ধর্মের আদি পিতা স্বীকৃতি দেওয়া হয়, তার স্রষ্টার অনুসন্ধানটা ছিলো পুরোপুরি ইন্টেলেক্ট নির্ভর। কিন্তু ইন্টেলেক্টকে বিদায় জানিয়ে আসার পরের স্তরাটা হলো আত্নসমর্পন। কেবল ইসলামই আত্নসমর্পনের কথা বলে না। পৃথিবীর সব ধর্মেই আত্নসমর্পনের বিষয়টা আছে।

বিজ্ঞান যতটাই সৃষ্টির মাহাত্ন্য বুঝতে সাহায্য করুক না কেন, খোদাকে কখনোই যুক্তির সীমানায় এনে ফেলা যাবে না এ্যাবসুলিউট সংজ্ঞাতে। কারন সেক্ষেত্রে আনলিমিটেডকে লিমিটেড হতে হবে যা স্রষ্টার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

কুরআনে যদি আসি, তবে সিজদা কেবল মাত্র প্রার্থনার অংশ নয়। সৃষ্ট দুনিয়ায় যাবতীয় বস্তুর যে ন্যাচারাল নিয়মাবলীর মুখাপেক্ষী হওয়াকেও (বিজ্ঞান যে নিয়মাবলী জানার জন্য কাজ করে থাকে) সিজদা বলা হয়েছে। এখানেও বোঝা যায় কুরআনে সিজদা একটা প্রতীক বিশেষ। আয়াতগুলো খেয়াল করুন:

13:15 To GOD prostrates everyone in the heavens and the earth, willingly or unwillingly, and so do their shadows in the mornings and the evenings.

16:49 To GOD prostrates everything in the heavens and everything on earth - every creature - and so do the angels; without the least arrogance.

22:18 Do you not realize that to GOD prostrates everyone in the heavens and the earth, and the sun, and the moon, and the stars, and the mountains, and the trees, and the animals, and many people? Many others among the people are committed to doom. Whomever GOD shames, none will honor him. Everything is in accordance with GOD's will.

সিজদা বিভিন্ন ধর্মে:
http://tinyurl.com/rdxwl

Click This Link
Click This Link
Click This Link

সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই আগস্ট, ২০০৬ সকাল ১১:৩৪
২৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে পর্দা মানে মার্জিত ও নম্রতা: ভুল বোঝাবুঝি ও বিতর্ক

লিখেছেন মি. বিকেল, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৩



বোরকা পরা বা পর্দা প্রথা শুধুমাত্র ইসলামে আছে এবং এদেরকে একঘরে করে দেওয়া উচিত বিবেচনা করা যাবে না। কারণ পর্দা বা হিজাব, নেকাব ও বোরকা পরার প্রথা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×