somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তথ্য অনুসন্ধান ঃ প্লিজ, কিছু তথ্য জেনে নিন

০১ লা আগস্ট, ২০০৬ দুপুর ২:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আপনাকে কিছু সঠিক তথ্য দিচ্ছি। পারলে একটু আমার অফিসে এসে খোঁজ নেবেন। প্লিজ। আসা যাওয়ার সিএনজি ভাড়াটা আমিই দিয়ে দেবো। সে নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না। আপনি যে অফিস এবং যার নাম উচ্চারণ করলেন- আমি সেই অফিসের তিনিই একমাত্র কর্মকতর্া। যার ঢাকাতে এক ছটাক পরিমাণ জায়গা জমি নেই। এমনকি সেই সংস্থা কর্তৃক জমি বরাদ্দের দরখাস্ত চাওয়া সত্ত্বেও জামানতের টাকার অভাবে জমির পাওয়ার সুযোগ থেকে সে বঞ্চিত হয়েছে। শুধু 50,000 টাকার জন্য সুযোগ থাকা সত্ত্বেও সে আবেদন করতে পারেনি। ঢাকা শহরে তার জমিতো দূরের কথা মাথা গুঁজবার কোন ঠাঁই নেই। বর্তমানে যে ফ্লাটে সে থাকে সেটা সরকারী আবাসস্থল। চাকরি শেষে ছেড়ে দিতে হবে। আবার সেই আগের মতই তাকে ভাড়া বাসায় অথবা রাস্তায় যেয়ে দাঁড়াতে হবে।

আপনি যার কথা বলছেন, তার বউ বিয়েসাদী কিংবা অন্য কোন জাঁকজমক অনুষ্ঠানে যেতে ভয় পায়। কারণ তার কোন দামি গয়না সেট বা তেমন কোন দামী শাড়ি কাপড় নেই। শখ করে ইমিটেশন পরে। তার বাকি সাত বোন সবাই বড়লোক। তাই অনুষ্ঠানে যাবার আগে তাদের কাছে থেকে শাড়ী গয়না ধার করতে হয়। সৌজন্য রক্ষায় তাই নিয়মিত এটাই করে যেতে হচ্ছে। এতে তার বউয়ের কোন খেদ বা আফসোস নেই। বরং গর্ব করে এই ভেবে যে তার ঘরে কোন অন্যায় বা হারামের পয়সা নেই। ধার করতে হয় মানুষের কাছে। প্রয়োজনে টাকা পয়সা নিতে হয় মানুষের কাছ থেকে। তা অবশ্যই পরিশোধ যোগ্য। সময় মত আবার ফিরিয়ে দেওয়াটা তাদেও কাছে অলিখিত একটা রেওয়াজ। তবে ভিা করেনা কারও কাছে। ভিক্ষা নিতে তাদের অহংকারে, মর্যাদায় বাঁধে।

তার বউ সরকারী কলেজের সহযোগী অধ্যাপক। হয়তো কিছুদিনের মধ্যে তিনি অধ্যাপক বা প্রিন্সিপাল হয়ে যাবেন কোন কলেজের। একজন ভাল শিক্ষক হিসেবে তার আদর্শ ও জীবন যাপন নিয়ে সেই মানুষ গর্ব করে। তিনি গর্বিত এমন একজনকে স্ত্রী হিসেবে পেয়ে। যে বিপদে আপদে, সময়ে অসময়ে, সংসারের অভাবের তাড়নায় ছেলেদের লেখাপড়া খরচের জন্য শশুর বাড়ীর গয়না, তার বাবার বাড়ীর গয়না সব এক এক করে বিক্রি করে দিয়েছে। সেই মানুষ আজও তা পূরণ করে দিতে পারেনি। এতে তার বউয়ের কোন দুঃখ নেই। এর চেয়ে বেশী একজন মানুষ আর কিই বা দিতে পারে?

গত 30.07.2006 তারিখে সেই মানুষের প্রমোশন হবার কথা ছিল। হয়নি। তার জুনিয়র এক কর্মকর্তাকে প্রমোশন দেয়া হলো। যে সবদিক থেকে তার চেয়ে জুনিয়র। যে কাজে যোগদান করেছে তার অনেক পরে- যে মেধা, কর্তব্য ও দায়িত্বে তার নখের যোগ্য নয়। সেই ব্যক্তি প্রমোশন পেয়েছে। সেই মানুষটা মুখ বুঁজে সব মান অপমান সয়ে নিয়েছে। নায্য বিচারের আশায় সে শুধুমাত্র একটা আবেদন পত্র পেশ করেছে। জানে তাতে তার কোন লাভ হবে না। তবুও তার আপোষ করতে ইচ্ছে করে না। তার একটাই অপরাধ সে ঘুষ দিতে পারেনি, তৈল মর্দন করতে পারেনি, তোষামোদ করতে পারেনি। তারা জানে সেই মানুষ তাদের কোন ঘুষের ভাগ দিতে পারবে না কারণ সে নিজেই ঘুষ খায় না। তাই সে তাদের কাছে সম্পূর্ণ অথর্ব, মূল্যহীন। তার যতই যোগ্যতা থাকুক। তবে কী লাভ বলুন মেধা তালিকায় প্রথম হয়ে? ভাল ছাত্র হয়ে। যোগ্য ও দক্ষ কর্মকর্তা হয়ে । কে করবে এর বিচার। আপনি? পারলে করুন। দোয়া পাবেন এ ব্যপারে নিশ্চিত থাকুন।

এবার অনেক তথ্য দিলাম আপনাকে মিঃ তথ্য অনুসন্ধানী। আমার জন্য একটু কিছু করুন। কিছু কথা শুনুন। হ্যাঁ আপনার কাছেই সাহায্য চাইছি। আপনিতো আমাকে চেনেন। নির্ভয়ে একটু এগিয়ে আসুন। আপনি কি জানেন আমার ছেলে ভাসির্টির ফী ঠিক মত দিতে পারবে না বলে নর্থ সাউথ ইউনি থেকে মুখ নীচু করে ফিরে এসেছে। অন্য এক কম খরচের কলেজে ভর্তি হয়েছে। ওকে ওর সম্মানটা পারলে ফিরিয়ে দিন। নতুবা আমাকে অথর্ব বলে গালি গালাজ করুন। কারণ আমি একজন অপদার্থ পিতা। আপনি আমাকে অভিশম্পাত করুন।

আচ্ছা আপনি কি বাজার থেকে দুটো লিচ-ু হ্যাঁ শুধু মাত্র দুটো লিচু কিনেছেন কখনও? নিজের ছেলেকে কিনে খাইয়েছেন কখনও? আমি একদিন দুটোর বেশী লিচু কিনে খাওয়াতে পারিনি। তাও আমার বউ কিনেছিল। ছেলেকে নিয়ে স্কুল থেকে ফেরার পথে ছেলের লিচু খেতে শখ হয়েছিল। ছেলে মায়ের মুখের দিয়ে চেয়ে বলেছিল, "আম্মু ওরা কি দুটো লিচু বিক্রি করে"? আমার বউ দুই ছেলের হাতে দু'টাকা দিয়ে দুটো লিচু কিনে দিয়েছিল। দোকানদার অবাক চোখে হা করে তাকিয়েছিল। নাহ্। তবুও সে কারো কাছে ভিক্ষা করেনি।

বিকেলে নাস্তা খাবে দুই ছেলে- হাতে মাত্র দুটাকা। বিস্কিট কিনতে যেয়ে আমার বড় ছেলে মুড়ি কিনে এনেছে। কারণ দু'টাকার মুড়ি সবাই খেতে পারবে। আমার 4/5 বছরের বাচ্চাও বুঝতো অভাবে পরলে কী করতে হয়। অথচ আমার শশুরের কোটি টাকার বিষয় সম্পদ। আমার বউ একবারের জন্যেও হাত পাতেনি। কারণ আমি। আমাকে সে ভালোবেসে বিয়ে করেছিল। তাই আমার জন্য মা বাবার কাছে কখনও ছোট হতে পারেনি। কিছুতেই পারেনি। অথচ বউয়ের জন্য আমি কিছুই করতে পারিনি। তাকে কিছুই দিতে পারিনি। সে শুধু আমাকেই অকাতরে দিয়ে গেছে তার সবকিছু। আমাকে ভিক্ষা করতে দেয়নি। সে শুধু আমার কাছেই ভিক্ষা চাইতো- এতোটুকু ভালবাসা। বলুন আমি কি না দিয়ে পারি ?

মিঃ তথ্য অনুসন্ধান। আপনাকে আমি কি দিতে পারি বলুন ? আপনিতো আমার কেউ নন। তবুও আমি আপনার শত্রু। তবে শত্রু হয়েও আপনাকে কিছু দিতে পারি। নেবেন ? দিতে পারি। আমার খুব প্রিয় কিছু। তা হলো ভালবাসা। আপনি চাইলে তাও দিয়ে দিতে পারি। আপনি আমাকে চিনেন না। বুকে হাত দিয়ে বলুন দেখি। আপনি সত্যিই আমাকে চেনেন কি না। কারণ মানুষ চেনার চোখ আল্লাহ্ আপনাকে দেননি। দিলে দেখতে পেতেন আপনার চার পাশে কত ভাল মানুষ রয়েছে। ভাল থাকুন। ভাল থাকতে শিখুন। ভাল ভাবতে শিখুন। যদি সত্যিই মানুষের রক্ত আপনার শরীরে থাকে তবে মানুষের মতই থাকতে শিখুন। ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
৬৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তীব্র তাপদাহ চলছে : আমরা কি মানবিক হতে পেরেছি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৯

তীব্র তাপদাহ চলছে : আমরা কি মানবিক হতে পেরেছি ???



আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকির মুখে আছি,
আমাদেরও যার যার অবস্হান থেকে করণীয় ছিল অনেক ।
বলা হয়ে থাকে গাছ না কেটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যবহারে বংশের পরিচয় নয় ব্যক্তিক পরিচয়।

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৫

১ম ধাপঃ

দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে দেখা হয়। মানুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলেই লুকিয়ে রাখে। এভাবেই চলাফেরা করে। মানুষের আভিজাত্য বৈশিষ্ট্য তার বৈশিষ্ট্য। সময়ের সাথে সাথে কেউ কেউ সম্পূর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×