somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রচন্ড অভিমান

২৫ শে জুলাই, ২০০৬ রাত ৩:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের পাশের বাসায় এক বাংগালী ডাক্তার তার স্ত্রী, এক ছেলে (ফয়সল) আর এক মেয়ে (তিনা) নিয়ে থাকতেন। ছেলেটা তখন মাত্র হাঁটতে শিখেছে। আমাদের বাসা আর ওদের বাসার মাঝখানে 10ফুটের মতো একটা করিডোর ছিল। বিকালে আমি শেখাকে কোলে নিয়ে বের হয়েছি (শেখা তখনও হাঁটতে শিখেনি)। এমন সময় ফয়সল বের হয়ে আসল। আমি এগিয়ে গেলাম, আর ওর সাথে খেলা শুরু করলাম, অনেকটা দাড়িয়া বান্ধার মতো, ওকে একটা রেখা বরাবর আটকে রাখলাম, ওটা আর পার হতে দেইনা, ও পাশ দিয়ে যেতে চাইলে আমি আগেই সামনে এসে দাড়াই। ছোট মানুষ আমার যন্ত্রণা স হ্য করলোনা, একটু একটু কান্নার মতন চিৎকার করলো। ওর বাবা বের হয়ে আসলে।
আমার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে মাথা নাড়লেন, মুখ দিয়ে চুক চুক শব্দ করলেন। তারপর ছেলেকে নিয়ে চলে গেলে। আমি বুঝলাম খেলাটা মোটেও ভাল ছিল না। ভেবেছিলাম ঘটনা এখানেই শেষ।
নাহ, ঘটনা এখানে শুরু। রাতে আম্মা বলল, তুমি ফয়সাল কে মেরেছো কেন? আমি অবাক হয়ে গেলাম, এটা কি বলে? কখন? কিভাবে? এতো পর্চন্ড অভিমান হলো, কেন আমাকে সন্দেহ করলো? আমি কি এরকম? আর তখন কিছুতেই মনে করতে পারছিলাম না, এটা কখন হলো?
তিনাদের (আমার চেয়ে বয়সে 1 বছরের ছোট) বাসায় যাওয়া বন্ধ হলো (আগে প্রতিদিন, প্রতি বেলায় যেতাম, তিনাও আসত)। তিনা পরের দিন এসে আব্বাকে বলে গেল, ও আর শিমুল (আমার ডাক নাম) আপুর সাথে খেলবে না, কারন শিমুল আপু ফয়সলকে মেরেছে। আব্বা আমার দিকে তাকালেন, আমি বাক হারা হয়ে রইলাম।
একদিন রাতে লং ড্রাইভে যাবার জন্য সবাই গাড়িতে উঠছি। তিনা ওদের বাসার ছাদ থেকে চিৎকার করে আব্বা-আম্মাকে বলছে, শিমুল আপু পঁচা, আমার ভাইকে মেরেছে, পাশে ওর বাবা-মা ছিল আর উৎসাহ দিচ্ছিল।
আম্মা শুধু বললেন, তুমি হলে পারতে? এভাবে দিনরাত বলতে?
আমার চোখ দিয়ে পানি এসে গেল, কিছু বললাম না, রাতের আঁধারে কেউ দেখলোও না। সারাক্ষন গাড়িতে চুপ করে বসে রইলাম।
আগেই বলেছি আমি আর তিনা প্রতি বেলায় (সকালে, দুপুরে, বিকালে, রাতে) খেলতাম, কখনও ওর বাসায়, কখনও আমাদের বাসায়।
একদিন বিকালে আমার ঠিক মনে ছিলোনা, কিভাবে যেন শেখাকে কোলে নিয়ে ওদের বাসায় নক করলাম। দরজা খুলে দাড়ালো তিনা আর ওর বাবা। তিনা বলল, আমি তোমার সাথে খেলবো না, তুমি ফয়সলকে মেরেছো। আমি চুপ করে রইলাম, হয়তো চলে যেতাম। এরমধ্যে ওর বাবা বলল, শিমুলকে তখন ভুতে ধরেছিল, মাঝে মাঝে এরকম হয়, তোমাকে ভুতে ধরলে, তুমি ফয়সলকে মারবে, এখন ভুত নেই, এখন খেলা যাবে।
তিনা আর আমি সাথে সাথে সব ভুলে আবার আগের মতোন খেলতে শুরু করলাম।
5/6 বছর খুব চমৎকার সময়, কতো স হজে সব কিছু ভোলা যায় তখন!
তবে কেন যেন আমার অভিমান গেল না, আমি কোনোদিন ওদের কাছে জানতে চাইনি, কিভাবে এই রকম মিথ্যা ধারনা ওদের হয়েছে....
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মাটির কাছে যেতেই..

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

মাটির কাছে
যেতেই..


ছবি কৃতজ্ঞতাঃ https://pixabay.com/

ঠিক যেন
খা খা রোদ্দুর চারদিকে
চৈত্রের দাবদাহ দাবানলে
জ্বলে জ্বলে অঙ্গার ছাই ভস্ম
গোটা প্রান্তর
বন্ধ স্তব্ধ
পাখিদের আনাগোনাও

স্বপ্নবোনা মন আজ
উদাস মরুভূমি
মরা নদীর মত
স্রোতহীন নিস্তেজ-
আজ আর স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেলা ব‌য়ে যায়

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩০


সূর্যটা বল‌ছে সকাল
অথছ আমার সন্ধ্যা
টের পেলামনা ক‌বে কখন
ফু‌টে‌ছে রজনীগন্ধ্যা।

বাতা‌সে ক‌বে মি‌লি‌য়ে গে‌ছে
গোলাপ গোলাপ গন্ধ
ছু‌টে‌ছি কেবল ছু‌টে‌ছি কোথায়?
পথ হা‌রি‌য়ে অন্ধ।

সূর্যটা কাল উঠ‌বে আবার
আবা‌রো হ‌বে সকাল
পাকা চু‌ল ধবল সকলি
দেখ‌ছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পর্ণআসক্ত সেকুলার ঢাবি অধ্যাপকের কি আর হিজাব পছন্দ হবে!

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৩ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:২৭



ইন্দোনেশিয়ায় জাকার্তায় অনুষ্ঠিত একটা প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশি নারীদের একটা রোবোটিক্স টিম। এই খবর শেয়ার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপিকা। সেখানে কমেন্ট করে বসেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ২৩ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:১৪


কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়
আমার বাবা-কাকারা সর্বমোট সাত ভাই, আর ফুফু দুইজন। সবমিলিয়ে নয়জন। একজন নাকি জন্মের পর মারা গিয়েছেন। এ কথা বলাই বাহুল্য যে, আমার পিতামহ কামেল লোক ছিলেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙালী মেয়েরা বোরখা পড়ছে আল্লাহর ভয়ে নাকি পুরুষের এটেনশান পেতে?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৩ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:২০


সকলে লক্ষ্য করেছেন যে,বেশ কিছু বছর যাবৎ বাঙালী মেয়েরা বোরখা হিজাব ইত্যাদি বেশি পড়ছে। কেউ জোর করে চাপিয়ে না দিলে অর্থাৎ মেয়েরা যদি নিজ নিজ ইচ্ছায় বোরখা পড়ে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×