somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশেষ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব-

১৬ ই জুলাই, ২০০৬ সন্ধ্যা ৬:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাঝে মাঝে মনে হয় গবেষণার প্রধান লক্ষ্য ধ্রুবক খুঁজে বের করা। প্রযুক্তির অগ্রগতি হয়েছে, অনেক ধাঁচের সফটওয়্যার আছে জটিল সব সমীকরনের সমাধান করার জন্য,কিন্তু সব সমীকরনের সমাধান হয় না, এটাই সত্য। তাই ধ্রুবকের এত কদর গবেষণায়। নতুন ধরনের গাণিতিক সমাধানের প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করার চেষ্টা চলছে, তবে সহজ কথাটা হহলো গবেষণার একটা দিক হলো ধ্রুবক খুঁজে বের করা, অন্যটা হলো বিভিন্ন প্রান্তিন মান নির্ণয়ের চেষ্টা করা। এই 2টা শর্ত পালন করে যেকোনো সমস্যার একটা সমাধানের চেষ্টা করা যায়।
এমন একটা প্রচেষ্টায় 1865 সালে ম্যাক্সওয়েল একটা ধ্রুবকের অস্তিত্ব প্রমান করলেন, আলোর গতি ধ্রুবক। বিদু্যতচুম্বকীয় বিভিন্ন সমীকরনের সমাধানে দেখা গেলো সেখানে একটা ধ্রুবক আছে যার মান কোনো মাধ্যমে আলোর গতির বর্গ।
এর আগে বলা গ্যালিলিওর আপেক্ষিকতার তত্ত্বে মৌলিক ধারনা ছিলো সময় এবং স্থানের একটা চিরকালিনতা আছে, সময় কোনো কিছু দ্্বারা প্রভাবিত হয় না। এবং যদিও পরস্পরের সাপেক্ষে চলমান প্রসঙ্গ কাঠামোর ভিতরে পার্থক্য নেই তার পরও প্রতিটা প্রসঙ্গ কাঠামোতেই পরিমাপিত বলের সংখ্যামান স্থির থাকবে।
এবং পরস্পরের সাপেক্ষে চলমান প্রসঙ্গ কাঠামো গুলোতে যদি আমরা বেগ পরিমাপ করি তাহলে তা পরস্পরের সাপেক্ষে প্রসঙ্গ কাঠামোর আপেক্ষিক বেগ এবং কোনো একটা প্রসঙ্গ কাঠামোতে বস্তুর বেগের যোগফল হবে। তাই একটা পরীক্ষণের সিদ্ধান্ত হলো যা ইথার মাধ্যমে পৃথিবীর বেগ এবং আলোর বেগের উপর পৃথিবীর বেগের প্রভাব নির্ণয় করতে পারবে। আমাদের ত্রিমাত্রিক প্রসঙ্গ কাঠামোকে আমরা সহজে দৈর্ঘ্য-প্রস্থ এবং উচ্চতা বিবেচনা করতে পারি। যেকোনো বস্তুর অবস্থান এই প্রসঙ্গ াঠামোর সাপেক্ষে নির্ণয় করতে হলে তার স্থানাংক জানলেই হবে। যদিও অন্য কোনো প্রসঙ্গ কাঠামোতে এই স্থানাংকের মান ভিন্ন হবে, কিন্তু যা বলছিলাম কিছু ধ্রুবক থাকবে যার মান আমাদের স্থানাংক ব্যাবস্থার উপর নির্ভর করে না। এমন প্রথম ধ্রুবকটা হলো বস্তুর দৈর্ঘ্য, অন্যটা হলো সময়, নিউটনের ধারনা এমনটাই ছিলো যে সময়ের মাপ প্রতিটা প্রসঙ্গ কাঠামোতেই একই।
আমরা দ্্বিমাত্রিক একটা ব্যাবস্থা কল্পনা করি যেখানে দৈর্ঘ্য বরাবর প্রসঙ্গ কাঠামোগুলো গতিশীল, প্রস্থ বরাবর প্রসঙ্গ কাঠামোর কোনো আপেক্ষিক গতি নেই। দৈর্ঘ বরাবর দিকটাকে আনুভূমিক এবং প্রস্থ বরাবর দিকটাকে উলম্ব বলা হয়ে সংক্ষেপে আঃ এবং উঃ।
দুটো প্রসঙ্গ কাঠামো চিন্তা করা যাক, একটা পৃথবীর সাপেক্ষে স্থির অন্যটা পৃথিবীর সাপেক্ষে অঃ দিকে ক1 বেগে গতিশীল। সুতরাং পৃথিবী সাপেক্ষে স্থির কোনো বস্তুঅন্য প্রসঙ্গ কাঠামোতে -ক1 বেগে গতিশীল হবে। যেহেতু কোনো উঃ বেগ নেই তাই 2টো প্রসঙ্গ কাঠামোতেই উঃ বেগ সমান থাকবে।
যন্ত্রের মধ্যে এমন একটা ব্যাবস্থা করা হলো যেনো আলোর তরঙ্গ 2 ভাগ হয়ে একভাগ যাবে উঃ দিক বরাবর অন্যটা যাবে অঃ বরাবর, যেহেতু আঃ বরাবর পৃথিবী ইথারের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তাই আলোর বেগ এই আঃ বরাবর পরিবর্তিত হবে এবং উঃ বরাবর আলোর গতির কোনো পরিবর্তন হবে না। এবং এই 2 বিচ্চিন্ন আলোক তরঙ্গকে আবার মেলানো হবে, যদি এই 2 তরঙ্গের ভেতরে দশার পার্থক্য থাকে তাহলে এটাকে কোনো পর্দায় দেখানো হলে ধারাবাহিক সাদাকালো রেখা দেখা যাবে, এবং এই রেখাগুলো স্থান পরিবর্তন করবে যদি আমরা যন্ত্রটাকে এদিক ওদিক ঘুরানোর চেষ্টা করি।
পরীক্ষা করা হলো, যন্ত্রকে বনবন ঘোরানো হলো এদিক ওদিক, কোনো পরিবর্তন নেই, সাদাকালো রেখার কোনো স্থানান্তর হলো না। তাবৎ জনগনের মাথায় হাত। যেহেতু নিউটনের ব্যাপক সাফল্য তাই তার প্রতিটা প্রসঙ্গ কাঠামোর সময় এক এই ধারনাকে একেবারে নাকচ করে দেওয়ার কোনো ইচ্ছা ছিলো না, গানিতিক সমস্যার সমাধান দেওয়া হলো, লরেনৎজ সমাধান করলেন, তার সমাধান হলো কোনো এক অজানাক ারনে দৈর্ঘ্য সংকোচন ঘটছে তাই আলোর গতি স্থির দেখাচ্ছে।
আইনস্টাইন এসে প্রথমেই বললেন পরীক্ষা করে যা দেখা গেছে তাই সত্য, আলোর গতি যখন স্থির দেখায় তখন আলোর গতি আসলেই ধ্রুব, নিউটনের সময় সব প্রসঙ্গ কাঠামোতে এক এই ধারনাটা সত্য না। এটাকে বর্জন করা দরকার। এই একটা প্রবন্ধ পুরা বিজ্ঞানের গতিপথ বদলে দিলো।আইনস্টাইনের সেই প্রবন্ধ বা গবেষণা নিবন্ধের পর পর সময়ের অবিনশ্বরতার ধরনাটা বাতিল হয়ে গেলো। বরং সময় প্রসঙ্গকাঠামো নির্ভর একটা বিষয় হয়ে গেলো।

পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশীবার প্রমানিত কোনো তত্ত্ব থাকলে এটা হচ্ছে সেই তত্ত্ব, প্রতিদিন অন্তত হাজার দশেক বার এটার প্রমান পাওয়া যায় গবেষণাগারে।
নতুন কি কি ধারনা আনলো আইনস্টাইনের বিশেষ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব
প্রথমতঃ আগে যে ধারনা ছিলো স্থান আর কাল পরস্পরের উপর নির্ভরশীল নয়, এই ধারনাটা বাতিল হয়ে গেলো।
বস্তুর সময় যেমন প্রসঙ্গ কাঠামো নির্ভর, তেমন অন্য সব রাশিও এই প্রসঙ্গ কাঠামোর উপর নির্ভরশীল- যেমন বস্তুর দৈর্ঘ্য, বস্তুর ভর,
তবে কিছু না কিছু বিষয়তো ধ্রুব থাকতে হবে, এই বিশেষ আপেক্ষিকতা তত্ত্বেও কিছু নতউন ধ্রুবক পাওয়া গেলো।
বস্তুর ভরবেগ এবং শক্তির যোগফল এমন একটা ধ্রুবক- এবং যেহেতু এটা পরস্পরের উপর নির্ভরশীল তাই শক্তি পরিবর্তিত হয়ে ভরে পরিনত হতে পারে, আবার ভর পরিবর্তিত হয়ে শক্তিতে পরিনত হতে পারে।
অন্য একটা ধ্রুবক হলো = প্রপার টাইম- যা অবশ্যই অপরিবর্তনীয় থাকতে হবে-
এই দুই শর্ত পালন করতে গিয়ে একটা বিশেষ অনুসিদ্ধান্ত চলে আসে, যা আমাদের নিশ্চিত করে, পৃথিবীতে শুধুমাত্র ভরহীন বস্তুই আলোর গতিতে চলতে পারে, অন্য কোনো কিছুই আলোর বেগে চলতে পারবে না বরং আলোর কাছাকাছি বেগে চলতে পারবে।
এবং অন্য আরও একটা বিষয়ে নিশ্চিত সিদ্ধান্ত জানায়- তা হলো, আমদের ভবিষ্যত এবং অতীত সম্পর্কিত ধারনা।
কোন অতীত আমরা পর্যবেক্ষণ করতে পারবো কোন ভবিষ্যতে আমরা পদার্পন করতে পারবো তার একটা নিয়ম চলে আসে এই তত্ত্বের ভিত্তিতে।


সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
১০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×