somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাসপোর্ট পেতে হয়রানি

০৯ ই জুলাই, ২০০৬ বিকাল ৫:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি ঢাকার একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করি। কোম্পানির প্রয়োজনে আমার পোস্টিং এলাকা নারায়ণগঞ্জ। 6-4-2006 তারিখে ঢাকার আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে যাই পাসপোর্ট তৈরির জন্য। এ কারণে ব্যাংক ড্রাফট করতে গিয়ে জানতে পারলাম, এখানকার ব্যাংক ড্রাফট জমা দিলে নাকি পাসপোর্ট পাবো না। কারণ আমার নিজ জেলা ফেনী। ইদানীং নতুন নিয়ম করা হয়েছে নিজ জেলার নির্দিষ্ট জোনে গিয়ে পাসপোর্টের জন্য সরাসরি টাকা জমা দিতে হবে। তাই ফেনী এলাকার জন্য যেতে হবে নোয়াখালী পাসপোর্ট অফিসে। পরে অফিস থেকে এক দিনের ছুটি নিয়ে বাড়িতে যাই এবং ফেনীর স্থানীয় এক এজেন্সির মাধ্যমে 12-4-2006 তারিখে নোয়াখালী পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে 2000 টাকার ব্যাংক ড্রাফটসহ
কাগজপত্র জমা দেই।

কথা ছিল এক মাস পর পাসপোর্ট পাবো। তাই 21-5-2006 তারিখে ফেনীর ঐ এজেন্সিতে ফোন করলে তারা জানালো যে, আমার নামে ফেনী থানায় মামলা আছে। সুতরাং তাড়াতাড়ি থানায় গিয়ে যোগাযোগ করতে হবে। পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট নোয়াখালী পাসপোর্ট অফিসে না পেঁৗছলে পাসপোর্ট বের হবে না। ফলে অফিস থেকে আবার ছুটি নিয়ে 23-5-2006 তারিখে ফেনী থানায় যাই। কোন্ এসআই-এর কাছে আমার ফাইল আছে তা জানার জন্য দায়িত্বরত ডিউটি অফিসারের কাছে গেলে তিনি জনৈক সাহেবের সঙ্গে দেখা করতে বললেন। সেই সাহেবের সঙ্গে দেখা করলে তিনি জানতে চাইলেন আমার স্মারক নম্বর। আমি না-সূচক জবাব দিলে তিনি ডিএসবি অফিস থেকে আমার পাসপোর্টের স্মারক নম্বর আনার জন্য বললেন।

ডিএসবি অফিসে এক ভদ্রলোকের কাছে স্মারক নম্বর জানতে চাইলে তিনি বললেন।। আজকে হবে না আগামীকাল আসেন। তাকে অনেক অনুরোধ করার পরে তিনি বিকেল চারটের সময় যেতে বলেন। ঐ সময়ে গেলে 50 টাকার বিনিময়ে তিনি একটি স্মরক নম্বর আমার হাতে ধরিয়ে দেন। স্মারক নম্বর নিয়ে থানায় গিয়ে ঐ নম্বর খুঁজে দেখি অন্য নাম। থানার ঐ সাহেব আমাকে আবার ডিএসবি অফিসে যেতে বলেন। ডিএসবি অফিসে গিয়ে দেখি ঐ ভদ্রলোক নেই। আবার 50 টাকার বিনিময়ে অন্য একজনের কাছ থেকে আরেকটি স্মারক নম্বর নিয়ে থানায় আসি। এবারও একই অবস্থা। ঐ নম্বরে অন্য নাম। এবার ডিএসবি অফিসে গিয়ে দেখি অফিস বন্ধ হয়ে গেছে। তারপর থানায় এসে আমি আর ঐ সাহেব মিলে 2006 সালের পুরো ফাইল খুঁজতে থাকি। দীর্ঘ দেড় ঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পরে আমার নাম ও ঠিকানা দেখতে পাই অন্য স্মারক নম্বরে। কোন্ এসআই-এর কাছে আমার ফাইল আছে, তা দেখে ঐ সাহেব বললেন, স্যার তো 15 দিনের ছুটিতে গতকাল দেশের বাড়ি গেছেন। আসবেন আগামী মাসের 3 তারিখে। আপনি এক কাজ করেন আমার কাছে 500 টাকা দিয়ে যান। আমি স্যার এলে সব রেডি করে আপনার রিপোর্ট নোয়াখালীতে পাঠিয়ে দেবো।

ঐ সাহেবের হাতে 500 টাকা দেবার পর তিনি আমার মোবাইলে সেই এসআই-এর বাসায় প্রায় সাত-আট মিনিট কথা বললেন এবং তাঁর উৎকোচ দাবি করলেন। পরে তাকে আরো 50 টাকা দিয়ে আমি চলে আসি। 5-6-2006 তারিখে ঐ এসআই-এর কাছে ফোন করলে তিনি বললেন আপনি এসে দেখা করেন, না হলে আপনার রিপোর্ট যাবে না। আমি তাকে জানালাম যে, একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে আমি চাকরি করি। কিছুদিন আগে থানায় গিয়ে তাঁকে পাইনি। এখন আমার পৰে কিছুতেই আসা সম্ভব নয়। তখন তিনি বললেন।। তাহলে আপনার অভিভাবককে পাঠান। বাড়িতে ফোন করে আব্বাকে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে বললাম। এসআই আব্বার কাছে বলেন যে, 500 টাকা না দিলে রিপোর্ট যাবে না। আব্বা তখন তাঁকে কিছুদিন আগে আমার 500 টাকা দিয়ে আসার কথা জানালে তিনি বলেন।। সে টাকায় হবে না। আরো 500 টাকা লাগবে। তখন বাধ্য হয়ে আমার আব্বা আরো 500 টাকা দেন।

এদিকে 25-6-2006 তারিখে ফেনীর এজেন্সি থেকে জানলাম, পাসপোর্ট ফরমে নাকি আমার বয়স ভুল দেয়া হয়েছে। তাই আমার সব সার্টিফিকেটের ফটোকপি জমা দিতে হবে। এজেন্সির ম্যানেজার বললেন।।আজকেই সর্টিফিকেট জমা দিতে হবে এবং সঙ্গে 300 টাকা লাগবে। ফ্যাক্স করে আমার সব সার্টিফিকেট পাঠালাম এবং বাড়িতে ফোন করে এজেন্সিতে 300 টাকা দিয়ে আসতে বললাম।
আমার পাসপোর্ট কবে পাবো, তা জানতে চাইলে ম্যানেজার সাহেব বলেছিলেন।। চার-পাঁচ দিনের মধ্যে আপনার পাসপোর্ট হয়ে যাবে। কিন্তু এ পর্যনত্দ আমার পাসপোর্টের খবর নাই। এ ব্যাপারে কার কাছে জিজ্ঞেস করলে আমার পাসপোর্টের খবর পাবো, তাও বুঝতে পারছি না। বিষয়টির প্রতি যথাযথ কতর্ৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যাতে শীঘ্রই পাসপোর্ট পেতে পারি এবং আর কেউ আমার মতো হয়রানির শিকার না নয়।

মোঃ শরীফুল ইসলাম,
হোসেন বোর্ড মিলস লিমিটেড,
ফতুলস্না, নারায়ণগঞ্জ।

ঃঃ দৈনিক ইত্তেফাক ঃ 10.07.2006 ঃঃ
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজকের ব্লগার ভাবনা: ব্লগাররা বিষয়টি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪১


ছবি- আমার তুলা।
বেলা ১২ টার দিকে ঘর থেক বের হলাম। রাস্তায় খুব বেশি যে জ্যাম তা নয়। যে রোডে ড্রাইভ করছিলাম সেটি অনেকটা ফাঁকা। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা খুব কম।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাপ, ইদুর ও প্রণোদনার গল্প

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪

বৃটিশ আমলের ঘটনা। দিল্লীতে একবার ব্যাপকভাবে গোখরা সাপের উৎপাত বেড়ে যায়। বৃটিশরা বিষধর এই সাপকে খুব ভয় পেতো। তখনকার দিনে চিকিৎসা ছিলনা। কামড়ালেই নির্ঘাৎ মৃত্যূ। বৃটিশ সরকার এই বিষধর সাপ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের সংগ্রামী জনতার স্লুইস গেট আক্রমণ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২১


(ছবির লাল দাগ দেয়া জায়গাটিতে গর্ত করা হয়েছিল)

শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

২৩শে এপ্রিল পাক সেনারা ফুলছড়ি থানা দখল করে। পাক সেনা এলাকায় প্রবেশ করায় মানুষের মধ্যে ভীতিভাব চলে আসে। কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাড়ির কাছে আরশিনগর

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০


বাড়ির কাছে আরশিনগর
শিল্পকলা একাডেমির আশেপাশেই হবে চ্যানেলটার অফিস। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করল মৃণাল। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না সে। এক-দু'জনকে জিগ্যেসও করল বটে, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না।

কিছুদূর এগোনোর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×