somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"প্রাপ্তি" আমাদের সবাইকে এক সূতোয় গেঁথে ফেললো

২৬ শে জুন, ২০০৬ দুপুর ১২:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটা রমরমা আড্ডার সমাপণী ভাষণটা কি খুব দরকার ছিল? আড্ডা শেষে আড্ডার উত্তাপ স্তিমিত হয়ে যায় জানা কথা। সেই আড্ডাই আবার জীবন ফিরে পায় অংশপ্রহণকারীদের নানা ব্যক্তির বিচিত্র অভিজ্ঞতা আর বর্ণনায়। অথচ সবাই দেখছি আমার লেখার জন্য ব্লগের পাতার দিকে তাকিয়ে আছেন। "কালপুরুষের লেখা কই" এই ছিল জিজ্ঞাস্য। আমি না হয় লিখলাম কিছু। কিন্তু আপনাদের অনুভূতির কথা মানুষ জানবে কি করে? আর বিভিন্ন ব্লগারদের সাথে সময় কাটানোর বিচিত্র অভিজ্ঞতা আর পরিচয় পর্বের নানা কথা শুনতে মানুষ বেশী আগ্রহী। আমার লেখার মুখবন্ধ বর্ণনার চেয়ে অন্যান্যদের অনুভুতির কথা বেশী রগরগে, মুখরোচক ও আকর্ষণীয়।

এই প্রথম ব্লগে লিখতে যেয়ে কেমন একটা ফাঁপড়ে পড়েছি। কী লিখবো না লিখবো; কোথা থেকে শুরু করবো; কোথায় শেষ করবো; কোন কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। সেদিন আপনারা আড্ডা শেষ করে যাবার পর থেকেই মনে করছিলাম এই মিলনমেলা নিয়ে কি কিছু লেখা যায়? সত্যি বলতে কি আমার ভাবনা কিছুতেই ডানা মেলতে পারছিল না। সব কিছু কেমন যেন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছিল।

ব্লগারদের আড্ডা পর্ব নিয়ে লিখতে বসে বুঝতে পারলাম আমি পেশাদার লেখক নই। একেবারেই আ্যামেচার। আমি লিখি নিজের ইচ্ছে আর খেয়াল খুশী মত যখন যা মনে আসে। বেঁধে ধরে কিছু লেখা আমার জন্য নয়। সেটাতে রসবোধের কমতি থাকাই স্বাভাবিক। সেদিনের আড্ডার সকল অনুভূতি আপনাদের মনে জমা হয়ে আছে। তাই আড্ডার ভাল মন্দ সব স্বাদ আপনারাই ব্যক্ত করবেন এমনটাই ভাবনা ছিল। কিন্তু আপনাদের অনেকের অনুরোধে এই দায়সারা একটা পোষ্ট দাঁড় করালাম। নাই মামা'র চেয়ে কানা মামা হয়তো ভাল।

আগেই বলে নিচ্ছি আমাদের সেই জমজমাট আড্ডার মধ্যমনি ছিল "প্রাপ্তি" নামের একটা ফুটফুটে ছোট্ট মেয়ে। "প্রাপ্তি" নামের এই মেয়েটি জীবনের সবচেয়ে অনাকাঙ্খিত এক প্রাপ্তিকে জড়িয়ে বেঁচে আছে। তার শরীরে বাসা বেঁধেছে এক দুরারোগ্য ব্যাধি। যাকে আমরা মরণব্যাধি ক্যান্সার হিসেবে জানি। সেই প্রাপ্তিকে ঘিরেই এই ব্লগ পরিবারের কিছু মানুষ তাদের ছদ্মনামের মুখোশ উন্মোচিত করেছিল গত 5ই জুন, 2006। প্রাপ্তিদের আগারগাঁও-এর বাসায়। কৌশিক ছিলেন ঐ আড্ডার প্রধান সমন্বয়কারী। সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছিলেন প্রাপ্তির ফুপু সারিয়া। আমাদের সেই আড্ডায় "প্রাপ্তি" র জন্য সামর্থ্যবান মানুষের সাড়া পাবার নিমিত্তে একটা ভিডিও ডকুমেন্টারী তৈরীতে ব্যস্ত ছিলেন আমাদের সতীর্থ এক ব্লগার সদা হাস্যোজ্জ্বল মুখের অন্যমনষ্ক শরৎ। যারা 5 ই জুনের আড্ডায় যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের সবার কথা আপনারা ইতিমধ্যেই জেনে গেছেন।

এবার 23 শে জুন, শুক্রবার। প্রাপ্তিকে ঘিরে আমাদের পরবতর্ী আড্ডার দিন ধার্য্য করা হয়েছিল। সেদিন সবার অফিস ছুটি তাই আড্ডাটা ভালই জমবে আশা ছিল। আড্ডার জায়গা হিসেবে নির্ধারিত হয়েছিল আমার সরকারী বাসভবনের খোলামেলা ছাদ। কৌশিক তার "কালপুরুষীয় ক্যানোপিতে ভার্চুয়াল ক্যারেক্টার ডাউনলোড" পোষ্টের মাধ্যমে আড্ডার জানান দিয়েছিলেন। উল্লেখ্য আড্ডাটা ছিল সকল ব্লগারদের জন্য উন্মুক্ত। অবশেষে সত্যিই এক প্রাণবন্তু আড্ডা দিয়েই শেষ হয়েছিল আমাদের সেই আড্ডা পর্ব।

23 শে জুনের আড্ডাকে সামনে রেখে সুনীল সমুদ্র অত্যন্ত চমৎকার ও হৃদয়গ্রাহী একটা লেখা পোষ্ট করেছিলেন, "প্রতীার 23 শে জুন ঃ 'প্রাপ্তি'র পরশ প্রার্থনায় -- প্রত্যয়ী পতাকাতলে পূণর্বার" এই শিরোনাম দিয়ে। এর আগে কৌশিকের কয়েকটি পোষ্ট ছিল ব্লগারদের আড্ডা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যসহ। সারিয়া নিজেও প্রাপ্তিকে নিয়ে লেখা পোষ্টসমূহে আড্ডা সংক্রান্ত অনেক তথ্য নিয়মিতভাবে উল্লেখ করে গেছেন।

23 শে জুন দুপুরের পর সারিয়ার একটা পোষ্ট দিয়ে শুরু হয় আড্ডার আমেজ । "প্রাপ্তি যাচ্ছে কালপুরুষের বাড়ী" এই পোষ্টের মাধ্যমে। আড্ডাবাজ ব্লগারদের মধ্যে আমার ফাটে সর্বপ্রথম পা রাখলেন- প্রাপ্তি, সারিয়া এবং প্রাপ্তির আম্মা। একটু পরেই ধানসিঁড়ির আগমন। ইতি মধ্যে হাসান, সাদিক, গোপাল ভার এবং তার মিসেস অনলাইনে প্রাপ্তিকে দেখার জন্য ব্যকুল হয়ে ছিলেন। প্রাপ্তিকে দেখার আশা তাদের পূর্ণ হয়েছে। তারা ওয়েব ক্যামের মাধ্যমে কিছুটা হলেও আড্ডার আমেজ নিয়েছেন। ফোনে কথা বলেছেন। আর সশরীরে উপস্থিত না থাকেতে পারার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

এরপর আসেন সুনীল সমুদ্র। যাকে আমি প্রথমে চিনতেই পারিনি। কৌশিক দম্পতির আসতে একটু দেরী হয়েছিল। সূর্য তখন ডুবু ডুবু। সন্ধ্যার পরও কয়েকজনের আগমন ঘটলো। আরাফাত, আবু সালেহ ও ঝড়ো হাওয়া। এসেছিলেন "আতাউর" যাকে সাহায্য করার কথা আমরা ভাবছি। সর্বশেষে এলেন রাগ ইমন এক অনুপম সাজে। সবার জম্পেস আড্ডায়, কবিতা, গানে, আবৃত্তিতে আসর ছিল একবারে জমজমাট। সবাই এতই আবেগ আপ্লুত আর একাত্ম হয়ে ছিলাম যে নিজেদের একটা পরিবার ছাড়া অন্য কিছুই ভাবতে ইচ্ছা করেনি। রক্তের বন্ধন ছাড়াও যে আত্মার বন্ধনে মানুষ আত্মীয় হতে পারে তারই প্রমান পেলাম সেদিন।

আড্ডা পরবতর্ী প্রথম পোষ্টটি আসে ঝড়ো হাওয়ার কাছ থেকে। ঝড়ো হাওয়া তার "অফ লাইনের আড্ডা- কালপুরুষের স্বর্গ" এই লেখার মধ্যে দিয়ে অত্যন্ত সহজ ও প্রাঞ্জল ভাষায় একটা ব্লগ পরিবারের আন্তরিকতার দৃশ্য তুলে ধরেছে। কৌশিক, ধানঁিসড়ি, আতাউর, রাগ ইমন এবং অন্যান্যদের সংপ্তি কিছু বক্তব্য এসেছে মন্তব্য আকারে। আমি অফিসের কাজে ব্যস্ত থাকায় ব্লগে কিছু মন্তব্য করা ছাড়া আর কিছুই লিখতে পারিনি গত দুদিন।

কৌশিকের "ব্লগারদের সভার কার্য বিবরণী ঃ সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছে" এই শিরোনামে একটা পোষ্ট নিয়ে সবার মাঝে যথেষ্ট কৌতুহল দেখা দেয়। দূরে ও কাছের যারা আড্ডায় আসতে পারেননি তারা ছবিতে কে কোন ব্যক্তি জানতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।

আড্ডার সাথে সম্পৃক্ত আরও একটা অসম্ভব সুন্দর ও হৃদয়কাড়া পোষ্ট এসেছে সুনীল সমুদ্রের হাত দিয়ে। তার এই পোষ্টের শিরোনাম ছিল, "অবশেষে সুনীল সমুদ্রের কবিতা" । কৌশিক আড্ডা নিয়ে আরও কিছু লিখবেন বলে জানিয়েছেন। আপনাদের আর বিরক্ত করতে চাইনা। আপনাদের সবার সুন্দর জীবন ও সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। সবাই খুব ভাল থাকুন।

সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
৩৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×