somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সবকিছু ভেঙ্গে পড়ে

১৭ ই জুন, ২০০৬ রাত ১২:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমরা প্রানী হিসেবে ভীষণ সীমাবদ্ধ। আখ বিক্রি করতে গিয়ে আমরা বলি চিনির মত মিষ্টি। তার মানে চিনিকে আমরা মিষ্টতার মানদন্ড বলে ধরে নিই। আমরা আমাদের পরিচিত সমস্ত মানবিক গুণাবলী থেকে শুরু করে, ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য সব কিছুকেই একটা র্নিদিষ্ট পাল্লায় নিয়ে মাপি। লোকটা একেবারে পীর-আউলিয়ার মত থেকে শুরু করে , তেঁতুলের মত টকে গিয়ে ঠেকেছে।
আমাদের বড় হওয়া, চিন্তার বিকাশ থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই আমরা জীবনকে একটা রুল টানা খাতার মধ্যে রাখি বা এরকম রাখতে অভ্যস্ত হয়ে বড় হই। মর্াজিন এর বাইরে আমরা যাই না, তাকাই না; এমনকি মর্াজিন এর বাইরে কি আছে সেটা নিয়ে ভাবিও না। আমি এখানে সেরকম মর্াজিন এর বাইরের একটা বিষয় নিয়ে লিখছি বা বলতে পারেন আমি আমার মর্াজিন আর একটু বাড়িয়েছি । যারা মর্াজিন এর বাইরের বিষয় নিয়ে আগ্রহী নন তারা এখানেই পড়া থামিয়ে দিন।
........................................................................................

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন বিদ্যাপীঠ । সারা বাংলাদেশের সব পেশা এবং শ্রেনীর প্রতিনিধিত্বকরে এই বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জীবনাচরণ এবং জীবনের গতি প্রকৃতি থেকে , আমাদের সমাজের একটা ছবি অনায়াসে কল্পনা করা যায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা পড়ালেখা করেছেন এবং যারা করেননি সবাই জীবনে কমবেশী একবার টি.এস.সি তে গিয়েছেন। টি.এস.সি অনেকটা পাবলিক প্লেস এর মত। টি.এস.সি এবং শামসুন্নাহার হল, রোকেয়া হল হয়ে ফুলার রোড র্পযন্ত অসংখ্য প্রেমিক প্রেমিকা জুটি হাত ধরা ধরি করে বসে থাকে। এই কপোত-কপোতীরা বিকেল থেকে শুরু করে মেয়েদের হল বন্ধ হবার আগ র্পযন্ত বসে থাকে। শুধু প্রেমিক -প্রেমিকা বললে ভুল হবে, প্রেমিক -প্রেমিকা ও তাদের পরিমন্ডলের বন্ধু-বান্ধবী রাও ওদের সাথে থাকে সব মিলিয়ে একটা এলাহী কারবার। আমি একসময় ফজলে রাবি্বতে থাকার সুবাদে টানা তিন মাসের মত প্রতিদিন সন্ধ্যায় রোকেয়া হলের সামনে আড্ডা দিয়েছি। যাই হোক এই যে মানব-মানবীর বসে থাকা এটা সবসময় প্লেটনিক ভাবলে ভুল হবে।
আমার এক বন্ধু টানা তিন বছর প্রেম করে ওর পেট খারাপ হয়ে গিয়েছিল। ডাক্তার ওর বাইরে খাওয়া পুরোপুরি নিষিদ্ধ করে দিল। ঢাকা শহরের কোথাও একটু বসে দুদন্ড কথা বলার জায়গা না পেয়ে, ফর্াস্ট ফুডের বেনচিকে আপন করেছিল ও। সারা শহরের সমস্ত ফর্াস্ট ফুডতো খাওয়া হয়েছেই , একই সাথে ফর্াস্ট ফুড ওর পেটের ডাইজেস্ট ক্ষমতা খেয়েছে।

এই যে ছেলে-মেয়েদের পাশাপাশি হাত ধরে বসে থাকা, এই নিয়ে বিভিন্নসময়ে বিভিন্নমানুষের সাথে আমার কথা হয়েছে। অনেকে প্রশ্ন করেছে আমি বিষয়টা কিভাবে দেখি, অনেকে অভিযোগ করেছে যে সন্ধ্যার পর ফুলার রোড দিয়ে যাওয়া যায় না।
গত 3/4 বছরে ঢা.বি.তে এই বিষয় নিয়ে বেশ তোলপাড় হয়েছে , হঠাৎ করে র্কতৃপক্ষ গা ঝাড়া দিয়ে মাঠে নেমেছে। ঐ রাস্তা গুলোতে বড় বড় হ্যালোজেন বাতি লাগানো হল। প্রক্টর এর নেতৃত্বে প্রচুর ছেলে মেয়ে কে পুলিশ হেনস্তা করল, এমনকি মুচলেকা ও নিল যে তারা আর কখনো এভাবে বসে থাকবে না। কর্াজন হলের মর্াবেল আচ্ছাদিত বারান্দা জুড়ে জায়গায় জায়গায় কে বা কারা আলকাতরা লেপন করল, যাতে কেউ বসতে না পারে। এই ধরণের প্রক্রিয়া জা.বি তে ও চলছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের বয়সটাই হচ্ছে স্বপ্ন দেখার বয়স। কেউ দেশ নিয়ে স্বপ্ন দেখে, কেউ সাহিত্য নিয়ে স্বপ্নদেখে, কেউ আবিষ্কারের স্বপ্ন দেখে, কেউ পাশের বেঞ্চিতে বসা ছেলে/মেয়ে টিকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে, এমনকি সবচেয়ে স্বপ্নহীনটাও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কিভাবে বেরুবে, কত তাড়াতাড়ি বেরুবে সেই স্বপ্ন দেখে। কারন বয়সটাই স্বপ্ন দেখার।

আমার দেড় বছরের অগ্রজ একবার বলছিল যে ছেলে-মেয়ে গুলি যেরকম ফালতু ভাবে বসে থাকে, ওদিক দিয়ে যাওয়া যায় না। আমি বলছিলাম তুমি ওদিক দিয়ে না গেলেই তো হয়। ওর কথা হচ্ছে এভাবে বসবে কেন? আমার কথা হচ্ছে, নিজের পছন্দের মানুষের পাশে হাত না ধরে কি বসে থাকা যায়, চুলে বিলি না কেটে কি থাকা যায়, ঐ চেষ্টা করতে গেলে অসুস্থ হয়ে যেতে হবে।

এখন আমাদের কে একটা কথা বুঝতে হবে, যারা হাত ধরাধরি করে বসছে তারা সবাই জানে
সৃষ্টির্কতা দেখছে উপর থেকে এবং তিনি পছন্দ করছেন না, কাঁধে মুনকার-নাকীর আছে তারা খাতায় লিখে রাখছে কতবার হাত ধরাধরি হলো(অন্য র্ধমে কাঁধে কি থাকে আমি জানিনা, দুঃখিত) এর পরেও তারা হাত ধরাধরি করছে। উপর ওয়ালার ভয় জয় করে যে আর্কষন, সেটা আলকাতরা বা পুলিশ দিয়ে কি রুখা সম্ভব।

আমরা বড় হই জন্ম রহস্যের নানাধরনের গল্প শুনে। আমি এক বাচ্চা কে দেখেছি , ও জানতো ওকে পলিথিনে করে বারান্দায় ফেরেস্তা রেখে গেছে। নর-নারীর স্বাভাবিক জৈবিক সমর্্পককে আমরা একধরনের হীনমন্যতা এবং অপরাধবোধের বস্তায় ভরে সবার অগোচরে রেখে দিই। বয়োঃসন্ধি প্রাপ্ত ছেলেদের বায়োলজির শিক্ষক হয় তখন পাড়ার ইঁচড়ে পাকা বন্ধু।

গোড়ায় গলদ শোধরানোর চেষ্টা না করে, আমাদের শিক্ষক গণ এবং প্রশাসন যা করছে সেটা কি আদৌ কোন পজিটিভ কাজ ?

=======================================

17'ই জুন , 2006
রাত 12: 31
কলাম্বিয়া।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
১৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যাড গাই গুড গাই

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

নেগোশিয়েশনে একটা কৌশল আছে৷ ব্যাড গাই, গুড গাই৷ বিষয়টা কী বিস্তারিত বুঝিয়ে বলছি৷ ধরুন, কোন একজন আসামীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে৷ পারিপার্শ্বিক অবস্থায় বুঝা যায় তার কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

টান

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২২


কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর
বিচ্যুতি ঠেকা‌তে ছু‌টির পাহাড়
দিগন্ত অদূর, ছ‌বি আঁকা মেঘ
হঠাৎ মৃদু হাওয়া বা‌ড়ে গ‌তি‌বেগ
ভাবনা‌দের ঘুরপাক শূণ্যতা তোমার..
কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর।
:(
হাঁটুজ‌লে ঢেউ এ‌সে ভাসাইল বুক
সদ্যযাত্রা দম্প‌তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরী

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৯

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরীঃ


১। নিজের সিভি নিজে লেখা শিখবেন। প্রয়োজন অনুযায়ী কাস্টোমাইজ করার অভ্যাস থাকতে হবে। কম্পিউটারের দোকান থেকে সিভি বানাবেন না। তবে চাইলে, প্রফেশনাল সিভি মেকারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×