বর্তমানটাকেই সবচেয়ে অসহ্য মনে হয়। যেন যা ঘটছে বর্তমানে সব খারাপ। স---ব। বন্ধুর মত তখন পাশে এসে বসে অতীত।অনেক কষ্টের মাঝে এক চিলতে শান্তির পরশ যেন। ছোট্ট জীবনের কত কথা এসে ভীড় করে মনের মধ্যে.....আর আমি ডুবতে থাকি ভালোলাগার গহীন স্মৃতির অতলে।
মনে পড়ে এক বৃষ্টি দুপুরের কথা..ঝুম বৃষ্টি হলো অনেকক্ষন ধরে...একটা বিছানায় ক্রমাগত শুয়ে বসে ভীষন বোর হয়ে অসুস্থ আমার মা খুব হালকা পায়ে একলাই বসার ঘরে এলো,আমি দৌড়ে উঠে তাকে ধরলাম। একটুখানি বসে মা অপলক তাকিয়ে রইলো বারান্দার গ্রিলের দিকে। আমিও তার দৃষ্টি অনুসরন করলাম। মা হঠাৎ তার দেবীর মত মুখে স্বর্গের হাসি ফুটিয়ে বললেন, "দেখো মামণি,বারান্দার গ্রিলে বৃষ্টির পানিগুলো কেমন মুক্তার মত ঝকঝক করছে!" আমি সেই সৌন্দর্য ছাপিয়ে আমার মায়ের মুখ দেখছিলাম...যে মানুষ সারা জীবন পার করে দিলো রান্নাঘরে আর সংসার সামলাতে ,তার মনের কোণে এত সৌন্দর্য লুকিয়ে থাকে! একটু অবসরে কেমন করে কাব্যিক হয়ে উঠেছিলো আমার মা...এত বছরের হলুদমাখা হাত বৃষ্টির দিকে বাড়িয়ে গুনগুন করে গান গেয়ে উঠেছিলো...
আজ আবার বৃষ্টির কান্না শুনে মনে পড়লো তোমায় মামণি...।আমি কিন্তু কাঁদছি না আম্মু , আমি খুব হাসতে শিখেছি জানো? ওই যে সেই একটা কবিতা আছে না? "মন ভালো নেই,মন ভালো নেই...কেউ তা বোঝে না..চোখ খোলা তবু চোখ বুজে আছি, মুখে ছায়া নেই....."! আমারও মুখে ছায়া নেই...শুধু আজ একটু বেশি মনে পড়ছে তোমায় মা....আজ বারোটা অবধি জেগে থাকবে না তুমি এই প্রথম আমার জন্মদিনে...এরকম বছরের পর বছর আরো কেটে যাবে...তুমি আর কখনোই থাকবে না...আর আমার বয়স এক এক করে বেড়েই যাবে শুধু....
বাড়ছে...বাড়ছে...বাড়ছে...........................................।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০