somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমেরিকান মোল্লা

১৩ ই জুন, ২০০৬ ভোর ৪:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি হলফ করে বলতে পারি আপনাদের জীবনে অন্তত: একবার হলেও এরকম অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। রাস্তায়, ছাত্র থাকা কালীন হলের রুমে কিংবা বাড়িতে এসে এসে মোল্লাদের ধর্ম বিতরন। আখিরাতে কি হবে, আমাদের কি করা উচিৎ এইসব প্যাঁচাল।

আমেরিকাতে এসে এরকম এক মোল্লার পাল্লায় পড়েছিলাম। সেই আফ্রিকান মোটকা বেটা কোন এক বাঙালী ভাইয়ের মাধ্যমে আমাদের কাছে এসে সেই পুরান প্যাঁচাল শুরু করল। কোন রকম হুঁ হ্যাঁ করে বিদায় করেছিলাম তারে। আর এরপর এই রকম কোন ফোন এলে বা সঙ্কেত পেলে সর্তক হয়ে যাই।

তো গত সপ্তাহের আগের শুক্রবার এক বাঙালী ভাইয়ের বাসায় আড্ডা বসেছে। ধুমসে মুড়ি-আচার-চানাচুর মাখা খাওয়া হচ্ছে। এমন সময় এক বড় ভাইয়ের এক আমেরিকান বন্ধু তার আরেক বন্ধুকে নিয়ে হাজির। ধরে নেই বাঙ্গালী ভাইয়াটার বন্ধুর নাম জো, আর জো এর বন্ধুর নাম জ্যাক।

তাদের সাথে কথা হতে হতে জমে উঠল আড্ডা। একথা সেকথা থেকে প্রসঙ্গ উঠল ইন্ডিয়ানদের নিয়ে, চাইনীজদের নিয়ে। তারা অভিনয় করে দেখাল চাইনীজরা কিভাবে কথা বলে, ইন্ডিয়ানরা কিভাবে কথা বলে। দেখে তো আমরা হাসতে হাসতে গড়াগড়ি। তারা স্বীকার করল আমাদের ইংরেজী অনেক বোধগম্য।

আরো আলোচনা করল ওরা যদি আমাদের দেশে যায় তাহলে ওদের কোনটা করা উচিৎ হবে না। তখন আমরা সম্ভাব্য ব্যাপার গুলো জানালাম। ওরাও বলল ওদের কি ভাল লাগে না আমাদের ব্যাপারে। আমরা তো বেশ খুশী তাদের সাথে কথা বলে।

জো আরও জানাল যে সে বাংলাদেশের ব্যাপারে অনেক আগ্রহী। সে বাংলা শিখছে। বাংলাদেশের বড় একটা ম্যাপ কিনে ঝুলিয়ে রেখেছে তার ঘরে। আমরা কে কোন শহর থেকে এসেছি তা ঠিকঠাক বলতে পারল। কোঁতায় কোঁতায় বলল "আমি বালো বাংলা বালতে ফারি না"। 1971 যে আমরা স্বাধীন হয়েছি সেটাও দেখি জানে। আমরা সকলে তো রীতিমত মুগ্ধ আর গর্বিত হয়ে ঘরে ফিরলাম।

এরপর আস্তে আস্তে থলের বের হল। সম্ভবত জ্যাক কোন একটি ক্রিষ্টান সংগঠনের সাথে যুক্ত। তারা চায় সেই বাঙ্গালী ভাইটাকে দলে ভেড়াতে। সেই প্রক্রিয়া এখনও চলছে। এই সুত্রে তাই আমার দেশের মোল্লাদের কথা মনে পড়ে গেল।

এদের বেশ কিছু ক্রিশ্চিয়ান সংগঠন আছে। তারা বেশ ভালো ভালো কাজ করে। আনর্্তজাতিক ছাত্ররা শুরুতে একগাদা টাকা দিয়ে পড়াশুনা শুরু করে। তাই নিতান্ত দরীদ্র অবস্থায় দিন কাটাতে হয়। এই সমস্ত ক্রিশ্চিয়ান সংগঠন তখন তাদের সাহায্য করে। আমাদের স্কুলে এরকম সংগঠন Friends of Internationals, দুটি তিনটি কাজ করে থাকে। একটি হল ফার্নিচার গিভাওয়ে, আরেকটি হল আউটিং - সস্তায় কোথাও ঘুরতে নিয়ে যাবে। কোন শর্ত নেই তাদের। আপনার খালি গিয়ে সুবিধাটুকু ভোগ করা আর কিছু চাইনা তাদের। কত্ত ভাল তাই না?

প্রথম যখন এলাম এখানে শুনলাম ফার্নিচার গিভাওয়ের কথা। সত্য মিথ্যা জানতাম না, তাই ভাবলাম গিয়েই দেখি কি হয়। প্রথমে একটা পাকিং লটে জড় হতে বলা হয়েছিল আমাদের। সেখান থেকে এক চাচা মিয়া এসে আমাদের নিয়ে গেল এক চার্চের গোডাউনে। লাইন করে দাঁড় করিয়ে বলল। ফার্নিচার ফ্রি তবে সবার ভাগ্যে একটা বড় এবং একটা ছোট ফার্নিচার জুটবে। একটা নাম লেখা কাগজ যে যেটাতে রাখবে সেটা তার। এরপর বলল আসুন আমরা গডের উদ্দেশ্যে মোনাজাত করি। ... আমেন। তো সেবার খারাপ জিনিস পাইনি। একটা প্রায় 150 ডলারের বক্স স্প্রিং ম্যাট্রেস আর একটা বেড সাইড টেবিল। আবার গাড়ি করে পৌছে দিয়ে গেল। মন্ধ নয়।

শুনেছি আউটিং গুলোতে বেশ সস্তায় নিয়ে যায়। খাবার, দাবার ইত্যাদি দেয়। একটু কষ্ট করে খালি গডের জন্য দোয়া করতে হয়। আসার সময় ফ্রি বুকলেট, গডকে আরো ভাল করে জানার জন্য।

আমেরিকান মোল্লাগিরি আর কাকে বলে! একবার ও ছায়া মাড়িয়েছি, বার বার নয়।


সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে আপনি হাদিস শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫


,
আপনি যদি সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে হাদিস শুনতে চান, ভালো; শুনতে থাকুন। আমি এসব প্রফেশানেলদের মুখ থেকে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, বাজেট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×