somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সেক্সি শহর লাস ভেগাস - 3 (শেষ)

০৪ ঠা জুন, ২০০৬ সন্ধ্যা ৬:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তৃতীয় দিন আমাদের পরিকল্পনা ছিল সেমস্ত জায়গা গতদিন দেখা হয়নি সেগুলো দেখা। আমাদের অন্যতম ইচ্ছা ছিল স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের রাইডগুলো চড়া। তাই সকালে শুরুতেই চলে গেলাম সেখানে।

স্ট্র্যাটোসস্ফিয়ার হচ্ছে একটা প্রায় হাজার ফিট উচুঁ দালানের মত আর্কিটেকচারাল স্থাপনা। এর উপরে রয়েছে টপ অফ দ্যা ওয়র্ালড নামের রেস্তোঁরা এবং তিনটি রাইড। আমাদের লক্ষ্য ছিল এই তিনটি রাইডে চড়া।

টিকিট কেটে লম্বা লাইন পাড়ি দিয়ে পৌছুলাম হাজার ফিট উপরে রাইডগুলোর কাছে। প্রথম রাইড যেটাতে চড়লাম সেটার নাম বিগ শট। বেশ কিছু উপরে তুলে হঠাৎ ছেড়ে দেয় রাইডটিতে। ফলে বেশ কিছুক্ষন ওজনহীনতার অনুভুতি। ওয়েবসাইটে দেখেছিলাম অভিকর্ষজ ত্বরনের চার গুন বেশী টান অনুভুত হয় এটাতে, যেখানে নভোচারীদের সম্মুখীন হতে হয় মাত্র তিনগুন অভিকর্ষজ ত্বরনের। বেশ এক্সাইটিং, কিন্তু স্বল্পস্খায়ী মনে হয়েছে রাইডটি।

xscream নামের রাইডটিতে চড়া হলো এরপর। হাজার ফিট উপর থেকে ছুঁড়ে বাইরে ফেলে দিল এরকম একটা অনুভুতি হয়। উপরে তুলে যখন হঠাৎ ঝাঁকিয়ে নীচে ফেলে দিবে এরকম একটা শট দেয় তখন আপনার আর হাজার ফিট নীচে রাস্তার মাঝখানে আর কিছুই নেই একটা ম্যাগনেটিক বেলট ছাড়া। এই ভয়ে হাইটফোবিয়াক্রান্ত অমিত কোন রাইডেই চড়ল না।

টাওয়ারটির মূল আর্কষন insanity রাইডে লাইন ছিল সবচেয়ে লম্বা। এটা আর কিছুই না, হাজার ফিট উপর থেকে ঝুলতে ঝুলতে শহর দেখার এক চর্কি। তবে অদ্ভুত এক ফিলিংস হয়, সে বলে বোঝানো যাবেনা। এর সম্বন্ধ্যে আরো জানতে এই উইকিপিডিয়া এন্ট্রি দেখতে পারেন: Click This Link

এরপর লাস ভেগাস শহরের দীর্ঘ জ্যাম পেরিয়ে দুপুরের খাবার শেষ করে একটু ঘোরাঘুরি করতে সন্ধ্যা হয়ে এল। আমাদের লক্ষ্য ছিল সাইরেনস অভ ট্রেজার আইল্যান্ড শো টি দেখব। শো শুরু হবে সাতটায় কিন্তু আমরা জায়গা পাবার আশায় সাড়ে ছয়টায় গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলাম।

শো টি আসলে একটি ছোট্ট নাট্যাংশ। ট্রেজার আইল্যান্ডের মূল ট্রেজার হচ্ছে সুন্দরী নারীরা। সেখানে আটকা পড়ে এক শক্ত সর্মথ পাইরেট। তাকে ছুটিয়ে নিতে আসে তার পাইরেট সঙ্গীরা। শুরু হয় কথা কাটাকাটি আর যুদ্ধ। অবশেষে জয় হয় ট্রেজার আইল্যান্ডের রমনীদের এবং যুদ্ধ পরাস্ত পাইরেটরা আশ্রয় নেয় সেই মায়াবিনীদের ছায়াতলে।

আমি ঘটনাটা যতটা সাদামাটা ভাবে উপস্থাপন করলাম প্রেজেন্টেশনটা তেমনটা নয় মোটেই। সুন্দরী রমনীদের নৃত্য, ধীরে ধীরে পাইরেটদের নৌকার আগমন, বাদানুবাদ, রিয়েল কামান দাগার ইফেক্ট দিয়ে যুদ্ধ, ট্রেজার আইল্যান্ডে সত্যি সত্যি আগুন লেগে যাওয়া, রমনীদের আক্রমনে পাইরেটদের জাহাজ সত্যি সত্যি ডুবে যাওয়া এই সমস্ত ইফেক্ট দিয়ে সত্যি অসাধারন এই শো টি।

পুরো শোটি হয় ট্রেজার আইল্যান্ড হোটেলের বাইরের লেকে। দুটো শো হয় প্রতি সন্ধ্যায়, আমরা প্রথমটি দেখি যেটা অপেক্ষাকৃত দিনের আলোতে অনুষ্ঠিত হওয়ায় লাইট এফেক্টগুলো অথটা চোখে পড়েনি। পুরো শোটা বাইরে হয় বলে মানুষের ভিড়ে অপেক্ষাকৃত খাটোরা শোটা উপভোগ করতে পারেনা। আর যারা হলিউডের শো দেখে এসেছে তাদের কাছে অতটা জাঁকজকমপূর্ণ মনে হয়নি শো টি। আরো জানতে: Click This Link

এরপর আমরা হোটেল মিরাজের ভলকানো শো দেখতে গেলাম। হোটেলের সামনের লেকে ভলকানিক ইরাপশনের একটা পাঁচ মিনিট ব্যাপি সিমিউলেশন দেখায় সেখানে। ভালই, তবে অকটা আহামরি কিছু মনে হয়নি।

আমাদের পরবতী আর্কষন ছিল হোটেল বালাজিওর ফাউন্টেইন ড্যানস। সন্ধ্যা নামার পর প্রতি 15 মিনিট অন্তর অন্তর শোটা দেখায়। একটা করে বাছাই কৃত গান বাজে আর তার সাথে লেকের মধ্যে ফোয়ারা গুলো নাচতে থাকে। অসাধারন এই শো টি এদিনও বন্ধ থাকবে এমনটা শুনতে পেলাম কয়েকজনের কাছে।

আমরা লেকের সামনে দাঁড়ানোর কিছুক্ষন পরেই শুরু হল শো টি। লেক ঘেরা দেয়ালে পিলারে অবস্থিত স্পিকারে ভেসে আসা গান আর সেই সাথে আলোকিত ফোয়ারার অসাধারন নৃত্য দেখে অভিভূত হয়ে পড়লাম আমরা। সেই সাথে অভিভূত কয়েকজন বিদেশীকে দেখলাম ভালবাসা বিনিময় করতে প্রিয়জনের সাথে।

শেষ পর্যন্ত আমরা গোটতিনেক গানের সাথে ফাউনন্টেইন ড্যানস দেখে রওনা দিলাম ঘরের উদ্দেশ্যে। সঙ্গে মুগ্ধ বিস্ময় আর ভবিষ্যত আবার লাস ভেগাস আসার দৃঢ় প্রত্যয়।

ছবি পরিচিতি
1। স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার (ইন্টারনেট থেকে)
2। স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার থেকে লাস ভেগাস শহর
3। ইনস্যানিটিতে আমরা
4। ইনস্যানিটিতে আমরা - অফিসায়ল এডিটেড ফটো
5। স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে আমরা
6। ট্রেজার আইল্যান্ড শোতে রমনীরা
7। ট্রেজার আইল্যান্ড শোতে পাইরেটরা
8-9। হোটেল মিরাজের ভলকানো শো
10। ফাউন্টেইন ড্যানস

ফাউন্টেইন ড্যানস ভিডিও
Click This Link

সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রজাতির শেষ জীবিত প্রাণ !

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫১



বিবিসির একটা খবর চোখে এল সেদিন । উত্তরাঞ্চলীয় সাদা গন্ডার প্রজাতির শেষ পুরুষ গন্ডারটি মারা গেছে । তার নাম ছিল সুদান । মৃত্যুর সময় তার বয়স ৪৫। বিবিসির সংবাদটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মধ্যে সে একজন ।।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯



আপনারা কতজন Umma Kulsum Popi চেনেন, আমি ঠিক জানি না। আমার পর্যবেক্ষণ মতে, বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের একজন হলেন উনি। যদি বলি দেশের সেরা পাঁচজন কনটেন্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পোষ্টে যদি ক্রমাগতভাবে ০ কিংবা ২/১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, বুঝবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



আপনার পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০ কিংবা ১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, তখন খোঁজ নিলে দেখবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

কোন বিষয়ের উপর অনেক মানসম্পন্ন পোষ্ট লিখলেও সামুতে আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×