somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাতৃত্বকালীন ছুটির পর অফিস ফেরার প্রস্তুতি

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অলস দুপুরে নিরলস খাটা মানুষ আপনি। বুদ্ধিদীপ্ত, কর্মচঞ্চল! টিম কে লীড করছেন, মিটিং, ব্রিফিং মিলে নয়টা – পাচঁটার টগবগ জীবন। ক্যারিয়ারটা খুব গোছানো; আপনার গোছানো সংসারের মতই। কোথাও কোন কম্প্রোমাইসের লেশ মাত্র নেই। এরই মাঝে জীবনে পরিবর্তন। সময়, স্বামী-স্ত্রীর কেমিস্ট্রি, পরিবারের প্রেশার কিংবা সারপ্রাইস গিফট- এই মাল্টিপাল অপশনের যেকোনো একটিতে গোল্লা ভরাট করে আপনি সন্তান সম্ভবা। তাতেও কোন খামতি বা কমতি নেই আপনার- অফিসের প্রতি ডেডিকেশনে। তাছাড়া আপনার টিমও আপনাকে যথেষ্ট স্পেস দিচ্ছে- তা সহানুভূতি বা দূর্বল ভেবে নয়; এবং আপনি তা ননও।
প্রেগনেন্সির নয়টা মাস যেন নয় যুগ! ডিউ ডেট এর ক্যালেন্ডার-এ ক্রস মার্ক ফেলতে ফেলতে আপনি ক্লান্ত হয়ে পড়লেও দিন এগোচ্ছেনা বলেই ঠেকে। কিছুটা শারীরিক অস্বস্তি কিংবা অনাগত সন্তানকে নিয়ে আবেগের উথাল পাতাল যা- ইহোক না কেন দিন না কাটার এই দিনগুলো সত্যিই অসাধারণ। দূঃখজনক হলেও সত্য যে আপনার পেটের পটে আঁকা শিশুটি, আপনার কোলে যেদিন থেকেই তার শরীরের ওম ছড়িয়ে দেবে, সেদিন থেকেই দিনগুলো লাগাম ছাড়া! ম্যাটারনিটি লিভ! হায়রে আমার ম্যাটারনিটি লিভ!
বুদ্ধিদীপ্ত, কর্মচঞ্চল, ডেয়ারিং ওয়ার্কিং ওমেন, যে এইতো ছ’মাস আগেও দাবড়িয়ে বেড়িয়েছেন অফিস- আজ মনে হচ্ছে সব কেন যেন অনিশ্চিত। বাবুর কেয়ার, অফিসের ডেস্ক – সব! সব নিয়েই হিম-সিম খাচ্ছেন। ওয়েট ইন দেয়ার গর্জিয়াস! আপনার জন্য কিছু আছে বলার- যা আমি অন্যদের উপদেশ থেকে পেয়েছি কিংবা হোচোট খেয়ে শিখেছি আর ভেবেছি- যদি কেঊ বলবার থাকত!
কর্মক্ষেত্রে ফিরে যাওয়ার জন্য আপনার যেমন রয়েছে শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতির ব্যপার, তেমনি রয়েছে ছোট্ট শিশুটার-ও। ওকেও মানসিক ভাবে প্রস্তুত করতে হবে বলেই আপনাকে শক্ত, দৃর ও ধৈর্যশীল হতে হবে। এই সময়টা আর অফিস পাড়ায় ফেরার প্রথম কইয়েকটা দিন খুব বেশি ক্রুশিয়াল।

1. অফিসের সময়ের সাথে সাথে গুছিয়ে নিন রুটিন

ধরুন আপনার অফিস টাইমিং ৯-৫ টা। হাতে গোনা কিছু দিন আগে থেকেই এই টাইমিংটা প্রাকটিসে আনুন। সকাল সকাল ঘুম থেকে ঊঠে নিজেকে ও বাবুর প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো অর্গানাইজ করুন যাতে এমন ঠেকে যে একটু পরই আপনি ছুট দিবেন অফিসে। এটা প্রয়োজন- যাতে অফিসের দিনগুলোতে আপনার খুব বেশি এডজাস্ট এর প্রয়োজন না হয়; ওসময় এডজাস্ট করার থাকবে বহু কিছু।


2. গোটা-কদিন আগেই জয়েন করুন; ছন্দ আনতে

একে বারে কাগজ-এ কলমে জয়েন না করলেও হাতে ক’দিন রেখেই জয়েন করুন। এত দিনের লম্বা গ্যাপে আপনি যাতে নিজেকে একেবারেই বেসামাল না মনে করেন তার জন্যই রিল্যাকস্‌ড ওয়েতে অফিস করুন। বুঝে নিন আপনার দাবড়ানি-চাপরানি খাওয়া ডেস্ক আর ডেস্কটপটা।

3. বাবুর ফিডীং হ্যাবিট

বাবুর জন্যও হুট করে আপনাকে ছেড়ে থাকাটা বেশ কঠিন। বিশেষ করে ওর ফিডিং রুটিনের ক্ষেত্রে। এক্সক্লুসিভ ব্রেস্ট ফিডিং এ অভ্যস্ত হলে ওকে আস্তে ধিরে ফিডিং বোতল বা চামচে পাম্প করা দুধ অথবা ফরমুলা খাওয়ানোর অভ্যস করা উচিত। রিসার্চ বলে যে সাধারণত দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যে এই হাবিট না গড়তে না পারলে পরবর্তীতে বেশ বেগ পেতে হয় মায়েদের। তাই যারা কাজে ফিরবেনই, তাদের আগে থেকেই বাবুকে বোতল বা চামচে খাওয়নোর অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। তাছাড়া ছ’মাস থেকেই যেহেতু বাবু বাড়তি খাওয়া শুরু করে থাকে; তাই গোটা দশেক দিন আগে থেকেই কিছু কিছু (পিউরী করা ভাত বা সুজি) খাবার ইনট্রুডিউস করা মন্দ নয়।

4. বাবুর ডে-লং কেয়ার

বাবুকে কার কাছে রাখবেন কাজে ফিরবার পর তা নিশ্চিত এত দিনে ঠিক ঠাক। তাই অফিস রুটিনের সাথে তাল মিলিয়ে বাবুকে তার কাছে অভ্যস্ত করুন। আপনি পাশে থেকেও একটু দূরে থাকুন। এতে বাবুর অভ্যস্ততার সাথে সাথে আপনি বাবুর দেখভালে নিযুক্ত যিনি থাকছেন (নিকট আত্মিয়ই হোক কিংবা পেইড লেবার) তারও শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতি গড়ে উঠছে, একই সাথে বাবুর সাথে তার কেমিস্ট্রি। সেই সাথে আপনার আস্থা আর মানসিক স্থিরতাও অনেকটাই একটা শেপ-এ চলে আসবে।

5. নিজেকে প্রস্তুত করুন

ক্যরিয়ারিস্ট বলেই যে আপনি শিশু ও সংসারের প্রতি অবহেলা বা অন্যায় করছেন তা নয়। আপনি যা করছেন সবই পরিবারের জন্য। এটা সত্য, কাজে ফিরবার আগের কটা দিন ও ফিরবার পরের কতগুলো দিন খুব টাফ। এসময়েই অনেকে ভুল কিছু ডিসিশন নিয়ে ক্যারিয়ারের ইতি টানেন এবং অতঃপর টানেন জীবনভর মন ভারের বোঝা। যা হোক। এখন কিন্তু টিনেজ টাইম নয় যে বয়ফ্রেন্ডের সাথে রাগ করে চুল কেটে ফেললাম। ধৈর্যের পরীক্ষায় আপনাকে মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। আপনার সহকর্মী, আপনার বস কে বুঝিয়ে বলুন- তারা আপনাকে স্পেস দেবে। তবে সবচেয়ে বড় সাপোর্টটা নিজেকে নিজের দিতে হবে; আর যার কথা না বললেই নয়- আপনার জীবনসংগী।




(চলবে..)
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৯
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে পর্দা মানে মার্জিত ও নম্রতা: ভুল বোঝাবুঝি ও বিতর্ক

লিখেছেন মি. বিকেল, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৩



বোরকা পরা বা পর্দা প্রথা শুধুমাত্র ইসলামে আছে এবং এদেরকে একঘরে করে দেওয়া উচিত বিবেচনা করা যাবে না। কারণ পর্দা বা হিজাব, নেকাব ও বোরকা পরার প্রথা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×