হিসাব আছিল আমরা সুখোই কিনব। সুখোই-২৭। এই বিমানখানা।
কিন্তু আমাদের প্রতিবেশী ভারতও এই বিমানখানা ব্যাবহার করে। ঠিক এই বিমানখানা নয়, এই বিমানখানার ভারতীয় ভার্শন সুখোই-৩০, তারা লাইসেন্স নিয়া নিজেরা বানায়।
এখন আমরা যদি সুখোই-২৭ পাই তাহলে আমাদের বিমান বাহিনী ভারতের বিমান বাহিনীর প্রায় সমপর্যায়ের প্রযুক্তির অধিকারী হইয়া যায়।
ভারতের এইটা সহ্য হয় নাই। ভারত রাশিয়ারে নিষেধ করছে সুখোই-২৭ বাংলাদেশের কাছে না বেচতে। আফ্রিকার দেশগুলাও যেখানে সুখোই কিনতে পারতাছে সেখানে আমরা পারতাছি না। ভারতের কথা যার কাছে ইচ্ছা সুখোই বেচ, কিন্তু বাংলাদেশ বাদে।
এই বিমানটা বড় ভাল ছিল। কোবরা ম্যানুভার নামে একটা কৌশল আছে যেটা রাশান পাইলটরা দুনিয়াতে সর্বপ্রথম এই সুখোই-২৭ দিয়ে দেখায়। এমনকি আমেরিকার এফ-২২ র্যাপ্টরও এই কোবরা ম্যানুভার পারতো না। পরে কিছু উন্নয়ন করুছে এফ-২২ এর। কিন্তু তারপরেও সুখোই-২৭ এর মত এত বাক এফ-২২ নিতে পারে না। কোবরা ম্যানুভার হচ্ছে বিমানের মাথা গোখরা সাপের ফনার মত একেবারে খাড়া করে তুলো ধরে পরে ছোবল মারার মত বিমানের মাথা নিচে নামিয়ে আনা। বড়ই দৃষ্টিনন্দন সে দৃশ্য। পৃথিবীর যুদ্ধ বিমানের ইতিহাসে প্রথম কোবরা ম্যানুভার করা এই বিমানটা আমরা পাইতাম, কিন্তু আমাদের প্রতিবেশীরা চাইলো না। রাশিয়ার সাথে তারা বিশাল বানিজ্য করে সমরাস্ত্রের। রাশিয়া তাদের অনুরোধ রাখতে বাধ্য।
শেষমেষ পাইলাম ইয়াক। একটা প্রশিক্ষণ বিমান। যাই হোক খারাপ না, আমাদের ক্যাডেটরা প্রায়ই পিটি-৬ বিমানে বৈদ্যুতিক খাম্বার লগে গুতা খাইয়া মরে। এখন অন্তত তারা প্রশিক্ষণের জন্য কিছুটা ভাল বিমান পাবে। ইয়াক একটা প্রশিক্ষণ বিমান। সুখোই বা মিগ চালানোর আগে পাইলটদের ইয়াকে করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আমরা এখন শুধু সুখোই চালানোর প্রশিক্ষণই নিব, সুখোই আর চালাতে পারলাম না।
দুর্নিতী করুক আর যাই করুক, সুখোই-২৭ গুলি আসলে বিজয় দিবস বা স্বাধীনতা দিবসে কিছু দৃষ্টিনন্দন বায়ু নৈপুন্য দেখতে পারতাম আমরা।
যে সব অস্ত্র কিনতাছে তার মধ্যে ৯০ শতাংশই কোন জাতের না। এইগুলো দেশেই বানাই যাইতো, এই টাকা খরচ কইরা। কামের মধ্যে খালি রাডার আর ইয়াক।
সমরাস্ত্রের জন্য পরনির্ভরশীলতা আস্তে আস্তে কমবে। এখন যদি বাংলাদেশ মিসাইল বানানি শুরু করে, আম্রিরা আইসা আমাগো গলায় পারা দিয়া ধরব। গার্মেন্টসের মাল নেওয়া বন্ধ কইরা দিবি। নানা হুমকি ধামকি দিব। আমাদের যেমন শক্তিশালী দেশের নাগরিক হইতে মনে চায়, আমাদের প্রধানমন্ত্রীরও মনে চায় শক্তিশালী দেশের প্রধানমন্ত্রী হইতে, যাতে বিদেশের গেলে সে আরেকটু ইজ্জত বেশী পায়। কিন্তু কি করব কন, হাত পা বান্ধা। আমাদের অর্থনীতি এখনও পরনির্ভরশীল। স্বনির্ভর হইলে এতদিনে অন্তত হেলিকপ্টার বানাইতাম আমরা। গলায় পারা খাওয়ার ভয়ে খালি কিছু করি না।
যাই হোক, ভারত কামডা ঠিক করে নাই। এই দিন দিন না রে ভারত, এই দিন দিন না, আরও দিন আছে।
ভারতের লাইগা সুখোই পাইলাম না, পাইলাম ইয়াক
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৮টি মন্তব্য ৭টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রোড জ্যাম ইন ভিয়েতনাম
আমার ধারনা ছিল জটিল জ্যাম শুধু বাংলাদেশেই লাগে । কিন্তু আমার ধারনা ভুল ছিল । ভিয়েতনামে এরকম জটিলতর জ্যাম নিত্য দিনের ঘটনা । ছবিটি খেয়াল করলে দেখবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা
২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন
যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!
এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন
নিউ ইয়র্কের পথে.... ২
Almost at half distance, on flight CX830.
পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১
হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন
সামুতে আপনার হিট কত?
প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন